Select Page

শানদার ‘শান’

শানদার ‘শান’

এ মুহূর্তে টলিউড, ঢালিউড কোথাও বাংলা ছবির সার্বিক অবস্থা ভালো পর্যায়ে নেই। স্ট্রাগল চলছে সম্পূর্ণ নতুনভাবে। টলিউডে যদি হিন্দি বা দক্ষিণী সিনেমার রাজত্বে বাংলা ছবির অবস্থান নড়বড়ে হয় তবে আমাদের ক্ষেত্রে ছবির থেকে সাংগঠনিক বিষয় বেশি গুরুত্ব পায়। এর ভেতরেই ঈদের ছবি এলো ‘শান’। বাণিজ্যিক ছবি হিসেবে শতভাগ উপভোগ্য।

‘শান’ মানব পাচার বিষয়ক বৈশ্বিক অপরাধের বাণিজ্যিক ছবি। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তো অবশ্যই। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে কতটুকু ও কীভাবে বড়পর্দায় উপস্থাপন করা হলো সেটাই বর্তমান আলোচনা।

‘শান’ ছবির গল্পে ভসকো গ্রুপ নামের একটি মানব পাচারকারী চক্রের অনুসন্ধানী অভিযানে মাঠে থাকা পুলিশ বাহিনীর সরেজমিন তৎপরতা দেখানো হয়েছে। গ্রুপটিকে ট্রেস করা এবং মূল পরিকল্পনাকারী পর্যন্ত পৌঁছাতে কী কী টেকনিক অবলম্বন করা হয়েছে তারই ডিটেইল এ ছবি।

বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে যারা নতুন নতুনভাবে নিজেদের এক্সপেরিমেন্ট করছে সিয়াম আহমেদ তাদের একজন। নায়ক কেমন সে এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলমান অনেকের। এর মধ্যে এটাও মনে রাখা দরকার ‘শান’ তার প্রথম অ্যাকশন ছবি। প্রথম হিসেবে তার পারফরম্যান্স খুবই ইম্প্রেসিভ। বাণিজ্যিক ছবিতে হিরোইজম বলতে যা বোঝায় ‘শান’-এ সেটা ছিল সিয়ামকেন্দ্রিক। ছবির ফার্স্ট হাফের সিয়ামের থেকে সেকেন্ড হাফের সিয়াম বেশি অ্যাফেক্টিভ। ফিনিশিং-এর ফাইটিং সিকোয়েন্সে সিয়াম প্রথম অ্যাকশন ছবির নায়ক হিসেবে যথেষ্টই ভালো। বলা যায় সিয়ামকেন্দ্রিক ছবি এটি।

পূজা চেরি বর্তমান ঢালিউডে অবশ্যই সবচেয়ে কম বয়সে আসা অনেক ভালো অভিনয়ের নায়িকা। ‘শান’-এ তার চরিত্রের গভীরতার থেকে গ্ল্যামার বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। গ্ল্যামারাস হলেও তার অভিনয়ে কোনো কমতি নেই। নাদের চৌধুরী, মিশা সওদাগর, সৈয়দ হাসান ইমাম, অরুণা বিশ্বাসদের চরিত্র প্রয়োজনমাফিক ছিল।

তাসকিন রহমান ডিজিটাল ছবির অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে মোস্ট হ্যান্ডসাম। তার চরিত্রটি ছবিতে চমক দিয়েছে। তার অভিনয়ক্ষমতাও দেখার মতো।

গানগুলোর মধ্যে ‘চলো পাখি হই’ সবচেয়ে বেটার ছিল। বাকিগুলো চলনসই।

ছবির সবচেয়ে নোটিশ করার মতো বিষয় ছিল ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। অ্যাকশন টাইমের বিজিএম একদম পারফেক্ট। রিদম ধরে রেখে বিজিএম দেয়া হয়েছে। সিনেমাটোগ্রাফি ভালো। অ্যাকশন সিনগুলোতে বিদেশি এক্সপার্টদের দিয়ে কাজ করানোতে ফলাফল ভালো হয়েছে। ধুমধাড়াক্কা মারপিটের থেকে শারীরিক কসরত জাতীয় বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে। দুর্বলতার দিক বলতে পারিবারিক দৃশ্যগুলোতে কিছুটা ন্যাচারালিটির অভাব ছিল, হাস্যরস তৈরিতে প্রথমদিকে দুর্বলতা ছিল।

সব মিলিয়ে ‘শান’ এ ঈদের শানদার বাণিজ্যিক ছবিই হয়েছে।

রেটিং – ৮/১০


About The Author

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

Leave a reply