Select Page

‘অন্যদিন…’ দেখে সনদ পাঠিয়ে দেবে সরকার, ভেবেছিলেন কামার আহমাদ সাইমন

‘অন্যদিন…’ দেখে সনদ পাঠিয়ে দেবে সরকার, ভেবেছিলেন কামার আহমাদ সাইমন

বিশ্বের নামকরা কয়েকটি চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে প্রদর্শিত হয়েছিল কামার আহমাদ সাইমন পরিচালিত ‘অন্যদিন…’। শেখ হাসিনার আমলে একাধিক কারণ দেখিয়ে আটকে দেখা হয় সিনেমাটি। কিন্তু তার স্বৈরাচারী শাসন শেষ হওয়ার পরও মুক্তির ঘোষণায় নেই কামারের জলত্রয়ী সিরিজের দ্বিতীয় এ নির্মাণ। এ নিয়ে নির্মাতা ও সার্টিফিকেশন বোর্ডের মাঝে দূরত্ব উঠে এসেছে প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে।

সেখানে কামার বলছেন, ‘আমি ধরে নিয়েছিলাম, আমার সঙ্গে কেউ কথা বলবে না, ছবিটি দেখে তারা সার্টিফিকেট পাঠিয়ে দেবে।’ অন্যদিকে লচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল জলিল বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে ছবিটির ব্যাপারে প্রযোজকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। একাধিকবার ফোন করা হয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।’

রিভিউ: বাংলাদেশী সিনেমায় ‘অন্যদিন…’

২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর তখনকার সেন্সর বোর্ড উপপরিচালক মঈনউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ছবিটি মুক্তির ব্যাপারে আপত্তির কথাও তুলে ধরা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল, ‘স্টিমার ভ্রমণের ওপর নির্মিত ‘অন্যদিন…’ছবিতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নির্বাচনী পরিবেশ, রাজনীতি, ব্যাংকঋণ, সরকারি চাকরিতে নিয়োগ, পাবলিক পরীক্ষার প্রভৃতি বিষয়ে একপেশে, অসত্য ও উসকানিমূলক তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। চলচ্চিত্রে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সরশিপ আইন ১৯৭৭–এর বিধি ১৩–এর (এ) ও (বি) অনুমোদন করে না।’

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান শেষে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। সেন্সর বোর্ড এখন সার্টিফিকেশন বোর্ড হয়েছে। আটকে থাকা কয়েকটি ছবি মুক্তিও পেয়েছে। কিন্তু ‘অন্যদিন…’ এর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।

কামার আহমাদ সাইমন বলেন, ‘তখনকার যে সরকার ছিল, তাদের কাছে তো আমার আশা করার কিছু ছিল না। কিন্তু এখনকার যে সরকার আছে, তাদের কাছে আমার আশা করার তো অনেক জায়গা অবশ্যই আছে। আমি আশা করছিলাম, অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে নানান কিছু সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে, স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়েই আটকে থাকা ছবি নিয়ে তারা কথা বলবেন। একটা–দুইটা ছবির যদি বিশেষ কোনো কারণ থাকে, সেটারও ব্যাখ্যা দেওয়া হবে। বাকিগুলোকে দায়মুক্তি দেওয়া হবে। এই কারণে একটু হতাশা অনুভব করছি।’

কামার আরও বলেন, ‘চলচ্চিত্রের চেয়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সরকার কাজ করছে। ভেবেছিলাম, চলচ্চিত্র হয়তো তাদের কাছে দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে। কিন্তু একজন নির্মাতা হিসেবে এটা তো আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, আমার জন্য বাঁচা–মরার প্রশ্নও। আমি ধরে নিয়েছিলাম, আমার সঙ্গে কেউ কথা বলবে না, ছবিটি দেখে তারা সার্টিফিকেট পাঠিয়ে দেবে। অথবা আমাকে বলা হবে, আপনি সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেন। ছয় মাস দেখলাম। অপেক্ষা করলাম। কিছুই হলো না।’

এ প্রসঙ্গে চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল জলিল বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে ছবিটির ব্যাপারে প্রযোজকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। একাধিকবার ফোন করা হয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। আটকে থাকা ছবির ব্যাপারে বর্তমান বোর্ড আন্তরিক। ছবিসংশ্লিষ্টরা একটা চিঠি ইস্যু করলেই প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করব।’

আওয়ামী আমলে সেন্সর সনদ না পেয়ে আটকে থাকা সিনেমার মধ্যে আরো রয়েছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’ ও এনামুল করিম নির্ঝরের ‘নমুনা’।


Leave a reply