Select Page

আপত্তির মুখে বদলে যেতে পারে ‘হাজীর বিরিয়ানী’র কথা

আপত্তির মুখে বদলে যেতে পারে ‘হাজীর বিরিয়ানী’র কথা

# আর্মি স্টেডিয়ামের এক অনুষ্ঠানে দহন টিম মঞ্চে উঠলে ‘ভুয়া’, ‘ভুয়া’ বলে চিৎকার করে দর্শক
# ‘হাজীর বিরিয়ানি’ গানটি বাতিলের জন্য স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন সঙ্গীত সংশ্লিষ্টরা
# তালিকায় আছেন আলাউদ্দিন আলী, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, সাবিনা ইয়াসমিনসহ শতাধিক তারকা
# প্রয়োজনে শব্দ পরিবর্তন করব, বললেন প্রযোজক আব্দুল আজিজ

কয়েকদিন আগের কথা। ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে আড়ংয়ের ৪০ বছর পূর্তি উৎসবের শেষ দিন, ছবির প্রচারণার জন্য মঞ্চে ওঠেন ‘দহন’ ছবির প্রযোজক ও নায়ক-নায়িকা। তারকাদের ভঙ্গিতে ‘হ্যালো ঢাকা’ বলে দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করেন প্রযোজক আবদুল আজিজ। এ সময় মঞ্চের সামনে উপস্থিত হাজারো দর্শক ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। এভাবে বিতর্ক, উপেক্ষা যেন পিছু ছাড়ছে না ‘দহন’ ছবির। সম্প্রতি যার শুরু হয়েছে ‘হাজীর বিরিয়ানী’ শিরোনামের একটি গান নিয়ে।

ইউটিউবে ‘হাজীর বিরিয়ানি’ গানটি প্রকাশের পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আর গানটির ভারতীয় গায়ক ও সংগীত পরিচালককে। সংগীতাঙ্গনের অনেকে গানটি নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারা ছবি থেকে গানটি প্রত্যাহার করার আবেদন করেছেন। গানটি বাতিলের জন্য তারা স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে গানটির ব্যাপারে তারা আপত্তিপত্র জমা দেবেন।

এরই মধ্যে এতে স্বাক্ষর করেছেন আলাউদ্দিন আলী, আলম খান, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, সাবিনা ইয়াসমিন, এন্ড্রু কিশোর, ফরিদ আহমেদ, আঁখি আলমগীর, শওকত আলী ইমনসহ শতাধিক তারকা।

এ প্রসঙ্গে শুরু থেকেই নিজের ফেসবুকে প্রতিবাদ করে আসছিলেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। তিনি বলেন, “শওকত আলী ইমনের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। শুনেছি সেন্সর বোর্ড, সংস্কৃতিমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী—এমনকি প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত তারা অভিযোগটি পৌঁছাবেন। আমি মনে করি, এটাই হওয়া উচিত। শিল্পীরা এক হয়ে যেকোনো ধরনের বাধা-বিপত্তি মোকাবেলা করবে। এই গানে যে ধরনের শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে—‘মাতাল হয়ে হিসু করবো দেয়ালে, যা হবে তা দেখা যাবে সকালে’—এমন কথা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের সবারই উচিত এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা।”

সুরকার আলাউদ্দিন আলীও স্বাক্ষর করেছেন এতে। তিনি বলেন, ‘গোটা বাংলাদেশের একটা লোকও এই গানটি পছন্দ করেনি। সেন্সর বোর্ড যদি এই গানকে অনুমতি দেয় তাহলে এ ধরনের গান আরো হতে থাকবে, যা কখনোই কাম্য নয়।’

সুরকার আলম খান বলেন, ‘গান পরিচ্ছন্ন হওয়া উচিত। গানে অশ্লীল শব্দের ব্যবহার কখনোই কোনো অবস্থাতেই কাম্য নয়। এখানে কোনো যুক্তি চলে না। ভদ্র সমাজ অশ্লীল গানকে গ্রহণ করতে পারে না। ভালো গান চর্চা হওয়া উচিত। গানে অশ্লীলতাকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেয়া যাবে না।’

যে গান নিয়ে এত সমালোচনা, সে গান নিয়ে কিছু ভেবেছেন? আবদুল আজিজ বলেন, ‘গানের ব্যাপারে ভাবা আছে। আমি নিজে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সঙ্গে দেখা করব। তার মতামত শুনব। তিনি আমার মুরব্বি। তিনি বললেই আমি বাদ দিয়ে দেব। প্রয়োজনে শব্দ পরিবর্তন করব। তবে আমি মনে করি, এই গান চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা আটকাবেন না।’

এত কিছুর পরও ছবিটির মুক্তির তারিখের ব্যাপারে অনড় ছিল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। জাজ মাল্টিমিডিয়া থেকে জানানো হয়, ১৬ নভেম্বর দহন ছবিটি মুক্তি দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু গত মঙ্গলবার জানা গেছে, ১৬ নভেম্বর ছবিটি মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এই তারিখ থেকে সরে এসেছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। সেদিন মুক্তি পাবে ‘মিস্টার বাংলাদেশ’ নামের একটি ছবি।

আবদুল আজিজ বলেন, ‘ছবিটি মুক্তির নতুন তারিখ হিসেবে ভেবেছি নভেম্বরের শেষ সময়টা। আগামী ১০ নভেম্বর চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে ছাড়পত্রের জন্য ছবিটি জমা দেব।’

 

 

 


মন্তব্য করুন