আগুন সময়ের ‘দামাল ‘
ঐ ক্ষেপেছে পাগলি মায়ের দামাল ছেলে..
১৯৭১। আগুনের দিনলিপি। উত্তাল সময়। দেশ আর প্রজন্ম। মুক্তিযুদ্ধ আর ফুটবল।
ফ্ল্যাশব্যাক। এক প্রজন্ম আরেক প্রজন্ম। অনুপ্রেরণার গল্প। মুগ্ধ শ্রোতা সামনে। বলছে একজন তিনি কে!
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। ফুটবল আর মুক্তিযুদ্ধ। এমনটা প্রথম দেশের চলচ্চিত্রে এটাও অর্জন। খেলা কি শুধুই খেলা নাকি অনকিছু!
ফুটবল মাঠে গোল হয় না কেন স্বাধীন বাংলা দলের! মাঠে সবাই খেলে কিন্তু স্ট্রাইকার কেন খেলতে পারছে না! কী ঘটছে তার সাথে! গভীর সত্য লুকিয়ে আছে।
দুই প্রেমিক জুটি। প্রেম ছিল না কোন সময়! সবসময় ছিল তাই যুদ্ধদিনেও ছিল। এই প্রেম আগুন দিনের অনুপ্রেরণার। সেই গানটির মতো ‘যে নারীর মধু প্রেমেতে আমার রক্ত দোলে’ কিংবা কবিতার মতো ‘কোনোকালে একা হয়নিকো জয়ী পুরুষের তরবারি/প্রেরণা দিয়াছে শক্তি দিয়াছে বিজয় লক্ষী নারী’।
চারিদিকে গোলাগুলি, রক্ত, হত্যা, ধর্ষণ, আগুন জ্বলছে। ভয়, উৎকণ্ঠা, হাহাকার, কান্না, স্বজনহারা বেদনা। হানাদার তাণ্ডব।
শান্তি কমিটি, বিশ্বাসঘাকতা, রাজাকার। ক্যাম্প, অত্যাচার।
অপারেশন, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা। স্টেনগান হাতে একজন যাচ্ছে এগিয়ে। সামনের হানাদার লুটিয়ে পড়েছে রক্তে ভেসে। তার এগিয়ে যাওয়া যেন একটা প্রজন্মের এগিয়ে যাওয়া। তার এগিয়ে যাওয়া কবিতার মতো বলে ‘ঐ ক্ষেপেছে পাগলি মায়ের দামাল ছেলে’।
ইন্তেখাব দিনার, সিয়াম আহমেদ, শরিফুল রাজ, সুমিত, মীম, সুমি, সৈয়দ নাজমুস সাকিব, সমু চৌধুরী, আহসান হাবীব নাসিম, রাশেদ মামুন অপু, মিলি বাশার, টাইগার রবি, সামিয়া অথৈ, সাঈদ বাবু। সবার পরিমিত অভিনয়।
সেকাল-একাল দুই সময়ের ক্যামেরার কাজ। রঙিন ও ধূসর ভাষায় দুই সময়। নির্মাতার পোক্ত কৌশল।
ফুটবলের গান।
প্রেমের গান।
দামালের গান।
ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে।
স্টেডিয়াম। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল বনাম মহারাষ্ট্র একাদশ। গ্যালারিভর্তি দর্শক। বাইসাইকেল কিক। ইতিহাস।
নারীর অগ্নি রূপ।
নায়িকা কি শুধুই নায়িকা? না, বহ্নিশিখা।
ছবি শেষ হলেও কানে লেগে থাকে নজরুলের ‘বিদ্রোহী’-র একটা আবৃত্তি –
‘যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না
অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণভূমে রণিবে না
মহা বিদ্রোহী রণক্লান্ত আমি সেই দিন হবো শান্ত’
রেটিং – ৮/১০