অনায়াসে দেখার ফিল্ম মায়াশালিক
কিছু কনটেন্ট আগে থেকে প্ল্যান না থাকা সত্ত্বেও দেখা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন, রিভউয়ের কারণে এগুলোতে চোখ পড়ে। তার ওপর আরো কিছু বিষয়, কনটেন্টগুলো দেখতে আগ্রহী করে তোলে। যেমন সদ্য মুক্তি পাওয়া ওয়েব ফিল্ম ‘মায়াশালিক‘।
বিঞ্জে মুক্তি পাওয়া এ কনটেন্ট আমার না দেখার সম্ভাবনাই ছিল বেশি। কিন্তু আশপাশে সবার রেসপন্সের পাশাপাশি ‘অপূর্বর ফিরে আসা’র কারণেও ওয়েব ফিল্মটা দেখার আগ্রহ হইলো। দ্বিতীয় কারণটাই বড়৷
শিহাব শাহীনের পরিচালনায় ‘মায়াশালিক’ প্রায় দুই ঘন্টার ওয়েব ফিল্ম। আজকাল ওয়েব ফিল্ম সাধারণত এতোখানি দৈর্ঘ্যের হয় না। দেড় ঘন্টায় শেষ করে দেয়া হয়। সেদিক থেকে প্রথমেই ব্যতিক্রম ‘মায়াশালিক’। পরের ব্যপারটা হলো এর গল্প। প্রথম ইমপ্রেশনে মনে হবে গল্পটা প্রেমের। কিন্তু এখানে সময় নিয়ে খেলেছেন গল্পকার ও নির্মাতা। ফলে প্রেম থেকে বিষয়টি চলে যায় অন্য একটি মাত্রায়। এক গল্পের তলায় আরেক গল্প বলার এ বিষয়টি ব্যতিক্রম।
একটা প্রেমের গল্প হতে যে ধরনের উপাদান লাগে সবই দিয়েছেন নির্মাতা। আর সেই রোমান্টিক গল্পকে উপস্থাপন করতে এনেছেন অপূর্বকে। অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা না ভেবে একজন লেখক হিসেবে প্রধান চরিত্রকে দেখা যায়। তার লেখার ধারাও রোমান্টিক। উপন্যাস লিখতে নিভৃতে সময় কাটানোর তার চেষ্টার মাঝে আসে একটি ফোনকল। বলা যায়, ক্ল্যাসিক একটি গল্পের বিল্ডআপ। রহস্যময়ী নারীর ফোনকল থেকে আমরা একটি প্রেমের গল্প তৈরি হতে দেখি। এরপরই নানা জায়গা থেকে গল্পটি মাত্রা বদল করে। কিছুটা জটিল হয়ে ওঠে এ কারণে তবে মনোযোগী দর্শকের জন্য ততটাও জটিল হওয়ার কথা না। গল্প ও গল্পের বাঁকবদল নিয়ে পরে কথা বলার ইচ্ছা রাখি। আপাতত বলি অভিনয় ও অন্যান্য কিছু বিষয় নিয়ে।
অপূর্বের ফেরাটাও অপূর্ব হলো। পোড় খাওয়া মানুষের চরিত্র তার। অপূর্বর চেহারায় কোনো না কোনোভাবে সে ছাপটা আগে থেকেই ছিল। মায়াশালিকে সেটা কাজে লাগল ভালো করে। এরপর রোমান্টিকতা, রহস্যের সঙ্গে মানানো ও তার মাধ্যমে তৈরি দ্বিধা ও আবেশের বিষয়টি তিনি দারুণ এগিয়ে নিয়েছেন। তবে অন্যান্যদের মতো আমারও বলতে হচ্ছে সাদিয়া আয়মান এ ফিল্মের অন্যতম সুন্দর সংযোজন। অপূর্বর সঙ্গে তার রসায়নটা দারুণ। মিষ্টি একটি চরিত্র ছিল এখানে তার। নবীনের সঙ্গে এতে ছিল প্রবীণেরও অংশগ্রহণ। শহীদুজ্জামান সেলিম অনবদ্য। আর ইমতিয়াজ বর্ষণ পর্দায় থাকা মানেই মুগ্ধতা।
আজকাল সবাই সিনেমার কালার গ্রেডিং নিয়ে কথা বলে। মায়াশালিকে দারুণ কালার গ্রেডিং তো আছেই, তার সঙ্গে আছে চমৎকার সব লোকেশন। সিকোয়েন্স আর মিউজিকের সঙ্গে লোকেশন মিলে দারুণ ভিজুয়াল উপহার দিয়েছে ফিল্মটি। সব মিলিয়ে কারো যদি কাহিনী বুঝতে অসুবিধাও হয়, ভিজুয়ালের জন্য এ ফিল্ম দেখা যায় অনায়াসে।