ছিলেন এক সুদর্শন খলনায়ক আদিল
ভিলেন হলেও আদিল-এর অভিনয় ছিল নায়কোচিত। দুই-তিনটি ছবিতে রোমান্টিক নায়ক হিসেবে ছিলেন তিনি। তবে খলনায়ক হিসেবেই সফলতা ও জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। অভিনয় করেছেন অসংখ্য হিট-সুপারহিট ছবিতে।
আদিল ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট, নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জে মৃত্যুবরণ করেন।
তার পারিবারিক নাম এ কে এম রেজাউল করিম ভূঁইয়া। বাবার নাম তোফাজ্জল হোসেন ভূঁইয়া ও মা সেরাজুন্নেসা। চার ভাই এক বোনের মধ্যে আদিল ছিলেন চতুর্থ। নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করেন। তারপর ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স করেন।
আদিল ছাত্রজীবনে মঞ্চনাটকে অভিনয় করতেন এবং পরে টেলিভিশন নাটকেও অভিনয় করেছেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবে আবির্ভূত হন।
আদিল অভিনীত প্রথম ছবি হাসমত পরিচালিত ‘এখানে আকাশ নীল’। মুক্তি পায় ১৯৭৩ সালে। অভিনীত অন্যান্য ছবির মধ্যে আছে- অনুভব, ডুমুরের ফুল, শীষনাগ, রাজমহল, যদি জানতেম, রাজদুলারী, মোকাবেলা, বারুদ, বন্দুক, বুলবুল-এ বাগদাদ, ঈমান, চন্দ্রলেখা, যাদু নগর, দিন যায় কথা থাকে, ওয়াদা, আমীর ফকির, তাজ ও তলোয়ার, সওদাগর, পদ্মাবতী, গাঁয়ের ছেলে, বাহাদুর, নাগ নাগিনী, আবেহায়াত, শাহীচোর, নতুন পৃথিবী, ঘরের বউ, নসীব, উছিলা, নেপালী মেয়ে, সেলিম জাভেদ, ঈমানদার, সোহাগ মিলন, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা, আশার আলো, রাজকুমারী, হাতি আমার সাথী, দুই জীবন, আলোমতি প্রেমকুমার, তিন টেক্কা, সাজানো বাগান, গুনাহ, পাতাল বিজয়, নাগিনী কন্যা, তিন বাহাদুর, শাহী দরবার, রাজিয়া সুলতানা, গীত, আলিফ লায়লা, অশান্তি, চাঁদ সওদাগর, মহারাণী, বাহাদুর মেয়ে, তুফান মেইল, দিদার, চাচ্চু, পিতার আসন, দুশমন খতম, পাওয়ার, কোটি টাকার কাবিন ইত্যাদি।
চলচ্চিত্রে সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও জাঁদরেল খলঅভিনেতা আদিল একসময় চলচ্চিত্র থেকে দূরে চলে যান। আইনজীবী হিসেবে ব্যস্ত হয়ে পরেন। শেষ জীবনে কোর্ট-কাচাড়িতেই ব্যস্তসময় কেটেছে তার। মৃত্যুর কয়েক বছর আগে স্মৃতিভ্রংশের শিকার হয়ে নিভৃতেই কাটে তার জীবন।
কিছু তথ্য ও ছবি: আজাদ আবুল কাশেম