অনুদান পাওয়ার ৪-১২ বছর পরও যে ছবিগুলো মুক্তি পায়নি
সরকারি সম্পত্তি তছরুপ (নষ্ট) করার অভিযোগে রবিবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার হন কবি ও নির্মাতা টোকন ঠাকুর। মূলত যথা সময়ে অনুদানের ছবি মুক্তি দিতে না পারায় এ কাণ্ড। টোকনসহ একাধিক নির্মাতার বিরুদ্ধে এ বিষয়ে মামলা হয় ২০১৬ সালে।
সরকারি অনুদানের অর্থে কথাসাহিত্যিক শহীদুল জহিরের ‘কাঁটা’ গল্প অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাণ করছিলেন টোকন ঠাকুর। ২০১২-১৩ অর্থবছরে সরকারি অনুদান পায় ‘কাঁটা’ ছবিটি।
চলতি বছরের শুরুতে ছবিটির শুটিং শেষ বলে প্রথম আলোকে জানান পরিচালক টোকন ঠাকুর। পরিচালক জানান, ছবিটির সম্পাদনার কাজও প্রায় শেষ। শিগগিরই শুরু হবে ডাবিং ও আবহসংগীতের কাজ। এমনকি এই ছবি তৈরিতে তাঁর ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
ছবিতে ষাট, সত্তর ও নব্বই দশকের কিছু বিষয় উঠে এসেছে। ছবির ৮০ শতাংশ শুটিং হয়েছে শহীদুল জহিরের বাসস্থান পুরান ঢাকায়। বাকি শুটিং হয়েছে মুন্সিগঞ্জ ও নরসিংদীতে। টোকন ঠাকুর জানান, শুটিংয়ে যাওয়ার আগে প্রস্তুতি নিতেই সাড়ে তিন বছর সময় নিয়েছেন তিনি। নতুন শিল্পী খুঁজে বের করে তাদের নিয়ে মহড়া করতে সময় নিয়েছেন আরও ছয় মাস। এই নির্মাতা বলেন, ছবিটিতে প্রায় ২০০ শিল্পী অভিনয় করেছেন। পাশাপাশি গল্পের সময়কাল ধরে লোকেশন, কস্টিউম বের করে আনতেও অনেক সময় ব্যয় হয়েছে।
এ বছরের জানুয়ারিতে পরিচালক জানান, এই ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে থাকবে ১০টি গান। এ জন্য ১০ নতুন শিল্পীর খোঁজ চলছে। কবে নাগাদ মুক্তি পাবে এই ছবি, এমন প্রশ্নের জবাবে টোকন ঠাকুর বলেন, ‘পোস্টের কাজ শেষ হয়ে গেলেই সেন্সরে জমা দেব ছবিটি।’
এ দিকে অনুদান পাওয়ার সর্বোচ্চ এক যুগ পরও কয়েকটি ছবি মুক্তি পায়নি। দেখে নিন পরিচালক খন্দকার সুমনের দেওয়া তালিকা—
২০০৭-০৮ অর্থবছরে অনুদান পায় এনামূল কবির নির্ঝরের ‘নমুনা’।
২০০৮-০৯ অর্থবছরে অনুদান পায় জুনায়েদ হালিমের ‘স্বপ্ন ও দুঃস্বপ্নের গল্প’।
২০১০-১১ অর্থবছরে অনুদান পায় ফারুক হোসেনের ‘কাকতাড়ুয়া’ ও মির্জা সাখাওয়াৎ হোসেনের ‘ধোঁকা’।
২০১১-১২ অর্থবছরে অনুদান পায় মারুফ হাসান আরমানের ‘নেকড়ে অরণ্যে’, প্রশান্ত অধিকারীর ‘হাডসনের বন্দুক’ এবং সৈয়দ সালাউদ্দীন জাকীর ‘একা একা’।
২০১২-১৩ অর্থবছরে অনুদান পায় ক্যাথরিন মাসুদের ‘কাগজের ফুল’, টোকন ঠাকুরের ‘কাঁটা’ ও নারগিস আক্তারের ‘যৈবতী কন্যার মন’।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে অনুদান পায় ড্যানি সিডাকের ‘কাঁসার থালায় রূপালি চাঁদ’।
২০১৪-১৫ অর্থবছরে অনুদান পায় নূরুল আলম আতিকের ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ ও মাহমুদ দিদারের ‘বিউটি সার্কাস’।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে অনুদান পায় কামার আহমেদ সাইমনের ‘শঙ্খধ্বনি’ (বর্তমানে ‘শিকলবাহা’), স্বপন চৌধুরীর ‘বৃদ্ধাশ্রম’, পান্থ প্রসাদের ‘সাবিত্রী’ এবং কাওসার চৌধুরীর ‘বধ্যভূমিতে একদিন’।
২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে অনুদান পায় তানভীর মোকাম্মেল ‘রূপসা নদীর বাঁকে’, সোহানুর রহমান সোহান ‘প্রিয় জন্মভূমি’, শবনম ফেরদৌসীর ‘আজব সুন্দর’, কমল সরকারের ‘দায়মুক্তি’ এবং মুহম্মদ ফেরদৌস আলম সিদ্দিকীর ‘একজন মরিয়ম’।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে অনুদান পায় মানিক মানবিকের ‘আজব ছেলে’, আবিদ হোসেন খানের ‘অবলম্বন’, সাইদুল আনাম টুটুলের ‘কালবেলা’ ও হাবিবুর রহমানের ‘অলাতচক্র’।