একই দিনে মুক্তিতে শামিল কলকাতা, আসবে মোশাররফ করিমের ‘হুব্বা’
প্রথমবারের মতো বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশে একইদিনে মুক্তি পেয়েছিল ভারতীয় সিনেমা ‘জাওয়ান’। এবার নাকি সেই পথ ধরছে কলকাতায় মোশাররফ করিম অভিনীত ‘হুব্বা’। এছাড়া ‘কুরবান’ নামের আরেকটি ছবিরও কথা শোনা যাচ্ছে। দুটো ছবিই ভারতে মুক্তি পবে ২৪ নভেম্বর।
ব্রাত্য বসুর ‘হুব্বা’র টিজারে দেখা মিলেছে অন্য এক মোশাররফ করিমের। কখনো তিনি দলবল নিয়ে বন্দুক হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, কখনো রাতের আঁধারে এক নারীর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন, কখনো বা অপরাধ জগতের কাজকর্ম সামলাচ্ছেন। রোমাঞ্চে ভরপুর এই ঝলক প্রশংসা কুড়িয়েছে দর্শকদের। এতে মোশাররফ ছাড়াও অভিনয়ে আছেন পশ্চিমবঙ্গের পৌলমী বসু, লোকনাথ দেসহ অনেকে। হুগলির দাউদ ইব্রাহিম খ্যাত গ্যাংস্টার হুব্বা শ্যামলের জীবনের ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে ‘হুব্বা’।
অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের এক মুসলিম দম্পতি হাসান ও হিজলের কাহিনি নিয়ে শৈবাল মুখার্জির ‘কুরবান’।
কিবরিয়া ফিল্মসের কর্ণধার কামাল মোহাম্মদ কিবরিয়া লিপু বাংলাদেশে ‘হুব্বা’ আমদানি করবেন। অন্যদিকে কলকাতায় এক সংবাদ সম্মেলনে অঙ্কুশ হাজরা জানান, ‘কুরবান’ ছবিটি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশেও মুক্তি পাবে।
‘হুব্বা’ আমদানির বিষয়ে এরই মধ্যে ছবিটির প্রযোজক ফেরদৌসুল হাসানের সঙ্গে কথাবার্তা চূড়ান্ত করেছেন লিপু। প্রযোজক সমিতিতেও ছবিটি মুক্তি দেওয়ার ব্যাপারে জানিয়ে রেখেছেন।
লিপু বলেন, “আমাদের এখানে একই দিনে ছবি মুক্তি দেওয়াটা অনেক কঠিন হয়ে যায়। ডেট পাওয়াটা যেন সোনার হরিণ। অনেক সময় দেখা যায়, বিদেশি ছবি মুক্তি পাবে জানার পর হঠাৎ একটা নামকাওয়াস্তে দেশি ছবি ডেট নিয়ে নেয়। মুক্তির ক্ষেত্রে আমদানি করা ছবির চেয়ে দেশি ছবির প্রাধান্য বেশি থাকে। ফলে আমাদের পিছিয়ে যেতে হয়। তখন বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। এর আগে আমি সালমান খান অভিনীত ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’ একই দিনে মুক্তি দিতে চেয়েও পারিনি। পরে মুক্তি পাওয়ার কারণে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তাই ‘হুব্বা’র ক্ষেত্রে সেটা যেন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে চাই। এমনিতে মোশাররফ করিম বাংলাদেশের অভিনেতা। তাঁর জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। যদি একই দিনে ছবিটি মুক্তি দিতে পারি তাহলে ভালো ব্যবসা করবে।”
ছবিটি আমদানি করা হবে সাফটা চুক্তির আওতায়। লিপু আরো বলেন, “আমি নিয়ম মেনেই ছবি আমদানি করি। এবারও ব্যতিক্রম হবে না। ‘হুব্বা’র বিপরীতে অবশ্যই একটা ভালো বাংলাদেশি ছবি রপ্তানি করব। অনেকে মানহীন ছবির বিনিময়ে ভারত থেকে বড় ছবি আমদানির অভিযোগ তোলে। আমি সেই অভিযোগ তোলার সুযোগ দেব না।”
দেশে মুক্তির বিষয়ে মোশাররফ করিম বলেন, “খবরটা সত্যি হলে আমার জন্য আনন্দের হবে। এর আগে যখন ‘ডিকশনারি’ পশ্চিমবঙ্গে মুক্তি পায় তখন দেশের অনেকেই বলেছিলেন যেন বাংলাদেশেও এটি মুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। এবার হলে তো আমার জন্য আনন্দের হবে।”
এদিকে ‘কুরবান’-এর অভিনেতা অঙ্কুশ বলেন, “অনেক বছর পর আবার বাংলাদেশে যাব। গিয়ে যদি আমরা ছবিটি প্রমোট করতে পারি তাহলে ভালো হবে। বাংলাদেশের এত মানুষ আমাকে ভালোবাসে, বাংলা ছবি ভালোবাসে, আমাদের ভালোবাসে, তাদের কাছে যখন বাংলা ছবি পৌঁছায় না তখন কষ্ট হয় আমার। আমি ওদের ছবির কথাও বলছি। মাঝখানে ‘হাওয়া’ ও ‘সুড়ঙ্গ’ রিলিজ করল এখানে, আমি খুব খুশি। এটাই তো চাই। বাংলাদেশে যাওয়ার বিষয়ে পরিকল্পনা করছে পিআর টিম। আমিও যাচ্ছি। আমার মনে হয়, ‘রোমিও ভার্সেস জুলিয়েট’-এর শুটিং করেছিলাম ওখানে। এরপর আর বাংলাদেশে যাইনি।”
তবে ছবিটি বাংলাদেশে কারা আমদানি করছে সে বিষয়ে অঙ্কুশ কিছু জানাননি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতিতে খোঁজ নিয়েও দেখা গেছে, ‘কুরবান’-এর জন্য এখনো কেউ মুক্তির তারিখ চেয়ে আবেদন করেনি। তবে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ছবিটির প্রযোজক তপন কুমার মিত্র বাংলাদেশে মুক্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন।
পশ্চিমবঙ্গে মোশাররফ করিমের দ্বিতীয় ছবি ‘হুব্বা’। এর আগে তিনি ব্রাত্য বসুর ‘ডিকশনারি’তে অভিনয় করেছিলেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনার বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছেন ওপারের অঙ্কুশ। ‘আমি শুধু চেয়েছি তোমায়’, ‘রোমিও ভার্সেস জুলিয়েট’, ‘আশিকী’—ছবিগুলো ব্যাবসায়িকভাবেও সফল। খবর কালের কণ্ঠ।