আজিমের মৃত্যুবার্ষিকী
ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম সুদর্শন নায়ক আজিম ২০০৩ সালের এ দিনে (২৬ মার্চ) ঢাকায় মারা যান। ১৯৬৩ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ঢাকার চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে তিনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন।
আজিম ১৯৩৭ সালের ২৩ জুলাই সিলেটের হবিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন মুন্সেফ। তাই আজিমের শৈশব-কৈশোর কাটে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। পরবর্তীতে ঢাকার হাটখোলার ভবগতী ব্যানার্জী রোডে তারা স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
আজিমের চলচ্চিত্রে পদার্পণ একেবারেই আকস্মিক। ১৯৫৯ সাল বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘রাজধানীর বুকে’র চিত্রগ্রহণ চলছিল। সুরকার রবীন ঘোষ ছিলেন আজিমের বন্ধু। তিনিই ওই চলচ্চিত্রে একটি সংলাপহীন চরিত্রে আজিমকে অভিনয় করতে দেন। এরপর আরেক বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘হারানো দিন’ এ ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৬০ সালে ইবনে মিজান নির্মিত ‘আওর গম নেহি’ চলচ্চিত্রে আজিম খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন। তবে চলচ্চিত্রটি শেষ পর্যন্ত অসমাপ্তই থেকে যায়।
১৯৬২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এহতেশাম পরিচালিত ‘নতুন সুর’ চলচ্চিত্রে আজিম খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন। বিপরীতে ছিলেন নার্গিস মুর্শেদা। প্রধান নায়ক-নায়িকা ছিলেন রহমান ও রওশন আরা। ১৯৬২ সালে নায়ক হিসেবে আজিম তিনটি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হন— ‘পয়সে’, ‘মেঘ ভাঙা রোদ’ ও ‘বেওয়াকুফ’। ‘পয়সে’ চলচ্চিত্রে তার বিপরীতে ছিলেন শবনম। অন্যান্য আলোচিত চলচ্চিত্র হলো পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম সিনেমাস্কোপ চলচ্চিত্র মালা, ডাকবাবু, আমির সওদাগর, ভেলুয়া সুন্দরী, মধুমালা, স্বর্ণকমল, সাইফুল মুলক বদিউজ্জামাল ও রাখাল বন্ধু প্রভৃতি সিনেমায় সুজাতার নায়ক ছিলেন আজিম।
আজিম চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, পরিবেশকও ছিলেন। নিজের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে একটি সিনেমা হলও নির্মাণ করেছিলেন। প্রযোজক হিসেবে ১৯৬৭ সালে নির্মাণ করেন ‘চেনা অচেনা’। নায়ক তিনি, নায়িকা সুজাতা। পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ১৯৭৪ সালে ‘টাকার খেলা’ চলচ্চিত্রে। ১৯৭৬ সালে নির্মাণ করেন ‘প্রতিনিধি’। আরও নির্মাণ করেন ‘জীবন মরণ’ ও ‘গাদ্দার’।
চিত্রনায়িকা সুজাতাকে ১৯৬৭ সালের ৩০ জুন বিয়ে করেন আজিম। তারা অনেক সফল চলচ্চিত্রে জুটিবদ্ধ হয়েছিলেন।