Select Page

ভালো বিষয়ের অতৃপ্ত দর্শন ‘কসাই’

ভালো বিষয়ের অতৃপ্ত দর্শন ‘কসাই’

অনন্য মামুন পরিচালক খারাপ না, বাণিজ্যিক ছবির ভাষা তিনি বোঝেন। সমস্যা হচ্ছে ভাষাটিকে পূর্ণতা দিতে কিছু মেকানিজমের ভুল করে থাকেন। ভুলটা যে তিনি তার সব ছবিতেই করেছেন তাও না, তবে প্রায় ছবিতে করেছেন। এই প্রায় ছবির মধ্যে সর্বশেষ যোগ হলো ‘কসাই’।

ছবির ট্রেলার দেখে দর্শক প্রশংসা করেছে। অবশ্য এখনকার বেশিরভাগ ছবির ট্রেলারই করা হয় বুদ্ধি খাটিয়ে। ছবির দুর্বলতা ট্রেলারে কম উঠে আসে। ঝকঝকে অংশটাকে হাইলাইট করা হয় যাতে সমালোচনা না হয় কিন্তু দর্শক ছবিটা দেখতে গিয়ে বুঝতে পারে গোলমালটা কোথায় হচ্ছে। ‘কসাই’-এর ঝকঝকে ট্রেলারের পর এর সম্পূর্ণ দর্শন আরামদায়ক নয়।

গল্প ভালো। ছবির গল্পটা সর্বজনীন এখন। বিদেশ যাওয়ার স্বপ্নে যারা বিভোর তারা ভুল এজেন্সির ফাঁদে পড়ে কীভাবে প্রতারিত হয় এবং অজানা বিপদে পড়ে তারই একটা চিত্র দেখানো হয়েছে ছবিতে। নিরব ও তার চার সহযোগী মিলে এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশ যাবার আয়োজন করে কিন্তু তাদের সামনে আসে ঘোরতর বিপদ। তারা নিজেদের আবিষ্কার করে কসাই বাহিনীর হাতে এবং সেখান থেকে নিজেদের উদ্ধার করতে পারবে কিনা এ নিয়েই ছবির গল্প।

এই গল্পকে সাজানোর জন্য অনন্য মামুন যে মেকানিজম দেখিয়েছেন সেখানে রয়েছে দুর্বলতা। ছবিতে হাতেগোনা কয়েকজন অভিনয়শিল্পী নিজেদের মেলে ধরতে পেরেছে বাকিরা ছবিটিকে দুর্বল করে দিয়েছে। ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজনের বেশিরভাগেরই রোবোটিক অভিনয় ছবির দুর্বলতা ছিল। ছবির গল্প যেখান থেকে শুরু হয়েছে এবং যেভাবে শুরু হয়েছে তাতে ছবি শেষ হতে বেশি দেরি হবারও কথা নয় সে তুলনায় সময় যথেষ্টই ব্যয় হয়েছে। মেকানিজমটা এভাবে হেলে পড়েছে।

ছবিকে এগিয়ে নিয়েছে একমাত্র রাশেদ মামুন অপু। প্রধান চরিত্রের অভিনয়ে তার জুড়ি নেই। সাইকোপ্যাথ ধরনের চরিত্রে তাকে আগাগোড়াই অসাধারণ লেগেছে। নিষ্ঠুরতা, রোমান্টিকতা, হাস্যরস এভাবে বহুরূপী দেখা গেছে তাকে। তার সহযোগীর মধ্যে কে এ রাহুল কিছুটা ভিন্ন ফ্লেভারের ছিল। নওশাবা রাশেদ মামুনের স্ত্রীর চরিত্রে দারুণ বিশেষ করে এরা দুজনই ছবির অভিনয়ের দিকটা সম্পূর্ণ বজায় রেখেছে। নিরব প্রথম থেকে একরকম ছিল তবে ছবির ফিনিশিং-এ তাকে অন্যরকম লেগেছে। প্রশাসনের সদস্যদের মধ্যে এলিনা শাম্মী মোটামুটি ভালো ছিল।

ছবির ফিনিশিং মাঝের অংশের থেকে কিছুটা অন্যরকম ছিল। বলতে গেলে ছবির শুরুর দিকটা আর ফিনিশিংই ছবিটিকে দাঁড় করিয়েছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, কালার গ্রেডিং, পিকচারাইজেশন যথেষ্ট ভালো।

অনন্য মামুন যদি ছবির ওভারঅল মেকানিজম নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবেন তাহলে তার পরবর্তী ছবিগুলো ভালো হবে। শুধু ট্রেলার বা ভালো পোস্টার দিয়ে দর্শক আকর্ষণ করালে দর্শক তাকে ভুল বুঝবে। বরং সময় থাকতে তাঁকে সচেতন হতে হবে।

রেটিং: ৬/১০


মন্তব্য করুন