আমার সিনেমা আমার বিনোদন
আমার প্রেম আমার প্রিয়া
পরিচালনা : শামীমুল ইসলাম শামীম
অভিনয়ে : পরী মনি, কায়েস আরজু, আলীরাজ, মিশা সওদাগর, রেবেকা রউফ, বাদল ও সীমান্ত।
রেটিং : ৩/ ৫
আমার ভালো লাগা আমার আবেগ : আমার দেশ আমার চলচ্চিত্র-শুধুমাত্র এ কারণেই মুক্তির প্রথম দিনই দেখতে গিয়েছিলাম ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’। সত্যি বলতে দ্বিধা নেই, এ ছবির ট্রেলার এবং যৎসামান্য প্রচারণা যা-ই হয়েছে, ওসব দেখে এ মুক্তির আগে চলচ্চিত্রটি সম্পর্কে মনের অজান্তেই একটি নেতিবাচক ধারণা জন্ম নিয়েছিল। এই ধারণা নিয়েই দেখতে বসেছিলাম শামীমুল ইসলাম শামীমের পরিচালনায় অভিষেক চলচ্চিত্র।
শুরুতেই ধাক্কা হলাম কিছুটা। আগেই জেনেছি প্রয়াত নায়ক সালমান শাহের একটি গান ব্যবহৃত হয়েছে এই চলচ্চিত্রে, তাই বলে গোটা একটি চলচ্চিত্র তাকে উৎসর্গ করার পেছনে কী কী যুক্তি থাকতে পারে? শুধু শুধু সালমান শাহ’কে ব্যবহার করার কোনো অর্থ আছে কি? তার ওপর ‘উৎসর্গ’ শব্দের বানান লেখা হয়েছে ‘উৎস্বর্গ’। এসব অপরাধ অমার্জনীয়। অন্যদিকে ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের এ ছবির শুরুর ক্রেডিট লাইনে অতিথি চরিত্র হিসেবে মৌমিতা মৌ’র নাম লেখা হয়েছে, ব্র্যাকেটে সংযুক্ত ‘চিত্রনায়িকা’। যে নায়িকাকে পরিচয় করিয়ে দিতে হয় চিত্রনায়িকা বলে, সেই নায়িকাকে এত বিশেষভাবে উপস্থাপনের কি কোনো যৌক্তিকতা আছে?
রাজ্যের বিরক্তি নিয়ে ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’র গল্পে ঢোকার চেষ্টা করেছি এবং প্রথম দশ মিনিটেই যা বুঝে গিয়েছি, এটি একটি রোমান্টিক-কমেডি চলচ্চিত্র। গল্পের ডালপালা যতই বিস্তৃত হয়েছে, বুঝতে পেরেছি অন্যান্য দেশীয় রম-কম চলচ্চিত্রের মত এ ছবিতেও ফর্মূলা মানবার চেষ্টা করা হয়েছে ঠিক, তবে এখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে প্রধান পাত্র-পাত্রী মানিক (কায়েস আরজু) ও জান্নাত (পরী মনি) চরিত্রের চিত্রায়নের দিকে। টম-জেরির মতো ছবির শুরু থেকে শেষ তারা একে অপরের সাথে মধুর যুদ্ধে শামিল হয়। মিলন তো দূরের কথা, প্রতিটি আলোচনাই ওদের শেষ হয় তুমুল বাগবিতন্ডা দিয়ে। যে মাত্র দর্শক ভাবতে শুরু করে নায়ক-নায়িকার প্রণয় প্রতিষ্ঠিত হবে, সে মুহূর্তেই লেগে যায় ধুন্দুমার ঝগড়া। আর এখানেই গল্পের প্রকৃত মজা। কারণ এই দৃশ্যগুলো সাজাতে গিয়ে গল্পের গতি এতটুকু ঝুলিয়ে দেননি চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক। সুনিপুণভাবে তারা মালা গেঁথেছেন।
এর আগে অনেক ব্যবসাসফল প্রেমের ছবিতেও দেখেছি নায়ক-নায়িকার প্রেমের রসায়ন খুব একটা জমে না। এ ক্ষেত্রে ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’ ছবিতে আরজু-পরী মনির জাদুকরী রসায়নই পুরো ছবিকে টেনে নিয়ে গেছে। দুজনের চুম্বন দৃশ্যও রয়েছে ছবিতে, যা গল্পে বাড়তি আবেগ যোগ করেছে। বেশির ভাগ ছবিতে শেষ দৃশ্য থাকে গতানুগতিক। তবে এ ছবিতে আরজু-পরী মনির শেষ দৃশ্যও ছিল হাত তালি দেবার মত, সংলাপগুলো বেশ মজার। ছবি দেখা শেষ করে নিজের অজান্তেই হেসেছি আর পাশের বন্ধুকে বলেছি- প্রেক্ষাগৃহে প্রবেশ করার আগে কী ভেবেছিলাম আর এখন কী ভাবছি। এক বাক্যে বললে: ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’ অনন্য দলিল নয়, তবে ষোল আনা বিনোদনমূলক ছবি।
একটি সফল ছবিতে জমজমাট একটি গল্প দরকার। এ ছবিতে আব্দুল্লাহ জহির বাবু সেই গল্পের যোগান দিয়েছেন। মাথার ওপর দিয়ে যাওয়া আনকোড়া কোনো গল্প নয়, তবে সহজ সরল এই গল্পই শামীমুল ইসলাম শামীমের শক্ত চিত্রনাট্যের খুঁটির ওপর পুরোটা সময় দাঁড়িয়ে ছিল। বাড়তি পাওনা হিসেবে যোগ হয়েছে পরিচালকের লেখা সংলাপ। এ ধরনের ছবিতে নায়িকার মুখে: আমার আবেগ বিবেকের সাথে বান্ধা কিংবা ভালোবাসা ছাড়া একটা মানুষের সাথে পঞ্চাশ বছর ঘর করার চাইতে ভালোবাসার মানুষের সাথে একটা দিন ঘর করাও অনেক শান্তির– সংলাপ শুনতে পারাটাও প্রশান্তির ব্যাপার।
নির্মাতা শামীমুল ইসলাম শামীম তার প্রথম চলচ্চিত্রে অপার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। কিছু অসঙ্গতি বাদে পুরো ছবিতে যত্নের ছাপ পাওয়া গেছে। একবারও মনে হয়নি এটি তার প্রথম চলচ্চিত্র। বিশেষ করে মূলধারার বাণিজ্যিক ছবিতে বুদ্ধিদীপ্ত কমিক টাইমিং কিংবা ছোট ছোট হাস্যরসাত্মক সংলাপ খুব একটা পাওয়া যায় না। এ ছবিতে যা পেয়েছি। মিশা সওদাগরের মুখের অভিব্যক্তিতে ‘একটু জোরে বলো চামচা’ কিংবা ‘নতুন করে গুটি চালতে হবে’-সাধারণ দর্শককে বিনোদিত করেছে। শুধু তাই নয়, বেশিরভাগ চলচ্চিত্রের পরিচালক বিরতির আগে এবং পরের দৃশ্যগুলোতে খুব একটা জোর দেন না। শামীমুল ইসলাম শামীমের যত্নের ছাপ এই দুটি দৃশ্যেও পাওয়া গেছে। আরো কয়েকটি দৃশ্যের কথা আলাদা করে বলতে হয়: গ্রামে সালিশ বসা ও চুল কাটার দৃশ্য, নায়কের বাবার সেলুনে নায়িকার বাবার হঠাৎ আগমন ও জড়িয়ে ধরা, পাগল ও পুরুষ সেজে নায়িকার মিথ্যে অভিনয়, কুয়োর পানিতে বৃষ্টির মধ্যে নায়ককে নায়িকার খোঁজার প্রাণান্তকর চেষ্টা, হাসপাতালে নাটকীয় পরিস্থিতি, তালাকের নোটিশ দেয়া, রেল লাইনে নায়ক নায়িকার বোধোদয়-প্রতিটি দৃশ্যেরই চিত্রনাট্য, সংলাপ, পরিচালনা ও অভিনয় ছিল দশে দশ। নামকরণ হিসেবেও এ ছবির ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’ নামটি ছিল যথার্থ। এ জন্য আব্দুল্লাহ জহির বাবুকে ধন্যবাদ।
তবে মুদ্রার ওপর পিঠে কিছু অসঙ্গতিও চোখ এড়ায়নি। এ ছবির শুরুতে বাবার গুদামের চাল বিক্রি করে শাকিব খানের সিনেমা দেখতে যান পরী মনি। বিষয়টি অন্যভাবেও আসতে পারতো। জব্বার চেয়ারম্যান হিসেবে মিশা সওদাগরের নেতিবাচক ব্যাপারগুলো পর্দায় এসেছে চমৎকারভাবেই, তবে নিজের স্ত্রীকে ‘ছোট খাটো হাতির বাচ্চা’ বলে অভিহিত করার বিষয়টি না থাকলেও হতো। চলচ্চিত্র যেহেতু সমাজের আয়না, এ ধরনের বিষয়গুলো সমাজের মন্দ/ সংকীর্ণমনা মানুষগুলোকে নারীদের অসম্মান করতে উদ্ধুদ্ধ করে। তাছাড়া ‘টেরাম টেরাম’ গানের দৃশ্যপটের সংলাপগুলোও শোভন হতে পারতো।
অভিনয়ে এ ছবিতে কেউ কারো চেয়ে কম যাননি। শুরুতেই চিত্রনায়িকা পরী মনির কথা বলবো। আমার দৃষ্টিতে বাণিজ্যিক ছবির নায়িকা হবার জন্য একজন নায়িকার যা যা দরকার, সবকিছুই এ ছবিতে আমি পরী মনির কাছ থেকে পেয়েছি। যদিও এটি পরী মনির ক্যারিয়ারের প্রথম দিকের চলচ্চিত্র, তারপরও চরিত্র বুঝে সংলাপ প্রক্ষেপণ ও একটি সংলাপে বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে সাবলীলভাবে একাধিক অভিব্যক্তি দেয়ার বিষয়গুলো বিস্মিত করেছে আমাকে। এ ক্ষেত্রে পরী মনি তো বটেই, পাশাপাশি নির্মাতাকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। সিনেমা হলে শাকিব খানের সিনেমা দেখবার সময় পরী মনির মুখের অভিব্যক্তি, জীনে ধরা পাগল মেয়ে কিংবা পুরুষ সেজে অভিনয়, কুয়োর সামনে প্রেমিকের জন্য হাহাকার, তালাক নামা দেবার দৃশ্য কিংবা ঝগড়ার দৃশ্যগুলোতে পরী মনির অভিনয় হিন্দি ‘জাব উই মেট’ ছবির কারিনা কাপুরের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। সে ছবিতে গীতের চরিত্রে কারিনা যেরকম উচ্ছল, উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত, এই মেঘ-এই রৌদ্র-এই ঝড় এরকম চরিত্রে অভিনয় করেছেন, এখানে জান্নাত চরিত্রেও পরী মনি কখনো উচ্চকিত, কখনো আবার জলের মত স্বচ্ছ। ভীষণ পরিমিত ছিলেন তিনি এ ছবিতে।
তবে পরী মনি এ ছবিতে আমাকে যতখানি বিস্মিত করেছে, তার চেয়ে বেশি বিস্মিত করেছেন নায়ক কায়েস আরজু। এর আগে অন্য কোনো ছবিতে তাকে এতটা সাবলীল মনে হয়নি। ছবিটি দেখছিলাম আর বার বার ভাবছিলাম শুধুমাত্র কয়েকটি দুর্বল চলচ্চিত্রে কাজ করার কারণে কায়েস আরজু আজ পেছনে পড়ে আছেন। কিন্তু অনেক নামজাদা নায়কের চাইতেও আরজু ভীষণ সাবলীল, এ ছবিটি দেখলেই তার প্রমাণ মিলবে। বিশেষ করে কমিক টাইমিং, প্রেমের অভিনয় এবং নাচে স্বতঃস্ফূর্ত তিনি। অবশ্য একই মন্তব্য করা যাচ্ছে না অ্যাকশন কিংবা আবেগী/ কান্নার দৃশ্যে (বিশেষ করে হাসপাতালে)। এসব দৃশ্যে কিছুটা জড়তা রয়েছে তার। সেগুলো কাটিয়ে উঠতে পারলে আরজুর জ্বলে উঠবার ভীষণ সম্ভাবনা রয়েছে। শুরু থেকে শেষ ভেবেছি আরজুর হয়ে অন্য কোনো ডাবিং শিল্পী হয়তো ডাবিং করে দিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তীতে নিশ্চিত হলাম, আরজুই স্বয়ং তার ডাবিং করেছেন। দারুণ!
এ ছবিতে মিশা সওদাগর ও আলীরাজ পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন। কেউ যেন কারো চেয়ে কম নয়। ‘জব্বার চেয়ারম্যান’ চরিত্রে কমেডি ভিলেন মিশা সওদাগরকে নতুন রূপে পেয়েছি (যদিও তার পরচুলা আরো বিশ্বাসযোগ্য হতে পারতো)। বাংলা ছবিতে কালো চরিত্রকে বরাবর কালো এবং সাদাকে সাদা হিসেবেই উপস্থাপনের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এখানে চিত্রনাট্যকার মিশার চরিত্রকে বহুমুখী স্তরে তুলে ধরেছেন। সিরিয়াস সংলাপের মধ্যিখানে বিভিন্ন দৃশ্যে মিশার এক লাইনের কমিক সংলাপগুলো আনন্দ দিয়েছে।
আলীরাজের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এ ধরনের অভিনেতারা সব ছবিতে নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ পান না। এ ছবিতে তিনি তা পেয়েছেন। সালিশের দৃশ্যে অসাধারণ তিনি। অন্যান্য অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে রেবেকা, বাদল, সীমান্ত অন্য ছবির তুলনায় এখানে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছেন বেশি, তারা কাজেও লাগিয়েছেন।
‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’ যেহেতু রোমান্টিক-কমেডি ছবি; স্বাভাবিকভাবেই এ ছবিতে সংগীত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে ছিল। কবির বকুলের লেখা রাজীব দাস হিল্লোলের সুর ও আহমেদ হুমায়ূনের সংগীত পরিচালনায় ‘জোসনা পড়ে গলে গলে’ মন ছুঁয়ে গেছে। লাবণ্য ও শফিক তুহিন অসাধারণ গেয়েছেন। দুর্ভাগ্য আমাদের, এ ধরনের গানের প্রচারণা সঠিকভাবে হয়না। ‘জীবন সংসার’ ছবির ‘পৃথিবীতে সুখ বলে যদি কিছু থেকে থাকে’ এ ছবিতে নতুনভাবে সংগীতায়োজন করে ব্যবহৃত হয়েছে। খেয়া ও ইমরানের গাওয়া গানটি শুনতে ভালোই লেগেছে। সেই সাথে সিলেটের মনোরম দৃশ্য দেখতেও মন্দ লাগেনি। নৃত্য পরিচালনা সাদামাটা হলেও ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’ ছবির শিরোনাম গান গল্পের গতির সাথে মানিয়ে গেছে। একই কথা প্রযোজ্য ‘টেরাম টেরাম’ গানের ক্ষেত্রে। তবে গানে পরীমনির সাজ, পোশাক, গানের কথা বেশ ‘ভালগার’ ছিল। আমজনতাকে আকৃষ্ট করতে নান্দনিকভাবেও অনেক কিছু করা যায়। ‘প্রেমের মরা’ গানে যেমন সস্তা হাত তালি পাবার একটা চেষ্টা ছিল গানের সাথে সংশ্লিষ্টদের। মৌমিতা মৌ-আরজুর এ গানটি ছবির গল্পে বাহুল্য ছিল, না থাকলেও চিত্রনাট্যে কোনো ব্যত্যয় ঘটতো না। তবে স্যাড গান ‘আপন ছিল যে’ বুকে লেগেছে। গানে আরজুর অভিনয়ও ছিল বিশ্বাসযোগ্য। গানের পাশাপাশি এ ছবিতে ইমন সাহার করা আবহ সংগীতের কথাও আলাদাভাবে উল্লেখ করতে হয়। একটি দৃশ্যে পরী মনির সংলাপের আবহে গীটারের অসাধারণ ধুন ভেসে ওঠে। অস্ফুটস্বরে নিজেই তখন বলে উঠেছিলাম, ‘ওয়াও’! তবে এ ছবির অন্যতম বড় দুর্বলতা ছিল শব্দগ্রহণ। প্রথম গানের বাণী কিছুই বোঝা যায়নি। গানের সাউন্ড মিক্সিংও বেশ খারাপ। ডাবিংয়েও শব্দগ্রহণের দুর্বলতা ধরা পড়েছে।
লোকেশন নির্বাচন ছিল চমৎকার। হোতাপাড়া, পুবাইল, মৌলভীবাজার, কক্সবাজারের চোখ জুড়ানো লোকেশনে ধারণ করা হয়েছে পুরো ছবি। চিত্রগ্রহণে এস এম আজহার নান্দনিক কিছু ড্রোন শট নিয়েছেন। সম্পাদনা আরো যুগোপযোগী হতে পারতো। ছবির শেষ দিকে সম্পাদক আরো কৌশলী হতে পারতেন। রং বিন্যাসে ধারাবাহিকতা ছিল না। বেশ আগে যে এ ছবির চিত্রধারণ হয়েছে, তা পর্দায়ও ধরা পড়েছে। রূপসজ্জাও যথাযথ ছিল না। শিল্প নির্দেশনায় বিশ্বাসযোগ্যতার চেষ্টা ছিল। বিশেষ করে আলোক সম্পাত প্রত্যাশা মাফিকই পেয়েছি।
তবে আশার কথা, আর দশটা দেশীয় চলচ্চিত্রের তুলনায় ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’ আমাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আসনে বসিয়ে রাখতে পেরেছে, বিনোদিত করেছে। একটা চলচ্চিত্র থেকে এর বেশি কি-ই বা চাইবার আছে? এ ধরনের চলচ্চিত্র দেখবার জন্য এতগুলো বছর কেন অপেক্ষা করতে হলো, সেটিই ভাবনার বিষয়। তাছাড়া এ ছবিটির প্রচারণার দৈন্যদশাও হতাশার উদ্রেক করে। সঠিক সময়ে সঠিক প্রচার ও প্রচারণা সহযোগে মুক্তি পেলে ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’ বড় ধরনের সাফল্য পেতে পারতো। তারপরও প্রযোজনা সংস্থা ও নতুন পরিচালককে ধন্যবাদ, যে বাজারে হতাশা ছাড়া অন্য কিছু মেলে না, সেখানে এক চিলতে হাসি, এক খন্ড বিনোদন আমাদের উপহার দেবার জন্য।