Select Page

মিশন এক্সট্রিম: অনেক সত্য এবং কিছু অবাস্তবতা

মিশন এক্সট্রিম: অনেক সত্য এবং কিছু অবাস্তবতা

যাহা পাইলাম:

১. বাংলাদেশে এর চেয়ে বড় ক্যানভাসে কোন সিনেমা হয়েছে কি-না জানা নেই।

২. এই সময়ের জঙ্গীবাদের ধরণ এবং মগজধোলাইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো খুব স্পষ্টভাবে ওঠে এসেছে। এখানে স্মার্টনেস হচ্ছে খুব ছোট দৃশ্য কিন্তু সব ফকফকা।

৩. ছোট ছোট চরিত্রের জন্য গ্যাটিস না নিয়ে, পারফরমার আর্টিস্ট দিয়ে অভিনয় করানোয় পর্দা জমেছিল।

৪. অনেক অনেক দৃশ্য। যা খুব পজিটিভলি প্রশংসনীয়।

৫. ক্যামেরা, মিউজিক, এডিটিং সোনায় সোহাগা। ক্যামেরার কারুকাজ আর এডিটিংয়ের ম্যাচকাট তৃপ্ত করেছে।

৬. স্ক্রীনে সবার পারফরমেন্স ভালো ছিল।

৭. শুভ-ঐশী কেমন লাগবে তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলাম। একদম নতুন হিসেবেই বা কেমন করবে! ঐশী জিতে গেল।

যাহা চিন্তার বিষয়:

১. পুলিশের বিভিন্ন সংস্থার নিজস্ব পোশাক আছে। সেক্ষেত্রে বুলেটপ্রুভ জ্যাকেটে একবার HRT আরেকবার CTTC দেখলাম। এটা কি স্বাভাবিক নাকি ভুল জানা নেই।

২. ভয়াবহ জঙ্গী ধরতে পুরো বাহিনী হেলমেট ছাড়া বারবার অপারেশনে যায়। হেলমেট ছাড়া এমন অপারেশনের জন্য কি জবাবদিহিতা নেই?

৩. যত বড় বিষ্ফোরণ দেখানো হয়েছে কয়েকবার, তাতে বিশাল ক্ষয়ক্ষতি হবার কথা। অথচ একজন পুলিশ কর্তার মৃত্যু ছাড়া আর কিছুই হলো না।

৪. খুব তাড়াহুড়া যেন। অপারেশনগুলো দর্শককে মনস্তাত্ত্বিকভাবে চিন্তায় ফেলার আগেই শেষ হয়ে গেল প্রত্যেকবার। এ জাতীয় সিনেমার প্রধান অস্ত্র হচ্ছে টেনশন। সেই টেনশনটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিল। কিন্তু সেটা যেন বারবারই ম্যাচিউর হবার আগেই লক্ষ্যচ্যুত হলো।

৫. ইমোশন নেই।

৬. একটুখানি অরিজিৎ আর একটুখানি শাকিব খান মিলিয়ে কলকাতার ফ্লেভারে দুবাইতে গান। একটা গানও মনে রাখার মতো না।

৭. ছোট্ট সময়ের জন্য ভিলেনের ডেরায় একটা গান ছিল, তাতে হলের দর্শকদের যে চিৎকারটা উঠেছিল তাতে একটা কথা পরিস্কার যে, ‘পান্থপথের মোড়ে’ গানটা সিনেমায় থাকা জরুরি ছিল বাংলাদেশি সিনেমার আসল দর্শকদের জন্য।

এবার কিছু কথা:

সিনেমাটা ঘিরে আগ্রহ ছিল। দেখলাম। মোটামুটি ভালো লেগেছে নতুনত্বের জন্য। আশা করছি নবীন পরিচালকদ্বয় আগামীতে আরো ভালো করবেন। পুলিশের বানানো সিনেমা না হয়ে, অন্য কারো বানানো সিনেমা হলে সেন্সরবোর্ড ত্যান প্যাচাতে প্যাচাতে সিনেমাটির বারোটা বাজিয়ে ছাড়তো। হয়ত নিষিদ্ধও হতো।

সিনেমাটা না দেখেই অনেকে বিদ্রূপ করে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছে। সেটা সিনেমাটা দেখার পর বুঝতে পারলাম। সিনেমাটা নিয়ে ভালো লাগা/মন্দ লাগা থাকতে পারে। কিন্তু বিদ্রুপ করার সুযোগ নেই। তবু ৩ শ্রেণীর লোকজন বিদ্রুপ করবে। ১. জঙ্গীবাদ বিরোধী সিনেমা হওয়ায় যাদের কলিজায় আঘাত লেগেছে তাদের ২. বিশেষ নায়কের ভক্ত, যারা অন্যদের সিনেমা দেখে বা দেখে না, কিন্তু অপরের সিনেমাকে টেনে মাটিতে নামানোর পবিত্র দায়িত্ব পালন করে নিয়মিত ৩. সিনেমা এলেই যারা বখরা পাওয়ার দাবীদার কিন্তু কোন কারণে পায়নি তারা। এর বাইরে একটা বোনাস শ্রেণী আছে যারা বিদ্রূপ করতে পারে এবং তাদের করা উচিতও। আরিফিন শুভ ইদানিংকালে আফরান নিশোর মতো বাজে বকা শুরু করেছে। ফলে অসভ্যের পাশপাশি সভ্য লোকেরাও বিরক্ত হয়ে উঠতে পারে।

মিশন এক্সট্রিম’ এর পরবর্তী পর্ব দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

জয় হোক বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের।

টিকিট কেটে সিনেমা দেখুন। অধিকার নিয়ে তালি কিংবা গালি দিন।


মন্তব্য করুন