আন্ডারওয়ার্ল্ডের কুল ছবি ‘রাজধানী’
রাজধানী; পরিচালক: মোহাম্মদ হোসেন জেমী; শ্রেষ্ঠাংশে : মান্না, সুমনা সোমা, ফারদিন, শাহনূর, কাজী হায়াৎ, ডলি জহুর, মিশা সওদাগর, প্রবীরমিত্র, আহমেদ শরীফ, হুমায়ুন ফরীদি প্রমুখ; মুক্তি: ১৪ মে ২০০৪
‘রাজধানী’ ছবির পরিচালক মোহাম্মদ হোসেন জেমী ছিলেন টেলিভিশনের জনপ্রিয় নির্মাতা। তাঁর থ্রিলার নাটক ‘দমন, লোহার চুঁড়ি’ নব্বই দশকের প্রজন্মের কাছে স্মরণীয়। সেসব নাটকে তাঁর নির্মাণের গুণ চোখে পড়ত। চলচ্চিত্রে ২০০৪ সালে আগমন ঘটে ‘রাজধানী’ ছবির মাধ্যমে।
‘রাজধানী’ আন্ডারওয়ার্ল্ডের গল্পে কুল একটি ছবি। মান্নার অ্যাকশন ছবিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ব্যতিক্রমী ছবিও বলা যায়। অন্যান্য ছবিগুলোর তুলনায় এটাতে লাউড অ্যাকটিং-এর বিষয় সেভাবে নেই। রিয়েলিস্টিক বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে অভিনয়ে। মোহাম্মদ হোসেন জেমী এখানেই মান্নাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছিলেন।
ছবির গল্পে রাজধানী ঢাকায় এসে ঘটনাচক্রে মান্না আন্ডারওয়ার্ল্ডের সাথে মিশে যায়। তার সাহসিকতাই তাকে অনেক ওপরে নিয়ে যায়। আহমেদ শরীফের আন্ডারওয়ার্ল্ড গ্যাংকে মান্না সামলায়। মিশা সওদাগরের সাথে তার বিরোধ হয়। এক সময় পরিবর্তন আসে সুমনা সোমার সাথে পরিচয়ের পর। প্রেম ও সংসার জীবনের স্বপ্নের সাথে অপরাধ জীবনের দ্বন্দ্বে মান্না পরিবর্তন হবার সুযোগ খোঁজে কিন্তু সুযোগ মিলবে কি?
মান্নাই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র। তার চরিত্রটিতে দেখানো হয়েছে অপরাধীরা কিভাবে অপরাধের সাথে যুক্ত হয় রাজধানী শহরে, তাদেরকে কারা কাজে লাগায়, কোন স্বার্থে কাজে লাগায় এবং তাদের পরিণতি শেষ পর্যন্ত কি হয়। মান্না পুরো ছবিতে ন্যাচারাল, রিয়েলিস্টিক অভিনয় করেছে। সুমনা সোমাও ভালো ছিল। অন্যান্য চরিত্রগুলোও ছবির রিয়েলিস্টিক বিষয়টাকেই তুলে ধরেছে। সর্বোপরি মাল্টিকাস্টিং ছবি এটি।
ছবির ফিনিশিংটা ছিল সবচেয়ে স্পর্শকাতর। বাস্তবতার চাপে পড়ে একজন অপরাধীর ভালো হবার স্বপ্ন থাকলেও তা কিভাবে ব্যর্থ হয়। অপরাধী অপরাধজগত ছাড়তে চাইলেও অপরাধজগত তাকে ছাড়ে না। করুণ এ বাস্তবতা।
মোহাম্মদ হোসেন জেমী সার্থকভাবেই আন্ডারওয়ার্ল্ডের তাড়াহুড়ো বিহীন একটি পরিচ্ছন্ন কুল ছবি নির্মাণ করেছেন।