খলনায়ক-দর্শকের জবাবে ‘মেন্টাল’ নির্মাতা
ঈদুল ফিতরের চার সিনেমার মধ্যে দর্শক প্রত্যাশার অনেকটাই দখল করে রেখেছিল ‘রানা পাগলা দ্য মেন্টাল’। তার সঙ্গে মেলেনি দর্শকের চাহিদা। সিনেমাটির ভিলেন মিশা সওদাগর-সহ অনেকে গল্পটি দুর্বোধ্য বলে অভিযোগ করেন।
এ প্রসঙ্গে নির্মাতা শামীম আহমেদ রনি ফেসবুকে লেখেন, ‘একটি বড় উৎসবে মুক্তি পেয়েছে মেন্টাল সিনেমাটি। সিনেমাটি দেখে কেউ তালি দিয়েছে, আবার কেউ গালি দিয়েছে। যা ঘটছে আমার কাছে এটাই স্বাভাবিক। সিনেমাটি নির্মাণের আগেই প্রযোজককে বলেছিলাম, এমন একটা গল্প নিয়ে সিনেমাটি নির্মিত হচ্ছে যার ১ মিনিট মিস করলে পুরো সিনেমাটি আপনাকে আবার দেখতে হবে। কারণ সহজ-সরল কোনো গল্প বলার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাইনি। বরং একটি সহজ গল্পকে অনেক জটিল করে বলেছি। এটাই আমাদের টার্গেট ছিল। তাই আমরা সফল/বিফল হতেই পারি। আর আমি যা দিচ্ছি তা আপনি নিতে পারছেন কি না, তা আপনার বিষয়। তবে আমি যা দিচ্ছি, তা আপনাকে নিতেই হবে বিষয়টা অবশ্যই তা নয়।’
সিনেমার প্রিন্ট ও সাউন্ড বাজে হয়েছে এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বলেন, ‘কেউ কেউ ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে কিংবা কিছু না পাওয়ার হতাশা থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিংবা গণযোগাযোগ মাধ্যমে অনেক কিছু বলেছেন। তাদের শিশুসুলভ আচরণে শুধু হাসি পেয়েছে। কিন্তু তাদের প্রতি একটুও রেসপেক্ট কমেনি। আর সিনেমা দেখতে ঘোলা, সাউন্ড বাজে কথাগুলো ঠিকই বলেছেন। কিন্তু দোষটা আমার নয়, এটা সিনেমা হলের সমস্যা। ভালো কোনো সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমাটি আবার দেখুন, তাহলেই বুঝবেন।’
এদিকে সিনেমাটির ভিলেন মিশা সওদাগরও অভিযোগ করেছেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, “মেন্টাল’দেখে আমি নিজে কিছু বুঝিনি। রনি চেষ্টা করেছেন, কিন্তু শিল্পী হিসেবে গল্পটা আমার কাছে পরিস্কার নয়। আমার সঙ্গে যারা ছবিটি দেখছিলেন, তাদের অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি। আমাকে এতো প্রশ্ন করা হচ্ছিলো যে, রীতিমতো বিব্রত হচ্ছিলাম। ছবির ধারাবাহিকতা ঠিক নেই, পোশাকের ধারাবাহিকতাও নেই। আরও নানা সমস্যা।”
নির্মাতার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সাইকো থ্রিলার ধাঁচের ছবি ‘রানা পাগলা-দি মেন্টাল’-এর সঙ্গে দর্শক নাকি সম্পৃক্ত হতে পারছে না…! এমন প্রশ্নে মিশা বলেন, “আরে…ওর (রানা, শাকিব খানের চরিত্র) মেন্টাল ডিজিজ আছে। ও ভুলে যায়। কিন্তু অন্য চরিত্রগুলো তো মেন্টাল নয়। ছবিতে এক জায়গায় আমি বলছি- আমি বিয়ে করিনি। আরেক জায়গায় বলছি- এক্ষুনি চল, বিয়ে করবো বাসায় চল। আমার দুই ভাগ্নি আমাকে এ ভুল ধরিয়ে দিলো। আবার ছবিতে পড়শি কেন এলো, পড়শি কেন চলে গেলো? ছবিতে একটি রিপিট শট আছে ২০ মিনিটের। চারটি খুন দিয়ে ছবি শুরু হয়, আবার কেন সেগুলো দেখাচ্ছে বোঝা গেলো না! আর শুটিং শুরুর পর গল্পও অনেক বদলানো হয়েছে। আমার কিছু দৃশ্য ফেলে দেওয়া হয়েছে। আর স্ক্রিপ্টে থাকলেও কিছু দৃশ্যের শুটিংই করা হয়নি। রনি পক্ষপাতিত্ব করেছেন। এসব কারণে গল্পটা দর্শকের কাছে পরিষ্কার হয়নি।”
তবে এমন প্রতিক্রিয়া নাকচ করে বাংলা মেইলকে রনি বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি ছবিটি মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে। গল্পের একমিনিট মিস করলেই পুরো কাহিনীটা আর ধরা যাবে না। নরমালি আমরা মনোযোগ দিয়ে হলে ছবি দেখি না। পপকর্ন খাই, বাইরে যাই মাঝে মাঝে। গল্পটা ভালোবাসা হলেও স্টোরি টেলিংটা বেশ জটিল। সে কারণেই এমনটা ভাবছে দর্শকরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে কমেন্ট করেছে, একজায়গায় মিশা ভাই বিয়ে করেনি। আরেক জায়গায় দেখা গেলা তার মেয়ে হাজির। অনেকের প্রশ্ন বিয়ে না করলে মেয়ে আসবে কোথা থেকে? কিন্তু সিনেমাতেই আমি বিষয়টি ক্লিয়ার করেছিলাম। দুইটা পার্টে মিশা ভাইয়ের দৃশ্য আছে। একপার্টে তার মেয়ে আঁচলকে দেখা গেছে। আরেক পার্টে দেখা গেছে সেটি ছিলো পুরোটায় শাকিব খানের সাজানো নাটক। বিষয়টি যারা ধরতে পারছে তারা প্রশংসা করেছে। ফোন করে অনেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে।’