Select Page

‘ধীরে বহে মেঘনা’র নায়ক আজমল হুদা মিঠু

‘ধীরে বহে মেঘনা’র নায়ক আজমল হুদা মিঠু

আলমগীর কবিরের বিখ্যাত ‘ধীরে বহে মেঘনা’র নায়ক ছিলেন আজমল হুদা মিঠু। তবে এইপরিচয় তার সামগ্রিক কর্মকাণ্ডের ক্ষুদ্র অংশ। তিনি চলচ্চিত্রের নানান শাখায় যুক্ত ছিলেন। সে হিসেবে বাংলা সিনেমার বিকাশে তার অনন্য অবদান রয়েছে। একাধারে অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, পরিবেশক, সঙ্গীত পরিচালক, গীতিকার ও কন্ঠশিল্পী। ছিলেন স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্রের শব্দসৈনিক।

তথ্য ও ছবি: আজাদ আবুল কাশেম

মিঠুর জন্মর ১৯৪৩ সালের ১৩ এপ্রিল বগুড়ায়। তাঁর বাবা মৌলভী কাজেবউদ্দিন আহমেদ ছিলেন, আইনজীবী। মা সালমা আক্তার খাতুন। তারা দুই বোন পাঁচ ভাই। মিঠু ২০১০ সালের ৩ জানুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

আজমল হুদা মিঠু লেখাপড়া করেছেন বগুড়া মিশনারি স্কুল, বগুড়া জিলা স্কুল ও বগুড়া আজিজুল হক কলেজে।

তথ্য ও ছবি: আজাদ আবুল কাশেম

১৯৬৮ সালে অভিনেতা হিসেবেই তার চলচ্চিত্রে আসা। প্রথম অভিনীত চলচ্চিত্র আমজাদ হোসেনের ‘বাল্যবন্ধু’। অন্যান্য ছবির মধ্যে রয়েছে আনাড়ি, পায়েল, বাবলু, কসম উসক্ ওয়াক্ত কি (নায়ক), স্মৃতিটুকু থাক, ঢেউয়ের পর ঢেউ, রং বদলায়, পীচ ঢালা পথ, ধীরে বহে মেঘনা (নায়ক), সংগ্রাম, রাতের পর দিন, বিজলী, চ্যালেঞ্জ, দোস্তী, আক্রোশ, আমিই ওস্তাদ এবং এরই নাম দোস্তী। তিনি টেলিভিশনের অনেক নাটকেও অভিনয় করেছেন। 

অবশ্য অভিনয়ের চেয়ে মিঠুর অন্যান্য গুণ বেশি সামনে এসেছে। তার প্রযোজনা সংস্থার নাম সালমা কথাচিত্র ও জয় বিজয় চলচ্চিত্র। প্রযোজিত চলচ্চিত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ধীরে বহে মেঘনা, বাদশা, দোস্তী, কালো গোলাপ, অগ্নিপরিক্ষা, নিয়তির খেলা, মিলন তারা (কাহিনী-সঙ্গীত পরিচালনা), আমিই ওস্তাদ, চোর ডাকাত পুলিশ, সংসার সীমান্তে, দুখিনী বধূ শয়তান যাদুকর, অপরাধ জগতের রাজা, এরই নাম দোস্তী ও ঝন্টু মন্টু দুই ভাই। কাহিনী-চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় নির্মিত হয় দোস্তী, আমিই ওস্তাদ (সঙ্গীত পরিচালনা), চোর ডাকাত পুলিশ, অপরাধ জগতের রাজা, ঝন্টু মন্টু দুই ভাই নির্মিত হয়।

আজমল হুদা মিঠু সুরারোপিত কয়েকটি গান- তোমাদের পাশে এসে, এ কি ভুল আমি করলাম, তুমি সন্ধ্যা আকাশের তারার মতো, আমি যদি মেঘ হতাম, যদি জানতে চাও এবং ভালোবেসে সবারই তো ঘর বাঁধা হয় না।

আজমল হুদা মিঠু ১৯৬৫ সালে সালমা হুদা’র সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের ৫ সন্তান ফারিহা হুদা, সামিহা হুদা, আসিফ হুদা (বিজয়), আশরাফ হুদা (জয়) ও ফারহানা হুদা। এর মধ্যে বিজয় খলনায়ক ও আশরাফ হুদা জয় নায়ক হিসেবে চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন আজমল হুদা মিঠু স্বাধীনতাকামী শিল্পী-কলাকুশলীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন একটি শক্তিশালী সংগঠন। দেশের বাইরে বা মুক্তাঞ্চলে যাওয়ার জন্য, মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষদের সহযোগিতা করতো এই সংগঠন। অভিনয় করেছেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ঐতিহাসিক নাটক ‘জল্লাদের দরবার’-এ।


মন্তব্য করুন