‘গত দুই বছরে অন্য একটা ছবির শুটিং শেষ করেছি’
‘গত দুই বছরে অন্য একটা ছবির শুটিং শেষ করেছি একরকম কাউকে না জানিয়েই! গত মাসেই কলকাতা থেকে ফিরলাম সেটার ড্রাফট এডিট শেষ করে। আশা করছি, মে-জুনের মধ্যে হয়ে যাবে ফাইনাল এডিট আর পোস্টের কাজ। সব ঠিক থাকলে এই নতুন ছবি মুক্তি পাবে নতুন বছরে। এর বেশি আর এখন বলবো না। এজন্য আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে!’
বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি এমনটা বললেন ‘শুনতে কি পাও’-খ্যাত নির্মাতা কামান আহমেদ সাইমন।
এ নির্মাতার ঝুলিতে অনেকগুলো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। সাম্প্রতিক সময় ধরলে ২০১৬ সালে লোকার্নো ওপেন ডোর্সের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার, পিয়াতজা গ্রান্দায় সম্মাননা। এ বছর (২০১৭) বার্লিন থেকে ডব্লিউসিএফ, কানের সিনেফঁদাসিউতে নিমন্ত্রণ। চলছে নতুন ৩টি ছবির প্রি-প্রোডাকশন, শুটিং, এডিটিং— এই নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নির্মাতা কামার আহমাদ সাইমন।
নতুন ছবির শুটিং শুরু করছেন, এটা কোন ছবি?— এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “ইংরেজি নামটা অনেকেই শুনেছেন আগে— ‘ডে আফটার টুমরো’। এর বাংলা নাম ‘অন্যদিন…’। এটা আমার ওয়াটার ট্রিলজির দ্বিতীয় ছবি। আগেরটি ছিল ‘শুনতে কি পাও!’। ‘অন্যদিন…’-এর পর হবে ‘আরও কিছু জীবন’। আসলে ‘অন্যদিন…’ ছবিটার প্রি-প্রোডাকশন করে রেখেছিলাম অনেকদিন আগেই। ইডফা আর সানড্যান্সের মতো উৎসব থেকে গ্রান্ট অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছিলাম ২০১৩ সালেই। কিন্তু ‘শুনতে কি পাও!’র পরিবেশনা আর ‘শিকলবাহা’র প্রস্তুতিতে বারবার পিছিয়ে যাচ্ছিল ‘অন্যদিন…’।
এ বছর কানের সিনেফঁদাসিউতে যখন স্ক্রিপ্টটা আমন্ত্রণ পেলো তখন থেকেই ভাবছিলাম শুটিংয়ের কথা। তাছাড়া গত বছর লোকার্নোর ওপেন ডোর্সে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার আর আর্তে ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ পাওয়ার পর থেকে একটু চাপেও ছিলাম। ওরা পিয়াতজা গ্রান্দার মতো বিশ্ব চলচ্চিত্র মঞ্চে সম্মানিত করেছিল ঠিকই, কিন্তু ছবির মূল ভাবনাটাও অনলাইনে পাবলিক করে দিয়েছিল তার আগেই।”
‘শিকলবাহা’র শুটিং প্রসঙ্গে বলেন, “এবার বার্লিন থেকে ডব্লিউসিএফ দেওয়ার পর থেকে একটু চাপে আছি। তবু ‘শিকলবাহা’র শুটিং শুরু হতে আরেকটু সময় লাগবে। সময় নিলেই ভালো হবে না জানি। কিন্তু ভালো ছবির কাজে একটু সময় লাগবেই। একে তো চটকদার কোনও গল্প নয়, তার ওপর কোনও চেনা মুখ নিতে চাচ্ছি না। তাই কাস্টিংটাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ! গত দুই বছর থিয়েটারে কতগুলো নাটক দেখেছে সারা (প্রযোজক সারা আফরীন) জানি না। ফেসবুকে হাজার হাজার প্রোফাইল ঘেঁটেছে আমার সহকারীরা। কিন্তু পছন্দ হচ্ছে না কাউকেই! আমি অচেনা মুখ চাচ্ছি ঠিকই, কিন্তু একটা ডিস্টিংশন লাগবে। যেমন ‘শুনতে কি পাও!’র সৌমেন-রাখীর মতো জীবন থেকে নেয়া। মানে স্টারের চাইতেও বেশি কিছু!”
প্রস্তুতি প্রসঙ্গে বলেন, “শিকলবাহা’র জন্য একটা নির্দিষ্ট চরিত্রের পুরনো বাড়ি খুঁজছিলাম, অনেক খোঁজাখুঁজির পর সেই বাড়িটা যখন পাওয়া গেলো, গাছ-গাছালি আমার পছন্দ হলো না। গেলো বর্ষায় প্রায় শ’দুয়েক গাছ লাগিয়েছি ওই বাড়িতে। শিল্পী সাইদুল হক জুইস ডিজাইন করছেন সেটটি। আমার ফরাসি প্রযোজককে নিয়ে গিয়েছিলাম নভেম্বরে। গাছগুলা বেড়ে একটা বেশ জংলী চেহারা নিয়েছে। আশা করছি, আগামী বর্ষায় শুটিংয়ের জন্য রেডি হয়ে যাবে।”
তাহলে ২০১৮’তে ‘শিকলবাহা’ বা ‘অন্যদিন…’ মুক্তি পাচ্ছে? উত্তরে বলেন, “এখন ‘অন্যদিন…’-এর শুটিং করছি টানা। একটু লম্বা সময় চলবে শুটিং। ‘শুনতে কি পাও!’র শুটিং করেছিলাম প্রায় ২০ মাস। ‘অন্যদিন…’ অন্তত ১০ মাস শুট করার ইচ্ছে আছে। পাশাপাশি চলছে ‘শিকলবাহা’র কাজ। কিন্তু এর কোনওটাই ২০১৮’তে রেডি হবে না।”