Select Page

যে কারণে ফারুকী চাননি বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ভারতীয় কেউ করুক

যে কারণে ফারুকী চাননি বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ভারতীয় কেউ করুক

ভারতীয় নির্মাতা তৈরি করছেন শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘বঙ্গবন্ধু‘। এ নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি ছিল মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর। বিষয়টি নিয়ে আবারও কথা বললেন তিনি।

সম্প্রতি জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে’র ‘খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়’ ইউটিউব টকশো-তে ঢাকা থেকে অতিথি হিসেবে যোগ দেন তারকা দম্পতি নুসরাত ইমরোজ তিশামোস্তফা সরয়ার ফারুকী।  সেখানে আসে এ প্রসঙ্গটি।

বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে বাংলাদশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছেন ভারতের পরিচালক শ্যাম বেনেগাল। এ নিয়ে প্রশ্ন ছিল মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর কাছে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর চলচ্চিত্র পৃথিবীর যেকেউ বানাতে পারেন, যদি যথাযথ গবেষণা করে বানানো হয়। কিন্তু ভারতের কাউকে দিয়ে বানানোর ক্ষেত্রে তার আপত্তি আছে। এ আপত্তির বিষয়টি তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক আয়োজনে বলেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

এ বিষয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে ফারুকী বলেন, ‘‘যেহেতু বঙ্গবন্ধু বিরোধীদের অভিযোগ প্রোপাগান্ডা যা-ই বলেন, সেটা হলো বঙ্গবন্ধু ভারতের দ্বারা তৈরি করা একজন নেতা, ভারত পাকিস্তানকে ভাঙার জন্য বঙ্গবন্ধুকে তৈরি করেছে। এটা হচ্ছে প্রো-পাকিস্তান প্রোপাগান্ডার একটা অংশ। যখন এরকম একটা প্রোপাগান্ডা সমাজে চালু আছে, যেই প্রোপাগান্ডার ভিতরে আমি আমার স্কুলজীবন পার করেছি, পরে যৌবনে যখন সেটা ভেঙে আমরা বেরিয়ে আসলাম, এখন এসে যখন দেখি বঙ্গবন্ধুর জীবনী বা ইমেজ বানানোর দায়িত্বটা ভারতের একজন ফিল্মমেকারকে দেয়া হয়, আমি তখন ঐ মিটিংয়ে বলেছিলাম, তখনকি আমরা অজান্তেই ঐ প্রোপাগান্ডাটার হাতে যুক্তি তুলে দেই কী-না। এটা আমি তাদেরকে বিবেচনা করতে বলেছিলাম।’’

তবে এই চলচ্চিত্রে বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিশা। তিনি জানান, শ্যাম বেনেগলের সাথে কাজের অভিজ্ঞতা ছিল অসাধারণ। এত বড় মাপের চলচ্চিত্রকারের সঙ্গে এবং এমন চরিত্রে কাজ করতে পেরে খুব আনন্দিত বলেও জানান তিশা।

এ দিকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এগুতে পারছে না বলে মনে করেন ফারুকী। এর দায় চলচ্চিত্রকার বা দর্শকদের নয়, পুরোটাই দিচ্ছেন নীতিনির্ধারকদের। তার মতে, বাংলাদেশে দারুণ সব পরিচালক আছেন, বিপুল দর্শকও আছেন। কিন্তু সে অনুযায়ী ছবি হচ্ছে না। এর কারণ নীতিমালা নাই।

বাংলাদেশে সেন্সর নীতিও চলচ্চিত্রের জন্য ইতিবাচক নয় বলে মনে করেন ফারুকী। তার নিজের একটি চলচ্চিত্রও সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পায়নি। হতাশা প্রকাশ করে ফারুকী বলেন, ‘‘ধরা যাক আমার ‘শনিবার বিকেল’ ছবিটা আটকে দেয়া হয়েছে। এখনও আটকে আছে। ‘শনিবার বিকেল’ আটকানোর মাধ্যমে আপনি শুধু একজন ফারুকীকে আটকাননি, ফারুকীর মতো আর যারা আছে সিনেমা বানাবে, যারা স্ক্রিপ্ট রাইটিং টেবিলে আছে, তারা টেবিলে বসে আতঙ্কে আছে, তারা একটি দৃশ্য লেখার আগে ভাবে আমি কি এটা বলতে পারবো, নাকি পারবো না। এই সেন্সরশিপ যখন থাকে, তখন নেটফ্লিক, অ্যামাজন শুনতে অনেক ভালো লাগে, কিন্তু ওদের সাথে কমপিট করার জন্য ওদের ওখানে যে পলিটিক্যাল ফ্রিডমটা তারা পায় বানাতে, সেটা কি আমাদের আছে? সেটা যদি না থাকে তাহলে সম্ভাবনা আশা করাটা ঠিক না।’’


Leave a reply