Select Page

ফরীদির স্মৃতিচারণ করলেন ঝন্টু

ফরীদির স্মৃতিচারণ করলেন ঝন্টু

1432964879

প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু সম্প্রতি ইত্তেফাকে প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদির স্মৃতিচারণ করেছেন। এতে উঠে এসেছে কিছু অজানা কথা। বিএমডিবি পাঠকদের জন্য ‘কত স্মৃতি! কোনটা রেখে কোনটা বলি…’ শিরোনামের লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হল–

১৯৯৪ সালের দিকের ঘটনা। ফরিদী তখন শহীদুল ইসলাম খোকনের সাথে কাজ করে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। আমার প্রযোজনা সংস্থা থেকে নির্মিত ‘বিদ্রোহী বধূ’ ছবির তাকে কাস্ট করার জন্য তার বাসায় গেলাম। ‘ইস্পাহানী আরিফ জাহান’ জুটির প্রথম ছবি এটি। একটা ভয় ছিল যে, সে নতুন পরিচালকের ছবিতে কাজ করবে কি-না। কিন্তু আমরা যখন তার বাসায় গেলাম তখন সে আমাদেরকে যে সমাদারটা করলো তা আজকের দিনে অনেকের কাছে ‘গাল গল্প’ মনে হতে পারে। পরিচালক হিসেবে তার সাথে আমার প্রথম কাজ ‘ডাকাত’ ছবিতে। এরপরও কাজ করেছি ১০-১২টি ছবিতে। এর মাঝে ‘কন্যাদান’, ‘জজ ব্যারিস্টার’, ‘রাজা বাংলাদেশি’র মতো সুপারহিট ছবিও আছে।

কতটা শক্তিশালী অভিনেতা ছিল ফরিদী তার কিছু নমুনা বলি। তাকে কোনো দৃশ্য দ্বিতীয়বার বোঝানো লাগতো না। অনেক শিল্পীকেই দেখেছি তার সহ-শিল্পীদের সহায়তা করতে চান না অভিনয়ে। কিন্তু তাকে দেখেছি কতটা সযত্নে আরেকজনকে অভিনয়ে সাহায্য করতে। শুধু অভিনয়ে নয়, সে যে কারও বিপদে এগিয়ে যেত। কিন্তু এই নিয়ে কারও কাছে গর্ব কিংবা অহঙ্কার করতে দেখিনি কোনোদিন। এমনকি সে যে দু’টো এতিমখানা চালাতো তা তার মৃত্যুর পরে আমি জানতে পারলাম। কিন্তু হায়! এখন দেখি একজন এতিমকে অল্প কিছু সাহায্য দিয়ে বিশাল বিশাল সংবাদ ছাপানো হয় পত্র-পত্রিকায়। বড্ড আশ্চর্য এই দুনিয়া! গড গিফটেড প্রতিভার মূল্যায়ন হয়তো আমরা জাতি হিসেবে খুব একটা করতে পারিনি। যার কারণে এই শক্তিমান অভিনেতার ঝুলিতে একটি মাত্র জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। শুধু ‘মাতৃত্ব’ কেন, আরও অনেক ছবির জন্য সে এই পুরস্কার পাবার দাবিদার ছিল। কিন্তু এ নিয়ে তাকে কোনো আক্ষেপ করতে দেখিনি। ও বলতো, ‘আমার পুরস্কার হচ্ছে আমার দর্শক। তারা আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছে তার চেয়ে বড় আর কী আছে?’ জানি না সে আজ কোথায় কোন দূর তারকালোকের মাঝে লুকিয়ে আছে। হয়তো সেখান থেকে মিটি মিটি হেসে বলছে, ‘আমাকে ভুলে গেলেন?’


মন্তব্য করুন