Select Page

সুরাইয়া রাত্রির গল্প

সুরাইয়া রাত্রির গল্প

আমাদের ছোটবেলার প্রিয় অভিনেত্রী সুরাইয়া রাত্রি। থিয়েটার করত তাই অভিনয়টা জনত। টিভি নাটকে নিজের অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল নিজের সহজাত ভালো অভিনয়গুণের মাধ্যমে। দেখতে যেমন মিষ্টি ছিল কণ্ঠেও ছিল মিষ্টতা। তার লুকটাই ছিল নায়িকাদের মতো। সম্ভবত চলচ্চিত্রে এলেও ভালো পারফর্ম করতে পারত।

তার পুরো নাম সুরাইয়া হুদা রাত্রি। জন্ম ২০ জুলাই, ১৯৭৭, ফেনী জেলায়। প্রথম নাটক ‘ধূসর বসন্ত’ …

উল্লেখযোগ্য নাটক: হীরামন, কখন বাজবে সেই ঘণ্টা, বনের পাপিয়া, তুমি আসবে বলে, আরেক জীবন, কবে হবে দেখা, রাতের পাখি, সোনালি সন্ধ্যায়, আনমনে তবুও, আংটি, স্বপ্ন দেখে মন, আত্মাহুতির পালা, অবাক তোলপাড়, আগন্তুক, অপরাহ্নের ভালোবাসা, তৃতীয় নয়ন, জল পড়ে পাতা নড়ে, নিঃশ্বাসে ছোঁয়া পাই, প্রশ্ন, সাকিন সারিসুরি।

রাত্রির সফল জুটি আজিজুল হাকিমের সাথে। আজিজুল হাকিম তখনকার দিনের অত্যন্ত জনপ্রিয় অভিনেতা ছিল। তার সাথে রাত্রির রসায়ন খুব ভালো ছিল তাই তাদের জুটি দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। তাদের রসায়ন এত প্রাণবন্ত ছিল যে ‘মেড ফর ইচ আদার’ মনে হতো। দর্শক ডিমান্ডে বেশকিছু নাটকে তারা কাজ করেছিল যার মধ্যে হীরামন, আংটি, কখন বাজবে সে ঘণ্টা, তুমি আসবে বলে, রাতের পাখি, সোনালি সন্ধ্যায় উল্লেখযোগ্য।

রাত্রির সেরা নাটক ছিল ‘হীরামন’। ‘হীরামন’ মূলত বিটিভির আশি ও নব্বই দশকের একটি জনপ্রিয় আলেখ্যানুষ্ঠান ছিল। এতে বিভিন্ন আঞ্চলিক লোকগাথা থেকে নাটক নির্মিত হত এবং এরই একটি নাটক ছিল ‘স্বপ্নের দেশে’ নামে যেখানে রাত্রি ছিল রাজকন্যার চরিত্রে। নাটকটি খুবই উল্লেখযোগ্য ছিল। এ নাটকে রাত্রিকে রাজকন্যার বেশে অসাধারণ লেগেছিল।

খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক সুভাষ দত্তের পরিচালনায় নির্মিত নাটক ‘আংটি’ ছিল রাত্রির প্রশংসিত একটি নাটক। আজিজুল হাকিমের সাথে এ নাটকে রাত্রির চরিত্রটি ছিল ভালোবেসে ঠকে যাওয়া একটি চরিত্র। বিয়ের আগে এবং পরের সাংসারিক বাস্তবতা উঠে এসেছে নাটকটিতে।

‘বনের পাপিয়া’ এবং ‘রাতের পাখি’ নাটক দুটিতে রাত্রির পাহাড়ি লুক ছিল। এ দুটি নাটকে রাত্রি একদম ব্যতিক্রম ছিল।

রাত্রি গ্রাম ও শহর দুই ধরনের গল্পের নাটকেই সমানভাবে পারদর্শী অভিনেত্রী ছিল।

রাত্রি তার সময়ের ব্যস্ত সব তারকাদের সাথেই কাজ করেছিল যার মধ্যে আজিজুল হাকিম, মাহফুজ আহমেদ, আহমেদ রুবেল, শাহরিয়ার নাজিম জয়, শফিক সাদেকী, আনিসুর রহমান মিলন, চঞ্চল চৌধুরী ছিল।

রাত্রির লুকের সাথে অনেক দর্শকই চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শাবনূরের মিল পেত। যদিও রাত্রি ছিল সুন্দরী এবং নিজ গুণে অনন্যা।

বর্তমানে আমেরিকার পেনসিলভেনিয়াতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে রাত্রি।

সব মিলিয়ে সুরাইয়া হুদা রাত্রি একজন সফল অভিনেত্রী ছিল। আমাদের শৈশব-কৈশোরের অমূল্য স্মৃতির সাথে যে অভিনেত্রীরা জড়িত তাদের মধ্যে রাত্রি একজন।


About The Author

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

Leave a reply