Select Page

শনিবার বিকেল নিয়ে ১২৯ সংস্কৃতিকর্মীর উদ্বোগ

শনিবার বিকেল নিয়ে ১২৯ সংস্কৃতিকর্মীর উদ্বোগ

 ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমাকে কেন্দ্র করে দেশের সব ধারার সাংস্কৃতিক কর্মী এক হয়েছেন। সবাই এক হয়ে মুক্তি চেয়েছেন একটি সিনেমার

‘ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে’ এমন অভিযোগে মোস্তাফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমাটির বাংলাদেশে মুক্তি আটকে রেখেছে সেন্সর বোর্ড। এই সিনেমা মুক্তি প্রশ্নে ১২৯ জন সাংস্কৃতিক কর্মী তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবারের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সিনেমা, নাটক, সংগীত, শিল্প, সংস্কৃতির এমন নানা ক্ষেত্রে, নানা সময় হাজির করা হচ্ছে বহুমুখী বাধা, যা আমাদের উদ্বিগ্ন করছে। এ উদ্বেগ আরও বাড়ে যখন দেখি, আমাদের বন্ধু সুহৃদ চলচ্চিত্রকার মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর চলচ্চিত্র “শনিবার বিকেল” বিনা কারণে সাড়ে ৩ বছরের বেশি সময় সেন্সর বোর্ডে আটকে থাকে।’

‘সম্প্রতি আমরা জানতে পেরেছি ১৭ তারিখ এই বিষয়ে আপিল কমিটির একটি সভা আহ্বান করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ ও সুধীজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

‘আমাদের মধ্যে অনেকেই ছবিটি দেখেছি এবং বুঝতে অপারগ হচ্ছি, কেন এই ছবিটির সঙ্গে এরকম আচরণ করা হচ্ছে। আমরা তাই ছবিটির নির্মাতার হতাশা ও মর্মবেদনা অনুভব করতে পারছি। সারা পৃথিবীতে যখন সেন্সরের ধারণাটি একটি বাতিলযোগ্য পুরানো ধ্যান-ধারনা হিসেবে আলোচিত হচ্ছে, ঠিক তখনই আমরা সেন্সর, দীর্ঘসূত্রিতা এবং অজানা কোনো কারণে সময়ের একজন খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকারের কাজ আটকে রেখেছি। এ দেশের নাগরিক ও শিল্পী সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা বলতে চাই, আমাদের প্রজ্ঞা ও বিবেচনায় এই দীর্ঘসূত্রিতা আমাদের ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ করে এবং সকল কর্তৃপক্ষের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।’

‘এই মুহূর্তে “শনিবার বিকেল” শুধুমাত্র একটি চলচ্চিত্র আটকে রাখার বিষয় নয়। এটি সামগ্রিকভাবে দেশীয় ও বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতকে অনুধাবন করতে না পারার বাস্তবতা; রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিভঙ্গির অচলায়তন এবং সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিভঙ্গির সীমাবদ্ধতাও নির্দেশ করে, যা কাম্য নয়। কর্তৃপক্ষের এ ধরনের বিরূপ আচরণ আমাদেরকে ব্যথিত করে।’

‘আমরা যেন ভুলে না যাই, ভাষাভিত্তিক জাগরণে বাংলা নামে যে দেশ ৫০ বছর আগে তৈরি করেছি, তার মৌল চেতনা যেকোনো কিছুকে আটকে দেওয়ার পরিপন্থী। উন্নয়নশীল বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে চলচ্চিত্রসহ যেকোনো শিল্প মাধ্যম যখন প্রতিনিয়ত অস্তিত্ব সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, সেখানে “শনিবার বিকেল” সিনেমাটি পৃথিবীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত ও পুরস্কৃত হচ্ছে। সিনেমাটির সঙ্গে নিজ দেশে এই অন্যায্য আচরণে মনে হয়, সম্ভবত আমরা এ দেশে ৩য় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে বাস করছি।’

‘আপনাদের বোধ ও প্রজ্ঞার ওপর আমরা এখনো বিশ্বাস, আস্থা হারাইনি। আমাদের কাজ রাজপথে সংগ্রাম করা নয়, বরং একটি প্রগতিশীল বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিল্প ও শিল্পীর ভূমিকাকে অব্যাহত রাখা। আমরা “শনিবার বিকেল” এর নিঃশর্ত মুক্তি কামনা করি।’

এই বিবৃতিতে সই করেছেন নাট্য নির্দেশক ও চলচ্চিত্র পরিচালক নাসির উদ্দিন ইউসুফ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, রাইসুল ইসলাম আসাদ, সারা যাকের, আফজাল হোসেন, তারিক আনাম খান, শহীদুজ্জামান সেলিম, থিয়েটার ব্যক্তিত্ব সৈয়দ জামিল আহমেদ, পরিচালক সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকি, ক্যাথরিন মাসুদ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সহ সভাপতি ছটকু আহমেদ, পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম, চিত্রশিল্পী ঢালী আল মামুন, শামীম আখতার, মুনিরা মোরশেদ মুন্নী, মুনেম ওয়াসিফ, ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক আনিসুল হক, অভিনয় শিল্পী ফজলুর রহমান বাবু, জাহিদ হাসান, তৌকির আহমেদ, প্রযোজক সৈয়দ গাউসুল আলম, পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম, চলচ্চিত্রকার জাহিদুর রহিম অঞ্জন, পরিচালক নুরুল আলম আতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ত্রপা মজুমদার, পরিচালক স্থপতি এনামূল করিম নির্ঝর, পরিচালক গোলাম রাব্বানী বিপ্লব, পিপলু আর খান, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ, কামার আহমেদ সায়মন, সারা আফরিন, রুবাইয়াত হোসেন, শিহাব শাহিন, জসিম আহমেদ, গোলাম হায়দার কিসলু, সাংবাদিক নূর সাফা জুলহাজ, প্রযোজক মুশফিকুর রহমান, থিয়েটার প্র‍্যাক্টিশনার মহসিনা আখতার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহিন সুমন, অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিম, অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান, অভিনয় শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান, অপি করিম, ইন্তেখাব দিনার, সঙ্গীত শিল্পী আনুশে আনাদিল, শিবু কুমার শীল, পরিচালক ওয়াহিদ তারেক, মেজবাউর রহমান সুমন, মাসুদ হাসান উজ্জ্বল, কচি খন্দকার, চিত্রগ্রাহক কামরুল হাসান খসরু, চলচ্চিত্রকার এন রাশেদ চৌধুরী, শর্ট ফিল্ম ফোরামের সভাপতি জহিরুল ইসলাম কচি, শর্ট ফিল্ম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুর রহমান, ডকল্যাব বাংলাদেশের তারেক আহমেদ, সৈয়দ ইমরান হোসেন কিরমানি, চিত্রগ্রাহক গোলাম মাওলা নবীর, শেখ রাজিবুল ইসলাম, বরকত হোসেন পলাশ, তাহসিন রহমান, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার রিপন নাথ, অভিনয় শিল্পী জাকিয়া বারী মম, নুসরাত ইমরোজ তিশা, আজমেরী হক বাধন, সুষমা সরকার, ইরেশ যাকের, পরিচালক আশুতোষ সুজন, শরাফ আহমেদ জীবন, আশফাক নিপুন, রেদোয়ান রনি, ইফতেখার আহমেদ ফাহমি, তানিম নুর, মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ, মাহমুদুল ইসলাম, হুমায়ারা বিলকিস, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, আদনান আল রাজীব, আবু শাহেদ ইমন, বিজন ইমতিয়াজ, আরিফুর রহমান, রায়হান রাফি, নুহাশ হুমায়ুন, সৈয়দ শাওকি, সালেহ সোবহান অনিম, অনম বিশ্বাস, ইশতিয়াক আহমেদ রুমেল, গোলাম কিবরিয়া ফারুকী, মিলন ভট্টাচার্য, দিলশাদ শিমুল, আফজাল হোসেন মুন্না, মুসাফির সৈয়দ, গোলাম মুক্তাদির শান, ইমরাউল রাফাত, ইমেল হক, আর বি প্রীতম, তানিম পারভেজ, মাবরুর রশীদ বান্নাহ, আতিক জামান, জয়ন্ত রোজারিও, পল্লব বিশ্বাস, পিকলু চৌধুরী, নিয়ামুল মুক্তা, শহিদ উন নবী, হাসান মোরশেদ, এবি রোকন, রুবায়েত মাহমুদ, মাজেদুল হক রানা, সেতু আরিফ, আরিক আনাম খান, কাজল আরেফিন অমি, সামিউর রহমান, মমিন বিশ্বাস, নাজমুল নবীন, ফাহাদ খান, আব্দুল্লাহ মুক্তাদির, মাহমুদুল হাসান আদনান, চলচ্চিত্র সংগঠক বেলায়েত হোসেন মামুন, প্রযোজক সরদার সানিয়াত হোসেন, এশা ইউসুফ, মীম রশিদ, সঙ্গীত শিল্পী ও পরিচালক আহমেদ হাসান সানি, আর্ট ডিরেক্টর শিহাব নুরুন নবী, তারেক বাবলু, শহীদুল ইসলাম, কস্টিউম ডিজাইনার ফারজানা সান এবং ইদিলা ফরিদ তুরিন।


মন্তব্য করুন