শিক্ষকতা ছেড়ে অভিনয়কে আপন করে নেন আয়েশা আখতার
অভিনেত্রী আয়েশা আখতারের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০০৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তাকে সাধারণত মমতাময়ী মায়ের চরিত্রে দেখা যেতো।
আয়েশা আখতার ১৯৩১ সালের ১ জানুয়ারী, নরসিংদী জেলার মনোহরদী থানার চকতাতারদী গ্রামে, জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৫ সালে এসএসসি পাস করে, জিটি ট্রেনিং লাভ করেন তিনি। প্রথমে ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটির কয়েকটি প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। অতিরিক্ত সচিব, সংবাদপাঠক, কবি ও লেখক আফতাব আহমদ, আয়েশা আখতারের ছেলে।
চল্লিশ দশকের শেষের দিকে মঞ্চনাটকের মাধ্যমে অভিনয়জগতে আসেন আয়েশা আখতার। বাংলাদেশের নাট্যজগতের ৫০ দশকের সুপরিচিত ও জনপ্রিয় নাট্যাভিনেত্রী ছিলেন তিনি। তখনকার সময়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, টংগী, জয়দেবপুর’সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বহু মঞ্চনাটকে অভিনয় করেছেন।
তৎকালীন পাকিস্তান আমলে, রেডিও পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্র থেকে প্রচারিত অত্যান্ত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘বুনিয়াদি গনতন্ত্রের আসর’ ( বাংলাদেশের স্বাধীনতাপর সম্ভবত নাম ছিল ‘আমার দেশ’)-এ ‘মজিদের মা’ নামে মূখ্য চরিত্রে অভিনয় করে, জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌছেছিলেন আয়েশা আখতার।
জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী পরবর্তিতে বহু চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেছন। আয়েশা আখতার অভিনীত চলচ্চিত্রসমূহ- আসিয়া, লালন ফকির, ঝড়ের পাখি, সংগ্রাম, জানোয়ার, ওয়াদা, নয়নমনি, অমর প্রেম, তুফান, অলংকার, দিন যায় কথা থাকে, জীবন নৌকা, মানসী, সওদাগর, দুই পয়সার আলতা, আলী আসমা, নতুন বউ, জাদু মহল, জীবন ধারা, মায়ের দোয়া, ভাই ভাই, সেলিম জাভেদ, রাজা সাহেব, ভাঙ্গাগড়া, স্বামীর ঘর, জবাব, চাষীর মেয়ে, সেতু, নোলক, অলংকার, অনুরাগ, মাটির ঘর, বন্দুক, ঈমান, দি ফাদার, বৌরানী, সংঘর্ষ, বাদল, সুলতানা ডাকু, সাক্ষী, জন্ম থেকে জ্বলছি, ভাঙাগড়া, স্বামীর ঘর, গাঁয়ের ছেলে, মাটির কোলে, ভাগ্যলিপি, নওজোয়ান, নবাবজাদী, শুভরাত্রি, সানাই, আশার আলো, নতুন বউ, রজনীগন্ধা, বৌমা, এই নিয়ে সংসার, নরম গরম, নদীর নাম মধুমতী, সিপাহী, ইত্যাদি ।
আয়েশা আখতার ১৯৮২ সালে ‘রজনীগন্ধা’ ছবিতে অভিনয় করে, পার্শ্ব চরিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
মঞ্চ-বেতার-চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের একজন জনপ্রিয় গুণী অভিনেত্রী ছিলেন আয়েশা আখতার। তিনি টেলিভিশনের অনেক বিজ্ঞাপনচিত্রেও কাজ করেছেন। এর মধ্যে ফিলিপস বাল্বের বিজ্ঞাপন এখনো স্মরণীয়।
লেখা ও ছবি: সাংবাদিক আজাদ আবুল কাশেমের ফেসবুক