Select Page

ইউ-টার্ন কি ঘুরে দাঁড়াবার গল্প?

ইউ-টার্ন কি ঘুরে দাঁড়াবার গল্প?

U Turnহতে পারে এটা অমুকের প্রেমের গল্প, হতে পারে এটা তমুকের পদস্খলনের গল্প, হতে পারে এটা সমুকের অস্ত্র পাচারের গল্প। এমন অনেক কিছুই হতে পারে, কিন্তু না, এটা একেবারেই ঘুরে দাঁড়াবার গল্প। বলছিলাম ইংরেজী শব্দ “ইউটার্ন” ছবির কথা। এ পর্যন্ত নাটক পরিচালনায় যিনি সফলতার সুনির্দিষ্ট প্রমান রেখেছেন সেই সুপরিচিত আলভী আহমেদ পরিচালিত পূর্ন দৈর্ঘ্য বাংলা চলচ্চিত্র ইউটার্নের শুরুটা ছিল এমনি – ছবির আধঘন্টা কেটে গিয়েছে,কিন্তু আমি ধরতেই পারছিলাম না, আসলে মূল গল্পটা কিসের?ইসরাফিল শাহিনের গ্যাং বাংলাদেশের ভেতরে সন্ত্রাসী আক্রমন করতে চায়। অন্যদিকে আরিফ হায়দারের গ্যাং চায় তা প্রতিহত করতে। ফলে শুরু হয়ে গ্যাং ওয়ার। এই ওয়ার পুরো ছবি জুড়েই চলতে থাকে, একটু পর পর ঢিসুম ঢাসুম,এই ক্ষেত্রে তাহলে বলা চলে ছবিটি একশনধর্মী। তবে তার মধ্যে ১০০ % প্রেম ঢেলে দিয়েছেন পরিচালক। আরিফ হায়দারের কন্যা মৌটুসীর সাথে ইরফানের এক অদ্ভূত প্রেম দেখানো হয়েছে, যেখানে ছবির পরিচালকের ভূমিকায় মৌটুসী কিছুতেই নায়ক ইরফানের পাশে নায়িকা চরিত্রে মেহজাবিনকে সহ্যই করতে পারছেন না পুরো ছবি জুড়েই। ইরফান সাজ্জাদ নাটকেই এসেছেন বেশি দিন হয়নি, তার উপর মোটা তাজা একজন নায়িকার পাশে থেকে এমন উদম নৃত্য-সত্যি চোখে লাগার মতোনই। একটা বাচ্চা যখন হাঁটতে শেখে,আমরা তাকে প্রথমে দৌঁড়াতে দেই। পড়ে গেলে আবার টেনে তুলি। এই করতে করতেই বছর পাঁচেক লেগে যায়, আর এখানে নায়ক ইরফান এসেই সোজা মৌটুসীর বিপরীতে যেখানে মৌটুসী একজন দক্ষ এবং বয়স্ক অভিনেত্রী। কেমিস্ট্রিটা ঠিক হজম করা গেল না। এক সময় পরিচালক গানের দৃশ্যটা পুনরায় ধারন করতে বলেন, এই ক্ষেত্রে দর্শকরাও হাত তালি দিয়ে ওঠে, কারন গানের কোন চিত্রায়নই হয়নি। বোঝাই যাচ্ছিল-পুরো দৃশ্যটা একে বারেই কোন রকম ভাবে শেষ করা হয়েছে।

আরিফ হায়দারের চরিত্রে সেলিম ভাইয়ের পোষাক দেখে আমি খানিকটা ভড়কে গেলাম-আবার চোরা বালি দেখতে চলে আসি নাইতো? না, তার কন্ঠস্বরের ভিন্নতা প্রমান করে দিল – তিনি আসলেই ভার্সাটাইল অভিনেতা। একিরকম পোষাকের আবর্তে থেকেও ভিন্ন দুটি চরিত্রে নিজেকে উপস্থাপন যে সে কথা না। এই ব্যাপারে কিন্তু মিশা সওদাগর আরো কয়েক ডিগ্রী এগিয়ে। জীবনেতো নেগেটিভ ক্যারেক্টার অনেক করলেন, কিন্তু একটার পর আরো একটা ছাপিয়ে গেল। কোনকালেই দর্শকের কাছে তিনি এক ঘেঁয়ে হননি। একেই বলে জাত অভিনেতা। মূলত এই দুইজন অভিনেতাই শুরু থেকে শেষ অব্দি ছবিটাকে টেনে নিয়ে গেছেন। এখানে নাটকের কিছু নতুন অভিনেতাকে দেখা গেছে যাদের নাম পত্রিকাতে আসেনি, কিন্তু তারা দূর্দান্ত অভিনয় করেছেন।

ছবির কাহিনী নিয়ে এমন কিছু বলার নাই, কারন এখানে একি বিষয় ঘুরে ফিরে এসেছে। অনেকটা গরুর জাবর কাটার মতোন অবস্থা। সব চেয়ে দৃষ্টিকটু লেগেছে ছবির প্রযোজক আরশাদ আদনানের উপস্থিতি, এমন বিশাল আকৃতির ভুড়ি নিয়ে কিভাবে বাচ্চা একটা মেয়ে আইরিনের বিপরীতে কাস্ট করা হলো তা কেবল পরিচালক বলতে পারবেন। ছবিতে টাকা ঢাললেই কি যাকে যে চরিত্রে যায় না তাকে দিয়েই তা করাতে হবে? দর্শক তাহলে কি ?পরিচালক যা খাওয়াবে তাই খেতে বাধ্য আমরা? এক্ষত্রে অবশ্য তারা বলতেই পারেন-ভালো না লাগলে হলে যাইয়েন না, তাহলে এতো টাকা দিয়ে ছবি বানানো হচ্ছে কাদের জন্যে?

uturn

আইরিন যতোবার ক্যামেরার সামনে এসেছে তার দুটো ফর্সা পা থেকে শ্যুট করা হয়েছে। একসময় সে বসের মুখের সামনে উল্টায় পড়ে গেলো,বুকের ভাঁজ থেকে শুরু করে একদম অন্তর্বাস কিছুই চোখের আড়াল হলো না দর্শকের?কিন্তু কেন এই অযাচিত সুড়সুড়ি?

বিখ্যাত লোকের চ্যানেল মালিক ছেলে দেনার দায়ে ডুবে প্রেমে সাঁতার কাটছেন একজন হাটুর বয়সী পি এসের সাথে। যেই পি এসের গায়ের কাপড় থাকে কোমরের উপর। দেশের কোন চ্যানেলে এমন এক্সিকিউটিভ আছে তা আজো আমার জানা হয় নাই। আইরিন যতোবার ক্যামেরার সামনে এসেছে তার দুটো ফর্সা পা থেকে শ্যুট করা হয়েছে। একসময় সে বসের মুখের সামনে উল্টায় পড়ে গেলো,বুকের ভাঁজ থেকে শুরু করে একদম অন্তর্বাস কিছুই চোখের আড়াল হলো না দর্শকের?কিন্তু কেন এই অযাচিত সুড়সুড়ি?এই সুড়সুড়িতো পরিচালকের আইটেম গানে দেখানো দরকার ছিল। আইটেম গানে দর্শকের মনে নাড়া দেওয়া খুবি জরুরী, কিন্তু মিশা সওদাগর ছাড়া আর একটা মানুষো আইটেম গার্লের সাথে দুলে উঠলো না-এ আমার চরম হতাশা।তাহলে কেন এই আইটেম সং? পুরো ছবিতে ইউটার্ন না পেলেও শেষ দিকে আনুশকা চরিত্রের ইউটার্ন কিন্তু ভালোই ছিল।

ছবির কোন চরিত্রের কোন বেজমেন্ট আমি খুঁজে পাই নি। বর্ষা চরিত্রে সোনিয়া অসাধারন অভিনয় করেছে যদিও সে কোথা থেকে এলো, শিপনের সাথে বন্ধুত্ব কিভাবে তা পরিষ্কার না। কেবল মর্গে তার লাশ ধরে মাকে কাঁদতে দেখলাম-এ পর্যন্তই। আগাগোড়া তার মজার মজার সংলাপ দর্শকদের আনন্দ দিচ্ছিল। একদিকে সে সেলিমের মন্দ কাজকে মেনেও নিচ্ছিল আবার চট্রগ্রাম যাবার পর তাকে তার কাজ করতে বাঁধাও দিচ্ছিল। এমনি বুঝি হয় প্রেমিকারা। যাই হোক, সেলিম চরিত্রে শিপনের হাত কেঁটে যাবার পর ব্যান্ডেজটা সঠিক জায়গায় দিলে মনে হয় আরো বিশ্বাসযোগ্য হতো।
তবে এবার শিপন আমাদের আশহত করেনি। ভারত থেকে ছেলেটা ভালোই শিখে পড়ে এসেছে। দেশা দ্যা লীডারের মতোন হতাশ সে আমাদের করেনি, তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এ জন্য। আলভী ভাই তার কন্ঠে শতাব্দী ওয়াদুদের কন্ঠ বসিয়ে চমৎকার একটা কাজ করেছেন (এটা আমার প্রেডিকশন, ভুলও হতে পারে)।

একটা পূর্নদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে গান হতে পারে দর্শক ধরে রাখার অন্যতম মাধ্যম, কিন্তু এতো ভালো ভালো গীতিকার থাকা স্বত্তেও কোন গানই মনে রাখার মতোন ছিল না। “ছুঁয়ে দিলে মন”-ছবি রিলিজ পাওয়ার আগেই কিন্তু গানটা ইউটিউবে সর্বাধিক রেটিঙ্গে চলে গেছিল, এমন কোন আভাস এই ছবিতে পেলাম না। কোরিওগ্রাফির মধ্যেও এমন কোন কারিশমা ছিল না যা মনে গেঁথে রাখার মতোন।মনে হলো ফাইনাল পরীক্ষায় যেমন তিন ঘন্টার জন্য উত্তর মুখস্থ রাখলেই চলে, তারপরে ভুলে গেলে কোন সমস্যা নাই। এই ছবিতেও তাই –শেষের দৃশ্য দেখলে আগের দৃশ্য মনে থাকে না। তার মানে মনে রাখার কোন প্রয়োজনই নাই। একজনতো বলেই ফেললো-আলভী আহমেদের কাছে মসলা পাতি সবি ছিল, কিন্তু সময় মতো ঢালতে ভুলে গেছেন।

সে যাই হোক। সকল পরিচালকদের উদ্দেশ্যে আমার একটাই রিকুয়েস্ট-আমরা যারা নিয়মিত রীতিমতোন টিকেট কেটে ছবি দেখতে হলে যাই তারা এক বুক আশা নিয়েই যাই। জানি সব দর্শককে এক সাথে খুশি করা কখনোই সম্ভব না। কিন্তু ব্যক্তিগত সম্পর্ককে মর্যাদা দিতে গিয়ে নিজের মেধার এমন অবমূল্যায়ন কখনোই আমরা আশা করিনা।

আমি জানি এবং প্রমানিত সত্য যে আলভী আহমেদ একজন মেধাবী নির্মাতা। তিনি বলেও দিলেন ইউটার্ন নিয়ে দ্বিতীয়বার আসছেন-আর সেই আসাটা যেন আসলেই সত্যিকার অর্থেই ঘুরে দাঁড়াবার গল্পই হয় সেই প্রত্যাশাই করে যাব। সবাইকে হলে গিয়ে ছবিটি দেখার অনুরোধ রইলো, তা না হলে আমি যে এতো কথা লিখলাম তার কোন মানেই আর থাকলো না। ধন্যবাদ।


৬ Comments

  1. Rodela Nila

    ধন্যবাদ এডমিন,আমার লেখায় কোন রকম ছুড়ি কাঁচি না ধরে পুরোটা প্রকাশের জন্যে আপনাকে সাধুবাদ জানাই।সাথে প্রয়োজনীয় ছবি সংযোজন আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছে।এমন হলে ছবির সমালোচনায় আমি পুরদস্তর এগিয়ে যাব।শুভেচ্ছা সবাইকে।

    • Rodela Nila

      ধন্যবাদ,আশা করছি ছবিটা দেখে থাকবেন।

  2. Muhammad Saiful Islam

    দেখে আসলাম “ইউ টার্ন”।

    আরশাদ আদনান প্রযোজিত এবং আলভী আহমেদের চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় “ইউ টার্ন” ভার্সেটাইল মিডিয়ার প্রথম চলচ্চিত্র। ২৯ মে ঢাকাসহ সারাদেশে প্রায় ৮০ টি হলে একযোগে মুক্তি পেয়েছে এই একশন থ্রিলার জনরার সিনেমাটি।

    চমৎকার প্রচেষ্টা ছিল, তবে একসাথে বিশাল ক্যানভাসে বিশাল গল্প ছোট্ট পরিসরে দেখাতে গিয়ে ব্যপক গন্ডোগোল দেখা যাচ্ছিলো। মাঝপথেই বেশ কিছু যায়গায় সংলাপ কেটে দেয়া হয়েছে এটা যেমন বোঝা যাচ্ছিলো তেমনি বোঝা যাচ্ছিলো নায়ক হিসেবে শিপনের শুধু হিরোইক লুকসটাই রয়েছে, অভিনয়টা অন্তত শেখা উচিত (আমার জানা মতে তিনি অভিনয়ের উপর কোর্সও নাকি করেছেন, ফলাফলটা কি পেলাম তা দেখেই বলছি)”। প্রযোজক আরশাদ আদনান নতুন হিসেবে পার্শ্বনায়ক চরিত্রে ভালো করেছেন। প্রচেষ্টা দেখা গিয়েছে অন্য সবার মাঝেও। আইরিনকে বেশ ছটফটে চঞ্চল মনে হয়েছে এবং সোনিয়াও ভালো করেছে প্রথমবারের মত বড়পর্দাতে।

    সিনেমার মূল গল্প আরিফ হায়দারের মানি লন্ডারিং এর অবৈধ ব্যবসাতে ইশরাফিল শাহীন যুক্ত হতে চাইয়া নিয়ে। তাদের মতভেদ নিয়ে যখন প্রচন্ড অপমানিত হয় শাহীন, তখন সে প্রতিশোধ নেবার খেলায় মেতে উঠে। আর সেই প্রতিশোধের পালটা জবাব দিতে আরিফ হায়দারের ডান হাত সেলিম রুখে দাঁড়ায়। এর সাথে যুক্ত হয় আরিফ হায়দারের ছেলের চ্যানেলের ব্যবসায় লোকসান, মেয়ে তমার চলচ্চিত্র প্রযোজনায় এসে নায়কের প্রতি প্রেম এবং যৌনতা।

    আরিফ হায়দার নিজে যদিও আন্ডারগ্রাউন্ডের সাথে জড়িত তথাপি তার নিজের কাজ করার কিছু বিশেষ পদ্ধতি আছে। তিনি ড্রাগসের ব্যবসাকে কখনোই সমর্থন করেন না। আবার তার নেগেটিভ চরিত্রে কিছু পজেটিভ দিকও দেখা যায়, যেমন এতিমখানা চালানো অথবা মৃত স্ত্রীর স্মরণে নিজেকে নিবেদিত করা।

    সেলিম গল্পের প্রধান চরিত্র হলেও প্রধানত সে আরিফ হায়দারের ডান হাত এবং একজন খুনী। আন্ডারগ্রাউন্ডের নিজেদের কাজ সঠিকভাবে চালনা করতে সে যে কোন কিছু করতে বদ্ধ পরিকর, নিজের কাছের কাউকে আহত করতেও তার বাঁধে না।

    বর্ষা সেলিমের বান্ধবী। মারাত্মক প্রাণচঞ্চল এবং ছটফটে এই মেয়েটা সেলিমকে নিজের সবচেয়ে আপন বলেই বিশ্বাস করে। সেলিমকে পাবার জন্য ব্রিজ থেকে ঝাঁপিয়ে পড়তেও তার আপত্তি নেই।

    আলভী আহমেদ ছোট পর্দার অত্যন্ত মেধাবী এবং প্রতিভাবান পরিচালক, তার কাজের ব্যপারে বলার কোন প্রয়োজন নেই, বড় পর্দায় প্রথম কাজ হিসেবে গ্যাংস্টার গল্প বেছে নেয়াটা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের ব্যপার ছিলো। এক নজরে সিনেমাটির পজেটিভ এবং নেগেটিভ দিকগুলো আমার দৃষ্টিতে…..

    নেগেটিভ দিক :

    ১। শিপন।

    দুঃখিত, তবে কোনভাবেই সেলিম চরিত্রে শিপনকে আমি মেনে নিতে পারছি না। সে বর্তমান সময়ের অন্য নায়কদের তুলনায় অনেক বেশি আকর্ষণীয় স্বীকার করছি। তবে তার চরিত্রে যে ধরণের অভিনয় দরকার ছিলো তার কিছুই পাইনি বলতে বাধ্য হচ্ছি। একদম দুঃখজনক, একেবারেই দুঃখের ভান্ডার। এব্যপারে কিছুই বলার পাচ্ছি না।

    ২। ক্লিভেজ।

    বেশ কয়েকবার নায়িকাদের বুকের উপরের অংশ ক্যামেরাতে ক্লোজ দৃশ্যে প্রদর্শণ করে তাদের যৌনাবেদনময়ী করার খুব নোংরা একটা প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা গেছে। আইরিনের প্রথম দৃশ্যটা নিশ্চিতভাবেই অন্যভাবে শ্যুট করা সম্ভব ছিলো। আর সেই দৃশ্যে আইরিনের ক্লিভেজ দেখানো গল্পের প্রয়োজনে জরুরী হলে বলতে হবে বারবার সেটা দেখিয়ে দর্শককে বিকৃত একটি আনন্দ দেয়া ছাড়া আর কিছুই না। ব্যপারটি প্রসূন আজাদের ক্লিভেজ প্রদর্শনের ক্ষেত্রেও একি বক্তব্য প্রযোজ্য হবে।

    ৩। সেলিম এবং তার প্রেমিকা বর্ষার রিলেশন বিল্ড আপ কিছুটা অস্বস্থিদায়ক ছিল। তাদের একি হোটেলে একি রুম ভাড়া করে অবস্থান বিষয়টাকে আমাদের সংস্কৃতির সাথে কতোটা যাচ্ছে এইটা অবশ্য আরেকটা ফ্যাক্ট ছিলো।

    ৪। ইরফান সাজ্জাদ।

    বেচারা যদিও খুব একটা সুযোগ পায়নি নিজেকে প্রমাণ করার তবে তাকে আরো অনেক অনেক বেশি চেষ্টা করতে হবে।

    পজেটিভ দিক :

    ১। গল্প।

    বেশ ইন্টারেস্টিংভাবে বাংলা চলচ্চিত্রে নতুন গল্প এসেছে। একশন থ্রিলার এবং প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে আলভী আহমেদ উৎরে গেছেন বলেই বিশ্বাস করছি। তবে আমার বারবার মনে হচ্ছিলো আমরা যে আলভী আহমেদকে চিনি তিনি এই গল্পটাকে আরেকটু বেশি ভালোভাবে প্রেজেন্ট করতে পারতেন।

    ২। সিনেমাটোগ্রাফি।

    যদিও কয়েকটা আনব্যালান্সড শট ছিলো তথাপি গতানুগতিক ধারার চাইতে অনেক অনেক বেশি ভালো সিনেমাটগ্রাফি হয়েছে। শহীদুল্লাহ শোভনকে ধন্যবাদ চমৎকার ফ্রেমিং এর জন্য।

    ৩। শহীদুজ্জামান সেলিম।

    আরিফ হায়দার চরিত্রে অসম্ভব দারুন অভিনয় করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, উনি ছিলেন চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রধান শক্তি। তবে বারবার মনে হচ্ছিলো “চোরাবালি” চলচ্চিত্রের কোন অংশ থেকে তিনি যেন আমাদের সামনে হাজির হয়েছেন, একই ধরণের চরিত্র এবং বাচনভঙ্গির জন্য এমনটা মনে হচ্ছিলো।

    ৪। মিশা সওদাগর।

    ভয়ংকর এক খলনায়ক ইশরাফিল শাহীন চরিত্রে অভিনয় করে সে সবাইকে আবারো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। মানতেই হবে আমাদের বাংলা চলচ্চিত্রে তিনি এক বিশাল প্রাপ্তি। হুমায়ন ফরীদি, রাজীব এর পর যে শূণ্যতা তৈরী হবার সম্ভাবনা ছিলো খলনায়ক চরিত্রে তা তিনি হতে দেন নাই।

    ৫। গানের চিত্রায়ন।

    আইটেম গান বাদে অন্য গানগুলোর চিত্রায়ন ছিলো বেশ দুর্দান্ত।

    ৬। গান।

    হ্যা, গানগুলো ছিলো অসাধারণ, অদিত, ফুয়াদ বাজিমাত করেছে বলতেই হবে।

    এছাড়া সোনিয়া তার যোগ্যতা অনুযায়ী অভিনয় করেছেন, আইরিন স্বতঃস্ফূর্ত ছিলেন, আরশাদ আদনান প্রতিশ্রুতিশীল, মৌটুশী বিশ্বাস নিজেকে একদম গল্পের ভিতরে নিয়ে গিয়েছিলেন আমার মনে হয়েছিল, তাকে নিয়ে অনেক বেশি ভাববার সময় এসেছে, আমার বিশ্বাস সে সুযোগ পেলে সবাইকে তাক লাগিয়ে ছাড়বেন, এছাড়া বাদ বাকি সবাই ভালো করেছেন, অন্তত চেষ্টা ছিলো সবারই। বিশেষ করে আরেকজনের কথা বলতে পারি, মিশা সওদাগরের আস্তানাতে একজন ভিলেনকে দেখা যাচ্ছিলো সবসময় মানে একদম প্রায় সবসময়ই চোখের পাতা না ফেলে দাঁড়িয়ে থাকতে, এমনকি যখন মিশা গ্লাস ছুড়ে একটা পেইন্টিং এর কাঁচ ভেঙ্গে ফেলেন তখনও সে ছিলো নির্বিকার। ইন্টারেস্টিং চরিত্র, আমার মনে হয়েছিলো শেষে তাকে দিয়ে কোন একটা টুইস্ট রিভিল করা হতে পারে।

    • Muhammad Saiful Islam

      দেখে এসে ফেসবুকের একটা গ্রুপে পোস্ট লিখেছিলাম, মনে হলো এখানেও মন্তব্য করা যেতে পারে 🙂

    • অ্যাডমিন

      এ ধরনের বড় মন্তব্য করার চেয়ে ব্লগ লেখা বেটার। সিনেমার পাতায় একাধিক মন্তব্য পড়ায় এ ধরনের বিশ্লেষনাত্মক মন্তব্য হারিয়ে যেতে পারে, কিন্তু ব্লগ হিসেবে প্রকাশ করলে সে সম্ভাবনা অপেক্ষাকৃত কম। আপনার কাছ থেকে আরও লেখা আশা করছি। ধন্যবাদ।

Leave a reply