Select Page

ফায়ারফ্লাইজ মানেই কি অসফল পরিণতি?

ফায়ারফ্লাইজ মানেই কি অসফল পরিণতি?

ফায়ারফ্লাইজ টেলিফিল্ম রিহান

‘পৃথিবীতে এমন অনেক মহান পেশা বা নেশা আছে— যা করতে ক্রিয়েটিভিটির প্রয়োজন পড়ে। একটা কাজ করতে না; মিথ্যে কথা বলা!’

এই সংলাপের সাথে একমত না দ্বিমত— সম্পূর্ণ আপনার ব্যাপার। তবে একটা বিষয়ে মোটামুটি সবাই কমবেশি একমত হবেন যে, বাংলাদেশের নির্মাণের মান এখন অনেকটাই এগিয়েছে অথবা ‘মানসম্মত’ করার আন্তরিক প্রচেষ্টা আছে।

টেলিভিশনে যেসব ফিল্ম (টিভিমুভি/টেলিফিল্ম) দেখানো হয়, সম্ভবত সময় স্বল্পতা অথবা বিজ্ঞাপন জ্বালাতনে আমাদের অনেকেরই দেখা হয়ে ওঠে না। সেখান থেকে তুলনামূলক ভালো কাজগুলো আমরা ‘ইউটিউব’ নামক এক আশ্চর্য বাকসো থেকে অনায়াসে বিরতিহীন দেখতে পারি। আহা! কতই না সহজ আমাদের মুভি যাপন!

বিশ্বের নানা প্রান্তে বিভিন্ন উৎসবে বাংলাদেশের চমৎকার ও দুর্দান্ত সব সিনেমার প্রদর্শনী হয়। প্রশংসিতও হয় কিছু কিছু। এমনকি মাঝেমধ্যে পুরস্কারও ছিনিয়ে নিয়ে আসে।

অর্থের অভাবে অথবা অন্য কোন কারণে যখন একটা ফিল্ম সিনেমা হলের উপযোগী করে বানানো যায় না কিংবা গুটিকয়েক সিনেমা হল ছাড়া সারাদেশের সিনেমাহলগুলোতে মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয় না, সেটা আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের দীনতা বোঝাতেই যথেষ্ট। এই আলাপ গুরুজন-অভিজ্ঞজনেরা আরো বিশদভাবে করতে পারবেন। আমি আলাপ করি সম্প্রতি দেখা এমন একটা ফিল্মের কথা— যেটা টিভিতে প্রদর্শনের ফলে আমরা টিভিমুভি/টেলিফিল্ম বলেছি।

অমিত সম্ভাবনা নিয়ে যে ফিল্মটির যাত্রা শুরু হয়েছিল, তার নাম ফায়ারফ্লাইজ। লেখার শুরুর সংলাপটি ওই ছবির। প্রায় সবাই অভিনয়ে নতুন মুখ ও কম পরিচিত। গল্পটাও প্রচলিত। একজন শিক্ষিত বেকারের ‘সিরিয়াল কিলার’ বনে যাওয়া এবং সেখান থেকে উতরানোর নিরীহ চেষ্টা।

গল্পের গাঁথুনি ও চিত্রনাট্যে সম্পূর্ণতার অভাব। সেখানে ভুল-ত্রুটির অভাব থাকলেই বরং একজন দর্শকের প্রাণের তেষ্টা মেটে। সময়টা দারুণ কেটেছে বলে মনে হয়।

[su_note note_color=”#ecf0f5″ text_color=”#ffffff” radius=”5″]

এই লেখাটি বিএমডিবি ঈদ সংখ্যা ই-বুক ২০১৭ এর অংশ। পুরো ই-বুক টি ডাউনলোড করুন এখানে

ডাউনলোড করুন[/su_note]

ফায়ারফ্লাইজ-এর ক্যামেরার কাজ কারো কারো কাছে বিরক্তিকর ঠেকলেও আমার কাছে ভালো লেগেছে। নতুনত্ব পেয়েছি। অধিকাংশ দৃশ্য হ্যান্ডহেল্ড ক্যামেরায় ধারণকৃত। আধো কাঁপা কাঁপা অথবা অস্থির মুহূর্ত। সেটা ফিল্মটির টেম্পোর সাথে প্রাসঙ্গিক। কিছু কিছু শট দেখে আমি ভীষণ মুগ্ধ হয়েছি। যেমন; মিথ্যে আশ্বাসবাণী ও গাড়ির চাকায় পিষ্ট ফটোগ্রাফের পীড়নে যখন ভুগছে বেকার যুবক, ‘গোয়েন্দা’ ক্যামেরা তখন লোহার গেটের বাইরে। অথবা খানিকটা লো এঙ্গেল থেকে দেখানো পিপাসার্ত যুবকের পানি পান, যেখানে দুটো পানির কলের একটি থেকে টপটপ করে অবিরত জলের ফোঁটার নির্গমন… যেন সেটা যুবকের একাকীত্ব ও চাপাকান্নাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।

রিহান আর পরিচালিত ও ২০১৪ সালে এনটিভিতে প্রদর্শিত দেড় ঘণ্টা ব্যাপ্তির (বর্তমানে ইউটিউবে যেটি আপলোডেড, সেটার ব্যাপ্তি কম) ফিল্মটিতে শূন্য ব্যান্ডের একটি শ্রুতিমধুর গান আছে। ফুয়াদেরও একটি গান আছে। গল্প ও আবহ সংগীতে থ্রিল আছে, মোচড় দেওয়া সমাপ্তিও আছে।

তবে আর বসে কেন, বস? কথা দিলাম, দেখে ঠকবেন না।


মন্তব্য করুন