Select Page

যেভাবে নির্মাণ হয় ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রির গৌরব ‘রূপবান’

যেভাবে নির্মাণ হয় ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রির গৌরব ‘রূপবান’

‘রূপবান’ এক সময় শেষ হলো এবং ১৯৬৫ সনের শেষের দিকে মুক্তিও পেল। তারপরের সব ঘটনাই আজ ইতিহাস

পরিচালক সালাহউদ্দিনের প্রথম ছবি ‘যে নদী মরুপথে’ মুক্তি পায় ১৯৬১ সালে। গল্প ও চিত্রনাট্য ছিল তার। এরপর আলাউদ্দিন আল আজাদের গল্প অবলম্বনে পরিচালনা করেন বিখ্যাত ‘সূর্যস্নান’। ষাটের দশকে ছবিটি গণচীনসহ লেবাননের রাজধানী বৈরুত ও তেহরান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবসহ আরো কয়েকটি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছিল। কোথাও পুরস্কার, আবার কোথাও সার্টিফিকেট অব মেরিট লাভ করেছিল। পাকিস্তান চলচ্চিত্র উৎসবে পরিচালক হিসেবে সালাহউদ্দিন লাভ করেন গ্র্যাজুয়েট পুরস্কার। এ ছবির পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লার বাড়ি বিক্রী করে দিয়ে ঢাকায় বাড়ি করেন। পাকাপাকিভাবে ঢাকায় বসবাস করতে শুরু করেন। সেখান থেকে নির্মাণ করেন ‘ধারাপাত’। অভিনেতা-পরিচালক আমজাদ হোসেনের একটি মঞ্চ নাটক অবলম্বনে ছবিটির চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেন সালাহউদ্দিন। সংগীত পরিচালনাও করেন তিনি নিজে। এ ছবির সমাপ্তি ছিল বিয়োগান্তক। সুধী দর্শক-সমালোচকের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হলেও, প্রচুর প্রশংসা কুড়োলেও বিনিয়োগ তুলতে যথারীতি ব্যর্থ হয় ছবিটি। ফলে সালাহউদ্দিনের ক্যারিয়ার কিছুটা হলেও থমকে দাঁড়ায়।

এই সময় তিনি টিকে থাকার জন্যে কৃষি বিভাগের এবং পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের বেশ কিছু কাহিনীভিত্তিক তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। তবে শত প্রতিকূলতার মাঝেও তিনি দমে থাকেননি। বৃহত্তর কিছু করার চিন্তায় সর্বদা তার মন থাকতো বিভোর। তখন চলছে পশ্চিম পাকিস্তানের উর্দু ছবির জোয়ার। এই পরিস্থিতিতে বাংলা ছবির দর্শককে কীভাবে হলে ফিরিয়ে আনা যায় শুধু সেই চিন্তাই সালাহউদ্দিনের মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে।

তখন পূর্ব পাকিস্তানে ‘রূপবান’ নামে একটি যাত্রাপালা খুব সুনাম অর্জন করে। দেশের আনাচে-কানাচে এই যাত্রা মঞ্চস্থ হতে থাকে। সালাহউদ্দিন মফঃস্বলের এক গ্রামে গিয়ে সারারাত জেগে যাত্রা দেখলেন। দেখে উপলব্ধি করলেন, গল্পে ও নাটকীয়তায় মাটির গন্ধ আছে বলেই হয়তো দর্শকের কাছে এর এত আকর্ষণ। তাছাড়া এতে আছে হৃদয়গ্রাহী লোক সংগীতের ব্যবহার।

এই সমস্ত চিন্তাভাবনা করে এই জনপ্রিয় লোকগাথাটিকে সিনেমার পর্দায় তুলে আনার সিদ্ধান্ত নেন সালাহউদ্দিন। অথচ অন্যদের কাছে তখনো সেটা নিছক যাত্রাপালা যা সিনেমার কোনো বিষয়ই হতে পারে না। এ প্রসঙ্গে মরহুম সফদার আলী ভূঁইয়ার কথা অবশ্যই এখানে উল্লেখের দাবী রাখে। তিনি প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে জীবন শুরু করে পরবর্তীকালে কাহিনীকার, গীতিকার এবং বেশ কয়েকটি লোকগাথাভিত্তিক ছবির পরিচালক হিসেবে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন  তার নেশা ছিল যাত্রাপালা জাতীয় লোককাহিনী ও লোকগীতি সংগ্রহ করা। পল্লীগীতি রচনাতেও তার ভালো হাত ছিল। সেই সফদার আলী ভূঁইয়া সালাহউদ্দিন ছাড়াও তখনকার দিনের অনেক প্রযোজক-পরিচালকদের কাছে লোকগাথাভিত্তিক ছবি নির্মাণের জন্য ধরনা দিতেন। ঘুরতেন তার সংগ্রহ করা কাহিনী ও গান নিয়ে। অনেকে এটাকে তার ক্ষ্যাপামী মনে করতেন। তাই সালাহউদ্দিন মনে মনে অনেক ঝুঁকি বুঝেও যখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেন যে, তিনি ‘রূপবান’ নির্মাণ করবেনই তখন কেউ কেউ আড়ালে হাসাহাসি করে বলতেন, “সফদার পাগলের পাল্লায় পড়ে ‘ধারাপাত’, ‘সূর্যস্নান’-এর সালাহউদ্দিনের শেষে এই পরিণতি!”

[লেখাটি ‘মেঘের অনেক রং’-খ্যাত নির্মাতা হারুনর রশীদের ‘চলচ্চিত্রকার সালাহউদ্দিন’ বই থেকে নেয়া। প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ। তথ্যবহুল বইটি কিনতে আর্কাইভে যোগাযোগ করুন। লেখার শুরুতে ‘রূপবান’কে মনোযোগ আনতে সালাহউদ্দিনের প্রথম তিনটি সিনেমার তথ্য সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। উল্লেখ যে ‘মেঘের অনেক রং’-এর পরিবেশক ছিল সালাহউদ্দিন প্রতিষ্ঠিত ‘সালাহউদ্দিন চিত্রকল্প’। এ ছবি নির্মাণে সালাহউদ্দিন পরিবেশক ছাড়াও অন্য কিছু দায়িত্ব পালন করেন বলে জানান হারুনর রশীদ।]

সত্যি সত্যি যাত্রাপালার বিষয় চলচ্চিত্র হিসেবে দর্শকের কাছে কতটুকু গ্রহণীয় হবে সেটা নিয়ে সালাহউদ্দিনের মনেও একটা সংশয় ছিল। তবু তিনি সব সংশয় আর সব উদ্বেগ ফেলে কিছু টাকা জোগাড় করে ‘রূপবান’ শুরু করে দিলেন। যাত্রাপালায় যেসব স্থূল জিনিস ছিল সেসব পরিহার করে পল্লীর সাধারণ মানুষের কাছে যাতে সহজবোধ্য হয় সেই কথা মাথায় রেখে সহজ-সরলভাবে চিত্রনাট্য-সংলাপ লেখা হলো। ছবির দেহে বা গতিতে যাতে লোকজ ঐতিহ্যের সন্ধান মেলে, লোকজ উপাদানের গন্ধ যাতে কিছুটা হলেও অক্ষুন্ন থাকে সেই চেষ্টাও করা হলো। এসব নিয়ে ছোটখাটো গবেষণাও চালানো হয়েছিল সে সময়। পশ্চিম পাকিস্তানে এদেশের লোকগাথাভিত্তিক ছবি প্রদর্শনের আকাঙ্ক্ষায় ছবিটি বাংলা ও উর্দু- দুই ভাষায় তৈরি হয়। শুটিং এর সময় একই শট দুইবার নেওয়া হতো। একবার বাংলা সংলাপে, আরেকবার উর্দুতে। সেই অর্থে ‘রূপবান’ই এদেশের প্রথম ডাবল ভার্সান বা দ্বিভাষিক ছবি। আয়াজ হাশমী নামে উর্দু ভাষার স্থানীয় এক সাংবাদিক-কবি-সাহিত্যিক বাংলা সংলাপ ও গানের চমৎকার উর্দু অনুবাদ করেছিলেন। যাই হোক, ‘রূপবান’ এক সময় শেষ হলো এবং ১৯৬৫ সনের শেষের দিকে মুক্তিও পেল। তারপরের সব ঘটনাই আজ ইতিহাস।

দেশের প্রতিটি সিনেমা হলে ‘রূপবান’ ছবির প্রদর্শনী উপলক্ষে তখন নানা ঘটনা ঘটেছিল। নানা বিচিত্র কাহিনী বহুদিন যাবৎ প্রচলিতও ছিল। তার মধ্যে দু’চারটি ঘটনা খুবই স্মরণযোগ্য।

‘রূপবান’-এর শুটিং চলছে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ আউটডোর লোকেশনে। একদিন শুটিং-এর সময় হৈ চৈ পড়ে গেল। কী ব্যাপার? এক আশি বছরের অশীতিপর বৃদ্ধ চিড়া-মুড়ি গামছায় বেঁধে দশ মাইল পথ হেঁটে চলে এসেছেন তার কল্পনার রানী রূপবান কন্যাকে স্বচক্ষে দেখার আশায়। শুটিংয়ে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কায় ইউনিটের লোকজন বৃদ্ধকে তার কল্পনার রানী রূপবান কন্যা অর্থাৎ সুজাতার কাছে কিছুতেই ভিড়তে দিচ্ছে না। পরে সালাহ্উদ্দিন সব শুনে তাকে কাছে নিয়ে আসতে বললেন। কিছুক্ষণের জন্য শুটিং বন্ধ রেখে বৃদ্ধকে সুজাতার কাছে নিয়ে আসা হলো। বৃদ্ধ রূপবানরূপী সুজাতার দিকে একদৃষ্টে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন। তারপর আস্তে আস্তে তার দস্তহীন মুখে হাসি ফুটে উঠলো। পরিতৃপ্তির হাসি। বৃদ্ধ বললেন, ‘এখন আমি মরেও শান্তি পাবো।’ গ্রাম-বাংলার সহজ সরলপ্রাণ এক বৃদ্ধের এটা আশীর্বাণী মনে করে আবার শুটিং শুরু হলো। তিনি নীরবে অদূরে বসে তা উপভোগ করতে লাগলেন। কিছুক্ষণ পর তার দু’চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়তে লাগলো। কারণ তখন চলছিল রূপবানের একটি করুণ গানের শুটিং।

‘রূপবান’ উর্দু সংস্করণের ফটোসেট। সংগ্রহ: শামসুল ইসলাম বাবু

ছবি মুক্তির পর মফস্বলের হলগুলোতে ঘটেছিল নানা ঘটনা। অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। কিন্তু সেটাই সত্যি। নৌকায় কিংবা গরুর গাড়িতে গ্রামের আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা ছুটেছিল কাছাকাছি শহরের সিনেমা হলে ‘রূপবান’ দেখবার আশায়। কিন্তু টিকেট মেলা তো সহজ নয়। পরিবার পরিজন নিয়ে অনেককে নৌকায় কিংবা গরুর গাড়িতেই দিনরাত অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। এই অপেক্ষার সময় ঘটেছে কত ঘটনা। কোথায় যেন গর্ভবর্তী এক  গৃহবধূকে গরুর গাড়িতেই সস্তান প্রসব করতে হয়েছিল- এমন ঘটনাও ঘটেছিল তখন। কোনো এক জেলা শহরের সিনেমা হলে ‘রূপবান’ দেখতে এসেছেন কয়েক শ’ গ্রামের নারী- পুরুষ ছোটছোট ছেলেমেয়ে নিয়ে। কিন্তু টিকেট মিলেছে পরের দিনের। তারা এখন থাকবে কোথায়, ঘুমোবে কোথায়? সিনেমা হলের মালিককেই বাধ্য হয়ে নিজের সিনেমা হলের মধ্যে নৈশ প্রদর্শনী শেষে তাদের থাকার ব্যবস্থা করতে হয়। সেই সাথে সরবরাহ করতে হয় বড়বড় ডেকচি ভর্তি খিঁচুড়ি।

মফস্বলের এক সিনেমা হলে ‘রূপবান’ চলছে তো চলছেই। কিন্তু হলের সামনে ঝোলানো ব্যানারটি ছিড়ে ফেটে গেছে। হল মালিক ঠিক করলেন, পুরোনোটা ফেলে দিয়ে নতুন ব্যানার লাগাবেন। হল কর্মচারীরা ‘রূপবান’-এর জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের জন্য বুদ্ধি আঁটলেন, তাজেল এবং কোলে শিশু স্বামী নিয়ে দাঁড়ানো রূপবানের ছবি সম্বলিত ব্যানারটি নিলামে তোলা হবে। মুখেমুখে কথাটা প্রচার হয়ে যাওয়াতে সিনেমা হলটির সামনে দলে দলে মানুষ এসে ভিড় জমালো এবং সত্যিসত্যি সেই ছেঁড়াফাটা ব্যানার নিলামে বিক্রি হয়ে গেল।

এসবের প্রেক্ষিতে বলা যায়, সালাহ্উদ্দিনের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা সম্পূর্ণভাবে সফল ও সার্থক হয়েছিল। তাৎক্ষণিকভাবে উর্দু বা ভারতীয় ছবির আগ্রাসন থেকে এদেশের বাংলা ছবি রক্ষা পেল। বাংলা ছবির নামে লোকগাথা ছবি নির্মাণের হিড়িক পড়ে গেল দেশে। অর্থ বিনিয়োগকারী পুরানো যারা ছিলেন তাদের মুখ উজ্জ্বল হলো। তার সাথে যোগ হলো নতুন নতুন মুখ। তাই যে অর্থে ‘রূপবান’ এদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে প্রথম টার্নিং পয়েন্ট বা মাইলস্টোন।

খ্যাতিমান সাংবাদিক, লেখক, সমালোচক ও গবেষক চিন্ময় মুৎসুদ্দী তার ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে সামাজিক অঙ্গীকার’ গ্রন্থে যথার্থই লিখেছেন– ‘রূপবানের মাধ্যমে পূর্ব বাংলার ছবির জগতে কিছু নতুন ঘটনা ঘটে যাকে উৎসাহজনক বলা যায়। রূপবানের একসাথে ১৭টি প্রিন্ট প্রকাশ করা হয়। এর আগে প্রিন্ট তৈরি হতো ৪টি অথবা ৫টি। এভাবে রিলিজের আওতা বেড়ে যায়। দ্বিতীয়ত নতুন কিছু দর্শকের সৃষ্টি হয়। এর আগে গ্রামের লোক সাধারণত সিনেমা দেখতো না। ‘রূপবান’ মুক্তি পাওয়ার পর গ্রামের লোক নিকটস্থ শহরে এসে ছবিটি দেখেন। এতে অনেক চিত্রব্যবসায়ী উৎসাহী হয়ে গ্রাম এলাকায় মৌসুমী সিনেমা হল তৈরী করেন। এভাবে পূর্ব বাংলায় চলচ্চিত্রের দর্শক কিছুটা বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া রূপবানের সাফল্যে ঢাকার ছবি থেকে প্রায় নির্বাসিত বাংলা ভাষা আবার ফিরে আসে। নির্মাতারা লোকছবির মাধ্যমে বাংলা ভাষায় ফিরে এলেন। বলা যায় ঢাকায় বাংলা ছবির স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘটে।”

শুধু পল্লীর সাধারণ মানুষই নন, বলা যায় দেশের সকল মানুষ এমনকী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক পর্যন্ত ‘রূপবান’ দেখা থেকে বাদ পড়েননি। আর সেইজন্যেই বোধহয় বাংলা একাডেমীর মতো স্থানে সে সময় পর্যন্ত কোনো ছবি নিয়ে প্রথম সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঐ ‘রূপবান’কে কেন্দ্র করেই।

‘রূপবান’-এর পর আর কোনো লোকগাথা ছবি করার তেমন ইচ্ছা সালাহউদ্দিনের একদমই ছিল না। তবুও ‘আলোমতি’ নামে আরেকটা ছবি তাকে করতে হয়েছিল। কারণ দেশে তখনো লোকগাথা ছবি নির্মাণের জোয়ার চলছেই। আর ছবিটা করতে হয়েছিল এফডিসির তৎকালীন এমডি সাদেকুর রহমান সাহেবের অনুরোধে। ঘটনাটা এই রকম ছিল। এফডিসি সেবার গণচীন থেকে প্রথমবারের মতো কিছু সাদাকালো পিকচার নেগেটিভ আমদানি করেছিল। এই নেগেটিভের ইমালশন ডেনসিটি এমনই ছিল যে, তা ভালোভাবে এক্সপোজ করবার জন্য প্রচুর লাইট লাগতো। তাই চিত্রগ্রাহকেরা এই ফিল্ম ব্যবহার করতে উৎসাহ পাচ্ছিলেন না। প্রকারান্তরে এড়িয়েই যাচ্ছিলেন। তাই সাদেকুর রহমান সাহেব সালাহউদ্দিন সাহেবকে অনুরোধ করে বললেন, আপনি সাহসী মানুষ। আপনি যদি এটা ব্যবহার শুরু করেন তবে অন্যেরাও হয়তো উৎসাহ পাবেন। নইলে আমদানিকৃত আমার পুরো স্টকটাই মার খাবে।

সালাহউদ্দিন বাধ্য হয়ে করলেন ‘আলোমতি’। ক্যামেরাম্যান ছিলেন রফিকুল বারী চৌধুরী । সেখানেও ছিল এক্সপেরিমেন্ট। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে ‘আলোমতি’ই প্রথম ও শেষ ছবি যাতে আদ্যোপান্ত গীতিকাব্যধর্মী সংলাপ সংযোজিত হয়েছিল। সকল চরিত্রের মুখে, সকল দৃশ্যে। বিশিষ্ট কবি, সাহিত্যিক ও অনুবাদক মনিরুদ্দিন ইউসুফ একাডেমীতে ‘শাহনামা’ অনুবাদ করে সুধীজনের দৃষ্টি কেড়েছিলেন তিনিই ছন্দেছন্দে ‘আলোমতি’র সমগ্র সংলাপ লিখেছিলেন।

‘রূপবান’ ছবির পর ‘আলোমতি’ প্রযোজনা- পরিচালনা ছাড়াও সালাহ্উদ্দিন প্রযোজনা করেছেন বেশ কয়েকটি ছবি। তার মধ্যে ছিল বশীর হোসেন পরিচালিত ‘১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন’, সফদার আলী ভূঁইয়া পরিচালিত ‘কাঞ্চনমালা’, সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া পরিচালিত ‘নিমাই সন্যাসী’, নুরে আলম জিকু পরিচালিত ‘নিশি হলো ভোর’ ইত্যাদি। কয়েকটির চিত্রনাট্য-সংলাপও তারই লেখা।


Leave a reply