Select Page

কেমন হচ্ছে ওয়েব সিরিজের গল্প!

কেমন হচ্ছে ওয়েব সিরিজের গল্প!

সেদিন একজনকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম,ওয়েব সিরিজ আপনার কেমন লাগে? উত্তরে বললেন, সবগুলোই জানি কেমন হত্যা, নৃশংস,খুন,যৌনতা এইসব! তখন আমি ভারতের টিভিএফের ‘গুল্লাক’ দেখতে বলেছিলাম, তিনি প্রথমে খুব একটা আগ্রহ দেখাননি। যদিও পরে দেখেছিলেন,দেখার পরপরই আমাকে জানিয়েছিলেন এই সিরিজ নিয়ে তার উচ্ছ্বাস।

আরো জানিয়ে রাখলেন, এমন সিরিজ বেরোলে যেন তাকে জানানো হয়, এরপর ‘কোটা ফ্যাক্টরি’ দেখতে বলেছিলাম, সেটা দেখে বললো তো আরে সিরিজ তো ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ‘গুল্লাক’ বলেছে আমাদের পরিবারের কথা আর ‘কোটা ফ্যাক্টরি’ আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা।

কথাগুলো বললাম, কারণ বিশ্বজুড়ে এখন ওয়েবের জয়জয়কার, বাংলাদেশ যদিও সেখানে এখনো সদ্য ভূমিষ্ট শিশুই বলা যায়, পাশের দেশ ভারতও বেশ এগিয়ে গেছে। নির্মাতারা টিভি বা সিনেমায় যে স্বাধীনতার স্বাদ পান না, সেটা ওয়েবে এসে পান। কারণ এতে সেন্সর নেই, তুচ্ছ অজুহাতে আটকে রাখা হয় না। দর্শকদের কাছে নিতে পারেন সেটা ভালো হয়েছে বা খারাপ সেটা অন্য বিষয়।

কিন্তু ওয়েব সিরিজের গল্পগুলো কেমন হয়! বিশ্বে অনেক ওয়েব সিরিজই ভবিষ্যতে ক্লাসিকের মর্যাদা পাবে, ‘নারকোস’ তো ইতিহাসের পাতায়, ভারতে ‘সেক্রেড গেমস’ তো মাইলফলক হয়ে থাকবে, আরো আছে পাতাললোক,অসুর।

উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে ওয়েব মানেই যৌন সুড়সুড়ি এটা প্রমাণ করতে ভারতের আল্ট বালাজি বা হইচইয়ের দুপুর ঠাকুরপো, হলি ফাঁক, চরিত্রহীন এইসব যেন শক্ত উদাহরণ হয়ে গেল। বাংলাদেশেও লেগেছে এর ছোঁয়া, ওয়েব কনটেন্টের নামে গালি আর যৌন সুড়সুড়ি মার্কা অনেক হচ্ছে,বিশেষ করে ইউটিউব নির্ভরগুলোতে।

বাংলাদেশে ওয়েব সিরিজের প্রেক্ষাপটে দুটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ‘আগস্ট ১৪’ ও ‘তাকদীর’। ‘তাকদীর’ কিছুটা আলাদা হলেও ‘আগস্ট ১৪’ ছিল সত্য ঘটনা নিয়ে একটি নৃশংস হত্যার কাহিনী, একই সঙ্গে আসা বাকি সিরিজগুলো যৌন দৃশ্য, অবিশ্বাসের গল্প আরো কিছু। আর অবাধ মদ্যপান, ধূমপান না হয় উহ্যই রইলো।

হালের ‘জানোয়ার’ সুপারহিট,ওয়েব ফিকশন। সদ্য এসেছে ‘ডার্ক সাইড অব ঢাকা’, কিছুদিন আগে ‘কসাই’, ‘ট্রল’। সবগুলোরই মূলভাব নৃশংসতা,খুন-হত্যা। ‘মহানগরের’ টিজার এলো ১১ জুন, দেখে মনে হলো সেটাও একই ধারার। নতুন প্লাটফর্ম আসছে চরকি, প্রথম ট্রেইলার বেরোলো ‘মরিচীকা’র। এটাও সত্য কাহিনী অবলম্বনে একটা হত্যার কাহিনী, গল্পকে বাস্তবিকভাবে তুলে কোন কিছুই কমিয়ে রাখবে না।

এই কথা সত্য, ওয়েবে এখন এই গল্পের বাজার ভালো, আরো সত্যি নির্মাণ ভালো হলে এই গল্পের সিরিজই মানুষ বেশি প্রশংসা করে, অভিনয় দেখানোরও সুযোগ থাকে। ভিলেন চরিত্র, পুলিশের চরিত্র বিশেষ হয়ে উঠছে ওয়েব সিরিজগুলোতে। ‘সেক্রেড গেমসে’ যেমন দেখেছে সবাই সাইফ আলী খান-নওয়াজ উদ্দিন সিদ্দিকীর অভিযান তেমন মরিচীকাতেও দেখা যাবে আফরান নিশো-সিয়ামের অভিযান!

যাই হোক, ওয়েব সিরিজ নির্মাতাদের স্বাধীনতার যে প্লাটফর্ম গড়ে উঠেছে সেটার ধারা অক্ষয় থাকুক। তবে এইরকম নৃশংসের গল্পের পাশাপাশি আমরা আমাদের জীবনের সহজ সরল গল্প দেখতে চাই। চরকিতে ‘ইউটিউমার’, ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ হয়তো ক্রাইম থ্রিলারের দাপটের মাঝে ভিন্ন কিছু হবে। ‘গুল্লাকের’ শেষ দৃশ্যের মত ‘মুখে হাসি চোখে অশ্রু’ তৃপ্তি পেতে চাই।


Leave a reply