কামু চাইলে সহজ সিনেমা বানাতে পারতেন
বহুদিন থেকে কামরুজ্জামান কামুর ‘দি ডিরেক্টর’ দেখার ইচ্ছে ছিল। অনেক বছর ধরে ছবিটির সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেতে লড়াই করতে হয়েছে পরিচালককে। যার কারণে আগ্রহটা দ্বিগুণ ছিল। আগ্রহ ছিল কামুর কণ্ঠে ‘হাতের উপর হাতের পরশ র’বে না’ শোনার (অবশ্য এই গান আমি ’০৯ থেকে শুনি।) নায়িকা পপির সঙ্গে কামু’র দ্বন্দ্বও সিনেমাটি দেখার ব্যাপারে আগ্রহ সৃষ্টি করতে যথেষ্ট ছিল।
তো বিরতির আগ পর্যন্ত ছবির মোশন ছিল এক রকম। কিন্তু বিরতির পর আমার মনে হয়েছে, সিনেমাটি চিত্রায়ণে ও গল্পে কিছুটা অসমাঞ্জস্য এবং দ্রুত লয়ে দৌড়েছে। অবশ্য ইহা আমার ব্যক্তিগত অভিমত। এবং আমি সিনেমা বোদ্ধাও নয়। কেবল দর্শকের ব্যাপার থেকে লেখা।
দর্শক এবং ডিরেক্টরের কম্যুনিকেশনের যে ফিলোসফি তাতে কামু নাড়া দিতে চেয়েছেন মনে হলো। উনি চাইলে সহজ সিনেমা বানাতে পারতেন। শেষ দিকে অতি নাটকীয়তা প্রয়োজন ছিল না। যেমনটা কামুর কবিতা ও লিরিক তেমনটা সিনেমা তার নয়। সে সিনেমায় গল্পের ভেতর গল্প ঢুকে বসে আছে (এবং এই গল্পকে টানতে গিয়ে কিছুটা খেই হারিয়েছেন কামু। ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়নি। যদিও গল্পের ভেতর গল্প বলাটা সত্যি কঠিন। এক্ষেত্রে আমি মাস্টার বলব ট্যারান্টিনো, ইনারিতু, নোলানকে)। এবং শহুরে ও দাম্পত্য ক্রাইসিস ছিল, যা বর্তমান মিডিয়ার প্রধান উৎপাদন ও ব্যবসা।
রতনকে (মোশাররফ করিম) যখন কামু অ্যাটাক করতে যান তখন ত্রিকোণ যে সাসপেন্স দেখানো হয়েছে তা অনবদ্য। একদিকে কামুর ‘ওয়াইড অ্যাঙ্গেল’, রতনের ভয় ও নায়িকার অনর্গল হাসি-সুইটির অপেক্ষা। সত্যি চমৎকার ছিল।
https://www.youtube.com/watch?v=WjF4SvXC2bY&t=2816s
প্রচুর ক্যারেক্টার বা নিরর্থ ক্যারেক্টার সিনেমাটির উত্তেজনা মাটি করে দিয়েছে। শেষদিকে সমাপ্তির জায়গা প্রচলিত ও নাটকীয়পনা চোখে পড়ার মতো। কিন্তু এখানে কামু ডিপেন্ড করতে পারেন, যেহেতু এটা সিনেমা। এবং যা বাস্তবতার চেয়ে ভিন্ন তাতে শেষটা এমন হতেই পারে। কিন্তু বস, আমরা তো একটা প্রচলিত জায়গা থেকে মুক্তি চাইতেছি।
মারজুক রাসেল-পপিরে ভাল লাগে নাই। জাস্ট অশ্লীল মনে হইছে। এফডিসির মতো।
পরিশেষে বলি, ‘দি ডিরেক্টর’ কেন সেন্সর মুক্তি দিতে চাই নাই তা বুঝে উঠতে পারলাম না। এবং ‘বাপ্পী আশরাফ’ নাম ভুলে ‘আশবাফ’ হয়ে গেছে। বিশেষ কি। জয় হোক বাংলা সিনেমা ও কামুর।