কম বাজেটে বেশি ‘সাহস’
কম বাজেট তবে বেশি ‘সাহস’! সিনেমার প্রথম কয়েক মিনিট দেখলেই বুঝে যাবেন কেন সেন্সর বোর্ড এটাকে কাটছাঁট করেছে। একটা এলাকার গ্যাং ও তাদের সাঙ্গোপাঙ্গরা অবশ্যই সুশীল সমাজের মন যুগিয়ে ভদ্রভাষায় কথা বলবে না। সাজ্জাদ খান সেটি বলাতেও চাননি, সেদিক থেকে সিনেমার নাম ঠিক আছে।
গল্পটা শুরু হয় মাঝামাঝি একটা জায়গায়। নাজিয়া হক অর্ষা ও মোস্তাফিজুর নূর ইমরান যথাক্রমে নীলা আর রায়হানের রোল করেছেন। দুজনের একটা ভালবাসার সম্পর্ক আছে। নীলাকে আবার এলাকার গ্যাংয়ের বড়ভাই পছন্দ করে। রায়হানের সাথে নীলাকে দেখে তার ছেলেপেলে উত্যক্ত করে যা আমাদের সামনে প্রতিনিয়ত দেখতে পাই। নীলার বাবাকে হুমকি দিলে নীলা রায়হানকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। রায়হান তেমন একটা স্বাবলম্বী না হলেও নীলা তাকে বিয়ে করে কাজী অফিসে গিয়ে। বিয়েটা সুখের হলেও তাদের সাংসারিক জীবন সুখের হয় না। একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বাধ্য করে তাদের অনেক অনেক ‘সাহস’ দেখানোর।
গল্প একদিক থেকে আহামরি না হলেও সময়োপযোগী বেশ। এই গল্প নিয়ে অনেক নির্মাতাই হয়তো কাজ করতে চাইবেন না। যেভাবে সিনেমার অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আমাদের দেখানো হয়েছে সেটা বেশ রিয়েলিস্টিক ও আর্টিস্টিক। অভিনয়ের কথা বললে অবশ্যই মূল দুই শিল্পী অর্ষা আর ইমরানের কথাই বলব। খায়রুল বাসারকে পোস্টারে দেখলেও সিনেমায় তাকে দেখি শেষ হবার কয়েক মিনিট আগে। ক্যামিও রোল বলা যায় তবে খুব বেশি কিছু করার ছিল না তার। বাদবাকি সবাই খুব অ্যামেচার লেভেল পারফর্ম করেছে, এখানে আরেকটু শক্ত দক্ষ একজন অভিনেতার অভাব টের পেয়েছি।
সিনেমার বিল্ড আপ, ব্যপ্তি নিয়েও আমার আপত্তি আছে। গল্পের চরিত্রগুলোর সাথে খুব একটা জুড়ে যাবার আগেই একটার পর একটা ঘটনা হচ্ছে। শুরুর ভয়েস ন্যারেশানে গ্যাংদের প্রভাব নিয়ে যে আইডিয়া দেয়া হয়েছে সেটা আমার ভালো লাগেনি। আবার তাদের মধ্যকার দ্বন্দ্বের বিষয়টাও ঠিক পরিষ্কার না, তাদের উপরমহলের হাত থাকার ব্যাপারটাও ওভাবে দেখায়নি। নির্মাতা কেন যথেষ্ট ব্যাকড্রপ কিংবা এঙ্গেজিং স্ক্রিনপ্লে না দিয়ে দেড় ঘন্টায় ছবিটা শেষ করলেন তা আমার বোধগম্য না। থেমে যাক সময়’গানটা ভাল লেগেছে তবে পুরো সিনেমায় মিউজিক নিয়ে খুব বেশি বলার কিছু নেই। সিনেমাটোগ্রাফি ঠিকঠাক তবে আলোর ব্যবহার, ফোকাস ও অন্যান্য টেকনিক্যাল ত্রুটি চোখে পড়বে। তারপরেও আমি শুধু ‘চরকি’ না, নীলার সাহসিকতার গল্প সিনেমাহলেও দেখানো দরকার বলে মনে করি।
রেটিং: ৬/১০