লোকার্নোতে পাঁচ নির্মাতার স্বীকৃতি
তরুণ ও স্বাধীনচেতা নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক, সিনে আলোচক, সিনেমাপ্রেমী সবার জন্যই খুব আশা ব্যঞ্জনীয় একটি প্রকল্প লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ৩ বছর মেয়াদী ‘ওপেন ডোর্স’ প্রজেক্ট। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে এসে এমন তথ্য জানিয়েছিলেন ‘ওপেন ডোরস’-এর কনসালট্যান্ট পাওলো বার্তোলিন। লোকার্নোর অফিশিয়াল সাইটে ২৮ এপ্রিল থেকে ঘোষিত হল চলতি বছরের প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী সেরাদের তালিকায় বাংলাদেশ থেকেই স্থান করে নিয়েছে পাঁচজন!
বিশ্বখ্যাত লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের অন্যতম একটি প্রজেক্ট ‘ওপেন ডোরস’ মূলত তিনটি প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করে। ওপেন ডোরস হাব, ওপেন ডোরস ল্যাব এবং ওপেন ডোরস স্ক্রিনিং। ‘ওপেন ডোরস হাব’ একটি শক্তিশালী প্লাটফর্ম যে কোনো তরুণ নির্মাতার জন্য। যা প্রতি বছরে দক্ষিণ এশিয়া থেকে আটটি প্রজেক্ট পর্যন্ত নির্বাচিত করবে। চলতি বছরেও ঠিক তেমনটিই হলো। আর ওপেন ডোরস হাবের চলতি বছরের প্রকল্পে স্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশের দুই নির্মাতা। ‘ওপেন ডোরস হাব’ প্রকল্পটিতে ‘সিনেমা, সিটি অ্যান্ড ক্যাটস’ সিনেমার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন ইশতিয়াক জিকো এবং ‘ডে আফটার টুমরো’ নামের ডকুফিকশনের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন ‘শুনতে কি পাও!’ খ্যাত মেধাবী নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমন। এছাড়া এই বিভাগে নেপাল, ভুটান, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে একজন করে স্থান করে নিয়েছেন।
অন্যদিকে ‘ওপেন ডোরস ল্যাব’ প্রজেক্টটির ওয়ার্কশপেও সুযোগ করে নিয়েছেন বাংলাদেশের মেধাবী নির্মাতারা। এরমধ্যে আছেন সম্প্রতি ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ সিনেমা নির্মাণ করে প্রশংসিত, আলোচিত নির্মাতা ও প্রযোজনা সংস্থা খনা টকিজের রুবাইয়াত হোসেন। আছেন মেধাবী নির্মাতা আবু শাহেদ ইমন (বাতায়ান প্রযোজনা সংস্থা), গেল বছরে যিনি নিজের প্রথম সিনেমা ‘জালালের গল্প’ নির্মাণ করেই নিজের জাত চিনিয়েছেন। কিনো আই ফিল্মের কর্ণধার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন প্রযোজক ও নির্মাতা আদনান ইমতিয়াজ আহমেদ| ওপেন ডোরস ল্যাব, এই প্রকল্পটির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে পেশাদারিত্ব আর দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে গ্রহণযোগ্যতা তৈরির পাশাপাশি বিশ্ব প্রযোজকদের সামনে তারা তাদের কাজ তুলে ধরার সুযোগ পাবেন।
লোকার্নোর গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্ট ওপেন ডোরস। যার ওয়ার্কশপে বাংলাদেশ থেকেই জায়গা করে নিয়েছেন পাঁচ মেধাবী নির্মাতা ও প্রযোজক। এই পাঁচজনের একজন হিসেবে আছেন বাংলাদেশের অন্যতম মেধাবী নির্মাতা ও প্রযোজক রুবাইয়াত হোসেন। মেহেরজান ও ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’ সিনেমা দিয়ে এরইমধ্যে তিনি আন্তর্জাতিকভাবে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন।
উল্লেখ্য, লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ‘ওপেন ডোরস’ প্রজেক্টটির মাধ্যমে ইরানিয়ান শীর্ষস্থানীয় চলচ্চিত্রকার আব্বাস কিয়ারোস্তামিসহ বহু বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্রকার আবিষ্কার হয়েছেন। এছাড়া ভেনিস, বার্লিন এবং কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের পরেই উচ্চারিত হয় সুইজারল্যান্ডের ‘লোকার্নো ফিল্ম ফেস্টিভাল’-এর নাম। ‘লোকার্নো’র অন্যতম একটি প্রজেক্ট মার্কেট আর প্রডিউসার্স ল্যাবের নাম ‘ওপেন ডোরস’। যে ‘দরোজা’র কাজ হচ্ছে বিশ্বের উল্লেখযোগ্য দেশে আগামীতে যে গুরুত্বপূর্ণ ছবিগুলো নির্মিত হবে সেগুলোকে চিহ্নিত করে বিশ্ব প্রযোজকদের সামনে তুলে ধরা, গাইড করা কিংবা মোটাদাগে ওই ছবিগুলো বানাতে বিশ্বজুড়ে নানা রকম প্লাটফর্ম তৈরি করে দেওয়া এবং পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করা। শুধু তাই নয়, ‘ওপেন ডোরস’ এর বিবেচনায় সেরা প্রজেক্টকে ৫০ হাজার সুইস ফ্রাংক পুরস্কারও দেয়া হয়।
সূত্র: বাংলা মেইল