Select Page

৭ মাসেই বন্ধ হলের মিছিলে পিক্স সিনেপ্লেক্স

৭ মাসেই বন্ধ হলের মিছিলে পিক্স সিনেপ্লেক্স

চালু হওয়ার মাত্র ৭ মাসের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেল ঢাকার বাইরে প্রথম প্রতিষ্ঠিত মাল্টিপ্লেক্স সিরাজদিখানের পিক্স সিনেপ্লেক্স। মূলত সিনেমা ও দর্শক সংকটে এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন উদ্যোক্তারা।

২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট সিরাজদিখান বাজারের জে এইচ সিকদার কমপ্লেক্স টুতে দুই পর্দার এই সিনেপ্লেক্স চালু হয়।

এই সিনেপ্লেক্সের কর্ণধার নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘চলচ্চিত্রের উন্নয়নে অত্যাধুনিক এই  সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করেছিলাম। এতে ব্যাংক থেকে লোন নিতে হয়েছে। সিনেপ্লেক্স দুটি চালুর পর পর্যাপ্ত ও মানসম্মত ছবির অভাবে লোকসান গুনে মাত্র ৭ মাসের মাথায় এগুলো বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি। আমি এখন চরম হতাশ। ব্যাংক লোন কীভাবে শোধ করব বুঝতে পারছি না। সরকার ঘোষণা দিয়েছিল সিনেমা হলের জন্য সর্বনিম্ন সুদে ঋণ দেবে। তাও হচ্ছে না।’

এদিকে নব্বই দশকের শেষদিক পর্যন্ত দেশে থাকা প্রায় ১৪০০ সিনেমা হলের মধ্যে বন্ধ হতে হতে এখন ২৭৪টিতে এসে ঠেকেছে।

দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে প্রায় ২৫টি জেলা এখন সিনেমা হল শূন্য। এসব জেলার মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হচ্ছে- নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঝালকাঠি, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, নড়াইল, মৌলভীবাজার, রায়পুর, মাদারীপুর, সিরাজগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, রাঙামাটি, বান্দরবান ও কক্সবাজার। রাজধানী ঢাকায় ছিল ৪৪টি সিনেমা হল। এখন রয়েছে ১৮টি। সর্বশেষ গত বছরের ৬ এপ্রিল বন্ধ হয় কারওয়ান বাজারের ‘পূর্ণিমা’ সিনেমা হলটি। রাজধানীর পরেই চট্টগ্রাম, টাঙ্গাইল, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, যশোরকে চলচ্চিত্র দর্শকের স্বর্গ বলে গণ্য করা হতো। ২০০০ সাল পর্যন্ত টাঙ্গাইল এলাকায় ৪৭টি হল ছিল। এখন সেখানে মাত্র ১২টি হল টিকে আছে।

গত দুই দশকে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বন্ধ হয়ে গেছে ২০টি প্রেক্ষাগৃহ। একসময় যশোরের পরিচিতি ছিল সিনেমা হলের শহর ;হিসেবে। ছিল ২১টি সিনেমা হল। এখন যশোরে মাত্র ৬টি সিনেমা হল চালু রয়েছে। বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে এখন মাত্র একটি সিনেমা হলে  চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। সিরাজগঞ্জ জেলার ৩১ হলের মধ্যে এখন টিকে আছে মাত্র ৭টি। খুলনা মহানগরীতে সিনেমা হল ছিল ১১টি। এখন আছে মাত্র ৪টি।

ডুমুরিয়া উপজেলার একমাত্র সিনেমা হলটি বন্ধ রয়েছে। নেত্রকোনা জেলা শহরের একমাত্র সিনেমা হল হীরামন ও নাটোরের সায়াবান বন্ধ হয়ে গেছে। সিলেটের সাতটির মধ্যে একটি এবং রংপুরের পাঁচটির মধ্যে একটি টিকে আছে। দিনাজপুর, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, নেত্রকোনা, জামালপুরে বর্তমানে মাত্র একটি করে হল চালু রয়েছে। ঝিনাইদহে ১৭টির মধ্যে ৩টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২০টির মধ্যে ৬টি, বেলকুচিতে ১৭টির মধ্যে ২টি, চুয়াডাঙায় ১৪টির মধ্যে ২টি, নীলফামারীতে ২৪টির মধ্যে ১টি, পাবনায় ২৮টির মধ্যে ৭টি, মানিকগঞ্জে ৯টির মধ্যে ১টি, লক্ষ্মীপুরে ১০টির মধ্যে ১টি, ঠাকুরগাঁয়ে ১৫টির মধ্যে ৬টি, রাজবাড়ীতে ২০টির মধ্যে ২টি, রূপগঞ্জে ৬টির মধ্যে ১টি, রংপুরে ৫টির মধ্যে ১টি, সিলেটে ৭টির মধ্যে ১টি সিনেমা হল চালু রয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি শেরপুরে বন্ধ হয়ে গেছে ঐতিহ্যবাহী হল কাকলী।

তবে ঢাকা-চট্টগ্রামে নতুন কিছু মাল্টিপ্লেক্স নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে সম্প্রতি।


মন্তব্য করুন