‘অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম’ দেখিয়ে দিল মাল্টিপ্লেক্সের সামর্থ্য
যেখানে সারাদেশের সিঙ্গেল স্ক্রিনগুলো আর্থিক অভাবে ধুকছে, সেখানে দেশের হাতেগোনা কয়েকটি মাল্টিপ্লেক্সে নিত্য নতুন সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে, নতুন নতুন শাখা তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যে ওইসব পর্দায় দেশে নির্মিত উন্নত সিনেমাগুলো ভালো ব্যবসা করেছে। এবার হলিউডের ‘অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম’ দেখিয়ে দিল দর্শক হৃদয়ে ঝড় তোলা একটি ছবি কয়েকটি পর্দা থেকে কত আয় করতে পারে।
কালের কণ্ঠের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ‘অ্যাভেঞ্জার্স : এন্ডগেম’ মুক্তির ১০ দিন পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রায় ছয় কোটি টাকা ব্যবসা করেছে। দেশি-বিদেশি মিলিয়ে সিনেপ্লেক্সগুলোতে এটাই কোনো ছবির সর্বোচ্চ মুনাফা।
২৬ এপ্রিল থেকে ‘এন্ডগেম’ ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্স, সীমান্ত সম্ভার, ব্লকবাস্টার সিনেমাজ ও চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিনে চলছে। ৩০ এপ্রিল প্রথম পাঁচ দিনের আয় হিসাব করে দেখা যায়, তিন কোটিরও বেশি মুনাফা করেছে ছবিটি। চারটি প্রেক্ষাগৃহের শো এবং টিকিটের মূল্য হিসাব করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
স্টার সিনেপ্লেক্সের সিনিয়র ম্যানেজার (মিডিয়া ও মার্কেটিং) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা পাঁচ দিন পর একটা প্রাথমিক হিসাব করেছি। সেখানেও প্রায় এ রকমই একটা অঙ্ক এসেছিল। সেই হিসাবে ১০ দিনে আয় দ্বিগুণ হওয়ার কথা। কারণ মুক্তির প্রথম দিন থেকেই আমরা ১৭টি করে শো চালিয়ে আসছি। এখন পর্যন্ত ছবিটি নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ আগের মতোই আছে। প্রতিটি শো হাউসফুল হচ্ছে।’
মেজবাহ উদ্দিন আরো বলেন, স্টার সিনেপ্লেক্স চালুর পর থেকে ‘অ্যাভেঞ্জার্স : এন্ডগেম’ই সবচেয়ে বেশি আয় করা ছবি। সিনেপ্লেক্সে প্রথম পাঁচ দিনে ‘এন্ডগেম’-এর ২৫ হাজারের বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। ৮০০, ৫৫০, ৫০০ ও ৪৫০ টাকা মূল্যের টিকিট থেকে এসেছে এক কোটি ২০ লাখ টাকার বেশি। ব্লকবাস্টার সিনেমাজে প্রতিদিন চার হাজার ৫২০ জন ছবিটি দেখার সুযোগ পায়। সেই হিসাবে ১০ দিনে ৪৫ হাজারেরও বেশি মানুষ ছবিটি দেখেছে।
চট্টগ্রামের সিলভার স্ক্রিনে প্রতিদিন ছবিটির আটটি শো চলছে। প্রেক্ষাগৃহটির বিজনেস ক্লাস ও প্লাটিনাম—এ দুই ক্যাটাগরির টিকিটের দাম ১৫০০ ও ১০০০ টাকা। তবে রমজান মাসে ‘এন্ডগেম’-এর ব্যবসায় খানিকটা ভাটা পড়তে পারে। এ মাসে ছবির প্রদর্শনী কমানোর কথা জানিয়েছে প্রেক্ষগৃহগুলো।
তাহলে ভাবুন- দেশি একটি সিনেমা শুধু মাল্টিপ্লেক্সেই ‘এন্ডগেম’-এর চারভাগের একভাগ আয় করলেও কী দাঁড়ায়।
এর আগে ঢাকায় নির্মিত মনপুরা, পোড়ামন টু, দেবী, ঢাকা অ্যাটাক, শিকারি সিনেমাগুলো দারুণ ব্যবসা করেছে। মোটামুটি মানের দেশি সিনেমাগুলো প্রদর্শনে আগ্রহী এই মাল্টিপ্লেক্স। যদিও কিছু কিছু দেশি সিনেমার এমনও শো গেছে- যেখানে দর্শক ছিল এক বা দুইজন।
সবচেয়ে বড় বিষয় হলো- প্রথাগত সিনেমা হলগুলোর আয় নিয়ে বরাবরই ধোঁয়াশা রয়েছে। সেখানে মাল্টিপ্লেক্সের হিসেব স্বচ্ছ। আর অবশ্যই সামগ্রিক সিনেমার পরিবেশ দর্শক উপভোগ করে। সব মিলিয়ে নতুন সিনেমার সম্ভাবনা বাড়ছে। সেই অনুযায়ী দরকার নির্মাতা ও প্রযোজক।
এছাড়া আধুনিক সিনেমার সম্ভাবনা বুঝে গেছে স্টার সিনেপ্লেক্স। এক দশক আগে আংশিক প্রযোজনা (টেলিভিশন) করলেও এবার পুরো লগ্নিতে নির্মাণ করছে তানিম রহমান অংশু পরিচালিত সিনেমা ‘ফ্রি’। আর দেশব্যাপী খুলতে থাকা নতুন নতুন শাখা ওই সিনেমার সম্ভাবনাকে জাগিয়ে তুলেছে।