Select Page

একটু ধৈর্য ধরলেই উপভোগ্য ‘মিশন এক্সট্রিম’

একটু ধৈর্য ধরলেই উপভোগ্য ‘মিশন এক্সট্রিম’

মিশন এক্সট্রিম- The War is not Over! প্রথম অংশ নিজ গুণে একটু ধৈর্য ধরে দেখলে পরের অংশে খুবই উপভোগ্য সিনেমা।

দেশজুড়ে বেড়েছে জঙ্গিদের হামলা। চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্ত এলাকার একজন শিক্ষক যেমন তাদের হাতে খুন হন তেমনি ঢাকা শহরের একজন বুদ্ধিজীবীও। জঙ্গিদের হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে আর তাদের ধরার অভিযান নিয়েই মিশন এক্সট্রিমের গল্প।

এই অভিযানে প্রধান ভূমিকায় আছে অতিরিক্ত পুলিশ অফিসার নাভিদ, সঙ্গে ইরা ও শহীদ মোট তিনজন। আছেন চৌকস কিন্তু নিজের বদভ্যাসের জন্য বাদ পড়া এক পুলিশ অফিসার। গল্পের আবহে অনেকগুলো জঙ্গির চরিত্র, নাভিদের প্রেমিকা, ইরার জীবনে জটিলতাসহ আরও কিছু!

প্রথম অংশ সময় নিয়েছে চরিত্রগুলো সাজানোর জন্য। কিন্তু চরিত্র এত বেশি এবং কিছুটা চিত্রনাট্যের দোষে গল্পটাই জমে উঠতে ব্যাঘাত ঘটায়। যার কারণে মনোযোগ হারাতে পারে, তবে আসল আকর্ষণটা দ্বিতীয় অংশে। এখানে পুরো অংশটাই জমজমাট। জঙ্গিদের পরিকল্পনা, সেইগুলা পুলিশের অভিযান বেশির ভাগ সময়ই উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। এটা বেশ ভালো দিক।

খুবই ভালো লেগেছে শেষের অংশের কিছুক্ষণ আগের অংশটুকু, ওখানেই শেষ হয়ে গেলে ব্যক্তিগত ভাবে আরও ভালো লাগতো। তবে এখনো মন্দ নয়!

অভিনয়শিল্পীদের প্রসঙ্গ উঠলেই সবার আগে বলতে হবে আরিফিন শুভর কথা। পুরো সিনেমা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি বেশ তৃপ্তি দিয়েছে। আলাদা করে বলব, ইরার চরিত্রে সাদিয়া নাবিলার কথা। শাবানা, দিতিদের পর অনেক বছর বাদে আমাদের দেশের সিনেমায় বলার মতো এমন একটি নারী পুলিশ অফিসার চরিত্র পেয়েছে। জঙ্গির চরিত্রে আলো কেড়েছেন সুদীপ ও জিসান। যদিও সুদীপের চরিত্রটা শেষের দিকে আর পাওয়া যায়নি। জিসান অল্পক্ষণেই আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছে। শহীদের চরিত্রে সুমিতের চরিত্রটি গুরুত্ব পেয়েছে, এক্সপ্রেশনেও বেশ৷ তবে ডাবিংটা যথাযথ লাগেনি। শতাব্দী ওয়াদুদ বরাবরের মতোই।

অনেকেই তাসকিন রহমানের চরিত্রে চমক চেয়েছিলেন। এইখানে ব্যর্থ, তাকে ঘিরে হাততালি পাওয়ার মতো কোন কিছু ঘটেনি। হতাশ হয়েছি মনোজ প্রামাণিকের উপস্থিতিতে, তিনি কেন এই ছবিটা করলেন তা প্রশ্ন ওঠার মতো, বরং তার সঙ্গী নবাগত সৈয়দ নাজমুস সাকিব আলো ছড়িয়েছেন। এ ছাড়া পুরো ছবি জুড়েই ছিল পরিচিতি অভিনয়শিল্পীদের। যেটা দেখে খুশি হলেও গল্পে ছাপ পড়েনি, যা আশায় ছেদ ঘটায়। অনেকেই ভালো ব্যবহার করা যায়নি, যেমন; ফজলুর রহমান বাবুর কথাই ধরা যাক। তিনি কেন এই ছবিতে, পরিষ্কার নয়। হয়তো দ্বিতীয় কিস্তিতে পাওয়া যাবে। ইরেশ যাকের, রাশেদ মামুন অপু, আহসানুল হক মিনুরা একটু হলেও জমিয়েছেন, আবার আরেফ সৈয়দ, শহীদুজ্জামান সেলিমরা কেন এলেন পর্দায় তা একেবারেই বোধগম্য হলো না, মাজনুন মিজানকেও ঠিকমতো পাওয়া যায়নি। বেশি বাজেটের ছবি বলেই হয়তো তারকা নিতে কার্পণ্য করেননি।

ঐশীর প্রথম ছবি, দেখতে তিনি খুবই সুন্দরী। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিংবদন্তি তারকা দম্পতি সৈয়দ হাসান ইমাম-লায়লা হাসান আছেন, রাইসুল ইসলাম আসাদ আছেন কিছু সময়ের জন্য। দীপু ইমাম কমিকের কাজ ভালো করেছেন, তবে তার পরিণতি আগেই বোঝা গিয়েছিল।

গানগুলোর ছাপ পড়েনি ছবিতে, যেটা দুর্বলতম দিক। আবহসংগীত চমৎকার, চিত্রগ্রাহক নিজের কাজটা ভালোভাবে করেছিলেন, তবে গোল পাকিয়েছেন সম্পাদক মো. কালাম। পুরো ছবিতে একাধিক সংলাপ মনে গেঁথেছে। চিত্রনাট্যের গাঁথুনি আর নির্মাতার আরও দক্ষতা পেলে এই ছবিটা আরও পূর্ণতা পেত। পরিচালক হিসেবে এই ছবিতে অভিষেক ঘটেছে দুই নির্মাতা সানী সানোয়ার ও ফয়সাল আহমেদ।

দ্বিতীয় পর্বের জন্য আগ্রহে আছি, এখন ঈদ পর্যন্ত অপেক্ষা।


Leave a reply