নামে ক্রাইম-অ্যাকশন, ভেতরে অন্য কিছু
ডনগিরি – A Story of Love
ধরন: রোম্যান্টিক এ্যাকশন ড্রামা
গল্প: জোসেফ শতাব্দী
পরিচালক{ শাহ আলম মন্ডল
প্রযোজনা ও পরিবেশনা: এস.এস কথাচিত্র ইন্টারন্যাশনাল
অভিনয়: বাপ্পী চৌধুরী (হ্যাপি), আনিসুর রহমান মিলন (আজাদ), এমিয়া এমি (এমি), আলীরাজ (পাশা), অমিত হাসান (পিটার মঙ), সাদেক বাচ্চু (সিজার মঙ), হাসান ইমাম (দিদার চৌধুরী), লায়লা হাসান (এমির দাদী), কাজী হায়াৎ (হ্যাপির বাবা), গুলশান আরা পপি (হ্যাপির মা), অরূণা বিশ্বাস, কমল পাটেকার, জাহিদ আহমেদ, সীমান্ত প্রমুখ।
শুভমুক্তি: ১৮ অক্টোবর, ২০১৯
★নামকরণ: ২০১৬ সালে যখন এছবিটির শ্যুটিং সম্পূর্ণ হয়, তখন অব্দি এছবির নাম ছিল “সাদাকালো প্রেম”। এরপর গতবছর ঈদ-উল-আযহা তে যখন এছবি মুক্তির প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন এছবির নাম বদলে হয়ে গেলো “ডনগিরি”।
যেকোনো বাণিজ্যিক সিনেমা মুক্তির আগে সফলভাবে দর্শককে আকৃষ্ট করতে পারার পেছনে দুটি জিনিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। প্রথমটি হলো সিনেমার পোস্টার, আর দ্বিতীয়টি হলো সিনেমার নাম। পরিচালকের ভাষ্যমতে, তিনি যখন কাকরাইল পাড়ায় এছবির পোস্ট প্রডাকশনের কাজ করছিলেন, তখন কেউই “সাদাকালো প্রেম” নামটির প্রতি ততটা আগ্রহ দেখায়নি। তাদের ধ্যানধারণা অনুযায়ী এধরণের নাম এখন ব্যাকডেটেড। তাই তিনি নাম পরিবর্তন করে “ডনগিরি” রেখেছেন। একজন পরিচালক চাইলেই তার ছবির নাম সুবিধামতো পরিবর্তন করতে পারেন, অতীতে এমন পরিবর্তন অনেকেই করেছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে নাম যখন পরিবর্তন করতেই হবে, একটু ভেবেচিন্তে তো নতুন নাম রাখা উচিত! নাম শুনে মনে হচ্ছে ক্রাইম-অ্যাকশনে ভরপুর কোনো ছবি, কিন্তু ভেতরে ঢুকে দর্শক দেখলো টিপিক্যাল ত্রিভুজ প্রেমের ছবি… তাই এনামটি শুধুমাত্র নামকরণের যথার্থতা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়নি, বরং যাদের জন্য ছবিটি তৈরী, তাদের সাথে ধোকাবাজি করেছে।
★ কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ: এছবির কাহিনী ও সংলাপ লিখেছেন প্রয়াত চিত্রনাট্যকার জোসেফ শতাব্দী। উনি আমাদের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির খুবই পরিচিত একজন চিত্রনাট্যকার। আশির দশকে প্রখ্যাত পরিচালক দেওয়ান নজরুলের সাথে ওনার একটা ভালোমানের চিত্রনাট্যকার-পরিচালনা কম্বো দাড়িয়ে গিয়েছিল। এজুটির “আসামী হাজির” ছবিটি সেই দশকের অন্যতম প্রশংসিত ও ব্যবসাসফল বাণিজ্যিক ছবি। এছাড়াও এজুটি “দোস্ত দুশমন”, “বারুদ” এর মতো বেশ কয়েকটি ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়েছেন। আশির দশকের সফলতা তিনি নব্বই দশকে চলমান রেখেছেন। বাংলার স্টাইল আইকন সালমান শাহ এর জনপ্রিয় দুটি ছবি “বিক্ষোভ” ও “শুধু তুমি” এর গল্পকার ছিলেন তিনি। এরপর যখন অশ্লীলতা আসলো তখন অন্য সবার মতো তিনিও গা ভাসিয়েছেন, তৈরী করেছেন “ব্যারিকেড” এর মতো কুরুচিকর ছবির গল্প। এরপরের সময়টাতে দেখা যায় শাকিব খানকে আজকের অবস্থানে পৌছে দেওয়ার পেছনে তার গল্প যথেষ্ট অবদান রেখেছে। শাকিব খানের “সাহসী মানুষ চাই”, “কোটি টাকার কাবিন”, “চাচ্চু”, “দাদীমা” প্রভৃতি ছবিগুলির গল্পকার ছিলেন জোসেফ শতাব্দী।
তবে তিনি যে খুব ভালোমানের গল্পকার ছিলেন, সেটা জোরখাটিয়ে বলা যায়না। আশির দশকে তিনি যে গল্প গণমানুষকে দেখিয়েছেন, এর পরবর্তী সময়গুলোতে সময়োপযোগী গল্প না বলে সেই পূর্বে দেখানো গল্পই তিনি বারংবার দেখিয়ে গেছেন, “বিক্ষোভ” এর মতো কিছু ব্যতিক্রম বাদে। “ডনগিরি” ছবির গল্প সেই গতানুগতিক ধারা অনুসরণ করেছে, ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। এরকম গল্প আমাদের বাংলা ছবির ইতিহাসে খুঁজলে কম হলেও শ’খানেক পাওয়া যাবে।
গল্পে দেখা যায়, পাশা (আলীরাজ) আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন। চীন থেকে আসা এক ডন পাশাকে লোকাল সিন্ডিকেটের চেয়ারম্যান বানিয়ে দে। আকাঙ্ক্ষিত সিন্ডিকেটের চেয়ারম্যান থাকায় চারিদিকে তার শত্রুর অভাব নাই। দিনের পর দিন তাকে মৃত্যুভয়কে সামলে চলতে হয়। এসময় ফ্ল্যাশব্যাকে দেখা যায়, একসময় তিনি তার ক্ষমতা ও সম্পত্তির ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আজাদ নামে এক ছোট্ট ছেলেকে রাস্তা থেকে তুলে এনে লালনপালন করা শুরু করেছিলেন। পাশার এরকম অস্বাভাবিক জীবনযাপন সহ্য করতে না পেরে তার স্ত্রী (অরূণা বিশ্বাস) একমাত্র মেয়েকে নিয়ে আলাদা হয়ে যান। পাশা এতে অনেক কষ্ট পেলেও আজাদ (আনিসুর রহমান মিলন) কে তিনি বড় করে তোলেন, তার মতোই নেতৃত্ব দেওয়ার মতো প্রশিক্ষিত করে তোলে।
গল্পের এইটুক পর্যন্ত ঠিক ছিল, ছবির ট্রেইলারে এতোটুকু মোটামুটি দেখানো হয়। এরপর দেখানো হয় সেই আজাদের জীবনে একসময় প্রেম আসে। আজাদ তার কালো জীবন ভুলে প্রেমের জীবনে ডুব দেয়, পরক্ষণে জানতে পারে তার প্রেমিকা এমি আরেকজনকে (বাপ্পী) ভালোবাসে। এরপর আজাদ তার ভালোবাসা ও নিজের অতীত পরিচয় দুই ধরনের ক্রাইসিসে ভোগে। সেটার সমাধান কি করে হয় সেটাই দেখা যায় এছবির পরবর্তী অংশে।
এছবির একেকটা পাঞ্চলাইন চরম হাস্যকর ভঙ্গিমায় উপস্থাপন করা হয়েছে। “আমি সাপের বাচ্চা সাপ; সাপ কাউকে চুমা দেয় না, ডাইরেক্ট খিছছ!”, “কারে ভাবিস ভুত? আমি হলাম তোদের বাপ, তোরা আমার পুত!”… এধরনের অসংখ্য কুরুচিকর পাঞ্চলাইন আমাকে ডিপজলীয় যুগের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। এছাড়া চিত্রনাট্য খুবই সমতল, কোনোরকমের টুইস্ট নেই। মেলোড্রামা ও সুড়সুড়িতে ভরপুর। সুড়সুড়ি মানে বোঝেন তো..?
এ অংশ পাবে ১০০ তে ০
★পরিচালনা ও অভিনয়: পরিচালক শাহ আলম মন্ডলের তৃতীয় ছবি এটি; এর আগে বাপ্পী-এমি-মিলন তিনজনের সাথেই পৃথকভাবে একটি করে ছবিতে তিনি কাজ করেছেন। পূর্বে তিনি “ভালোবাসা সীমাহীন” (২০১৪) ও “আপন মানুষ” (২০১৭) এর মতো দুটি অখাদ্য উপহার দিয়েছিলেন, যদিও “আপন মানুষ” মোটামুটি ভালো ব্যবসা করেছিল। সেই সফলতাই যেনো তাকে সাহস জোগালো আজকের “ডনগিরি” বানানোতে। তার পরিচালনা নিয়ে এখানে আর বেশিকিছু বলার নেই। এফডিসি যুগের পর যুগ প্রকৃত ট্যালেন্টকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছে, সেই বুড়ো আঙ্গুল দেখানোর ফলাফল হলেন তিনি ও তার পরিচালনা।
মোটাদাগে যদি বলি, তবে এছবিতে আমার কারো অভিনয়ই ভালো লাগেনি। সেই মান্ধাতার আমলের উচ্চবাচ্য করা, বড়বড় সংলাপ আওড়ানো। পরিস্থিতি একরকম আর অভিনেতাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আরেকরকম… এরকম হরেকরকম খুঁত খালিচোখে ধরা দেবে। তবে যদি চরিত্রব্যপ্তির দিক থেকে বলি, এক্ষেত্রে সবথেকে বেশি জায়গা পেয়েছে আনিসুর রহমান মিলন। যদিও ছবি দেখার আগ অব্দি এছবির পোস্টার কিংবা ট্রেইলার দেখে কোনভাবেই আন্দাজ করা সম্ভব না, মূলনায়ক বাপ্পীর থেকেও পর্দায় তার উপস্থিতি বেশি! এছাড়া অন্যান্য ছবির তুলনায় এছবিতে তাকে বেশি এ্যাকশন সিক্যুয়েন্সে দেখতে পেলাম। যদিও অভারঅল তিনি যা দেখিয়েছেন, তাতে বাণিজ্যিক ছবির নায়ক হিসেবে তিনি আপ টু দ্য মার্ক না। প্রথম সমস্যা তার ফিটনেস, আর দ্বিতীয় সমস্যা হলো চরিত্র যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তা ভালোভাবে রূপদান দিতে না পারা।
এরপর এছবিতে বেশি স্ক্রিনটাইম পেয়েছে পাশা চরিত্রটি, যেটি রূপদান করেছেন আলীরাজ। মূলত “ডনগিরি” নামটি যতটুকু সার্থকতা প্রমাণের চেষ্টা করে, তার সবটুকুই এই চরিত্রটিকে ঘিরে। বাকি যা দেখানো হয়, তা সবই আমাদের টিপিক্যাল ছবিগুলোতে দেখা যায়। এই ডনের চরিত্রটাও খুব গরিবিভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ডন, আন্ডারওয়ার্ল্ড.. এশব্দ গুলো শুনলেই আমাদের মস্তিষ্কে এমনকিছু বিষয় মনে আসবে যা আমরা সচরাচর দেখতে পাইনা। অথচ এখানে আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন, তার লাইফস্টাইলকে পাড়ার গুন্ডাদের মতো উপস্থাপন করা হলো! ডনের প্রতিপক্ষ দেখানো অমিত হাসান ও সাদেক বাচ্চুরা মিলে ফাঁকা রাস্তায় মারামারি করে, ছাদে বসে মিটিং করে, সস্তা বারে গিয়ে আরো সস্তা মেয়েলোকদের নিয়ে ফুর্তি করে ইত্যাদি। এসব দেখতে দেখতে আমার মনে শুধু একটা লাইনই বারংবার এসেছে… আহারে আন্ডারওয়ার্ল্ড, আহা ডনগিরি!
এরপর চরিত্রব্যপ্তির দিক থেকে অবস্থান এছবির মূলনায়িকা এমিয়া এমির। শুরুতে তাকে পরোপকার করতে দেখা যায়। এরপর পর্দায় এনার উপস্থিতি হয় টাইট লং টেনিসের ইউনিফর্ম পড়ে। কিন্তু তাকে খেলতে দেখা গেলো না, কেন তাকে এভাবে উপস্থাপন করা হলো তা-ও বোঝা গেলো না। এরপর তিনি বললেন, আজ তিনি ১৮+… প্রাপ্তবয়স্ক বোঝাতে হলে যে ছোটখাটো ড্রেস পড়া লাগে, এছবি না দেখলে আমি একদমই বুঝতাম না। সবমিলিয়ে যদি বলি, এমিয়া এমি কে বাণিজ্যিক ছবির নায়িকা হিসেবে আমার মোটেও সম্ভাবনাময় মনে হয়নি। ট্যালেন্টকে বুড়ো আঙ্গুল দেখানোর আরেকটি ফলাফল হলেন তিনি।
এরপর আসা যায় এছবির পোস্টার বয় বাপ্পীর চরিত্র হ্যাপীর কাছে। এচরিত্রটি গল্পে যদি না-ও থাকতো তাতেও কোনো অসুবিধা হতো না। ছবিতে এচরিত্রের প্রথম কাজ প্রতিটা মুহুর্তে সেলফি তোলা, এরপর যেখানে গুন্ডাপান্ডা দেখা সেখানে গিয়ে মারামারি করা, আর তৃতীয় কাজ নায়িকার সাথে তিনটা গানে পারফর্ম করা। বাকি সবকিছুতে বাপ্পী হলেন শোপিস, দর্শক আয়ন! গতানুগতিক গল্পের দ্বিতীয় নায়কের মতো। প্রায় ৮০ মিনিটের প্রথমার্ধে এই চরিত্রটিকে বড়জোর ১০-১৫ মিনিট দেখতে পাওয়া যায়। আর দ্বিতীয়ার্ধের ৬০ মিনিটে প্রায় অর্ধেকের মতো সিনে তিনি থাকেন। কে জানে, এতোসব অবিচার দেখে তিনি হয়তো রাগে-অভিমানে এছবির ডাবিং টাও করেননি।
অরূনা বিশ্বাস, হাসান ইমাম, লায়লা হাসান, ফরিদা আখতার পপিদের মতো সুঅভিনেতাদের অপব্যবহার করা হয়েছে এছবিতে। হাসান ইমামের মতো বর্ষীয়ান অভিনেতাকে দিয়ে ভাঁড়ামি করানো হলো, বিষয়টা মোটেও সহ্য করার মতো ছিল না। সবমিলিয়ে এছবি বেশ বড় একটা কাস্টিং নিয়ে উপস্থিত হলেও, তাদের যথাযথ ব্যবহার করতে পারেনি।
এ অংশ পাবে ১০০ তে ২০
★কারিগরি: এফডিসি থেকে নির্মিত হওয়া একটি স্বল্পবাজেটের ছবির কারিগরি দিক কেমন হয়, এটা তো আশাকরি সবাই জানেন। বাজে লোকেশন, ঘোলা ক্যামেরাওয়ার্ক, নারীদের বিশেষ অঙ্গে ক্যামেরা ফোকাস করে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন, নকল ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, জঘন্য কার্টুনসদৃশ ভিএফএক্স, উদ্ভট ফাইট কোরিওগ্রাফি, উদ্ভট ডান্স কোরিওগ্রাফি.. এসব কিছুর ছাপ এছবিতে পাওয়া যায়।
এছবিতে নৃত্য পরিচালনা করেছেন মাসুম বাবুল, সাইফ খান কালু ও হাবিব। গতানুগতিক নাচের ধরণ যেমনটা বাংলা ছবিতে হয়, ঠিক তেমনই। এছাড়া ফাইট ডিরেকশন দিয়েছেন ডি.এইচ চুন্নু, ক্যামেরার দায়িত্ব সামলিয়েছেন এস.এম আজহার। সম্পাদনার কাজ করেছেন তৌহিদ হোসেন চৌধুরী, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক দিয়েছেন ইমন সাহা। ইমন সাহা এখন আর আগের ইমন সাহা নেই, ফুরিয়ে গেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি যত ছবিতে মিউজিক দিয়েছেন, এক “পোড়া মন ২” ছাড়া আর কোনো ছবিতে তিনি তার নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি।
এ অংশ পাবে ১০০ তে ০
★বিনোদন: সাবিনা ইয়াসমিন, কুমার বিশ্বজিৎ, কনকচাঁপা, ইমরান মাহমুদুল, সাবরিনা পড়শৗ, লেমিস, রুপম, ভারতের জোজো… একটি ছবিতে এতো এতো গুণী শিল্পীদের কন্ঠ একত্রে পাওয়া গেছে। এর সাথে গীতিকার হিসেবে আছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার, কবির বকুল! প্রযোজক মনির হোসেন ইলিয়াস নিজেও একটি গান লিখেছেন। স্বাভাবিকভাবেই এছবিতে এদের গানগুলো কেমন হয় সেটা নিয়ে একরকম আগ্রহ ছিল। দিনশেষে আমার আগ্রহ আগ্রহের জায়গাতেই রয়ে গেলো, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির বিশাল ব্যবধান রয়ে গেলো। হাসান ইমাম নিজেও একটি গানে প্লেব্যাক করেছেন, তার সাথে ছিলেন কোকিলকন্ঠী সাবিনা ইয়াসমিন। বার্ধক্যের দশায় তার গলার অবস্থা বড্ড বেগতিক, শুরুতে একদমই বুঝতে পারিনি এটা আমাদের কোকিলকন্ঠীর গলা! এমন অবস্থা দেখে খুবই ব্যথিত হলাম।
ছবিতে মোট ৬ টি গান রয়েছে। ভারতের জোজো একটি আইটেম গানে কন্ঠ দিয়েছেন। এছাড়া সেলফি নিয়ে একটি গান রয়েছে। গানগুলো শুনতে মোটামুটি, কিন্তু যতটা শ্রুতিমধুর হওয়ার কথা ততটা না। হল থেকে বের হওয়ার পর কোনো গানই গুণগুণ করে গাওয়ার মতো খুজেঁ পাইনি। এছাড়া ছবিতে কিছু কমেডি সিক্যুয়েন্স আছে, কিছু কিছু দৃশ্য হাসির খোরাক জোগায়, আবার কিছু কিছু দৃশ্য বিরক্তির উদ্রেক ছড়ায়।
এ অংশ পাবে ১০০ তে ২০
★ব্যক্তিগত: সবমিলিয়ে যদি বলি, “ডনগিরি” খুবই টিপিক্যাল, গতানুগতিক ত্রিভুজ প্রেমের গল্প। এর সাথে আন্ডারওয়ার্ল্ডের বিষয়াদি খুবই খাপছাড়াভাবে যুক্ত করা হয়েছে। এছবির গল্প বলার ধরনের বিন্দুমাত্র নতুনত্ব নেই। সেইসাথে যেভাবে “ভালো গল্প” ট্যাগলাইন ব্যবহার করে এছবিকে প্রমোট করা হচ্ছিল সেরকম কোনো গল্পও নেই। এরকম প্যাটার্নের গল্প বাপ্পীর অন্যান্য গতানুগতিক ছবিগুলোতে দেখা যায়। এটাও সেই রাস্তাই অনুসরণ করেছে।
এই নিয়ে বাপ্পীর একটানা চারটি ছবি দেখে হতাশ হলাম। এবছর তার একটিও ভালোমানের ছবি মুক্তি পায়নি।
রেটিং: ১/১০
★ছবিটি কেন দেখবেন: হাতে যদি একদমই কোনো কাজ না থাকে, যদি দেখেন আগামী দুই-তিন ঘণ্টা আপনি সম্পূর্ণ বেকার… তবেই এছবিটি একবার দেখে আসতে পারেন। অন্যথায় এছবির কথা ভুলে যান।