ছুয়ে দিলে মন (২০১৫)
দেখে এলাম শিহাব শাহীন পরিচালিত “ছুয়ে দিলে মন” মুভিটি। মন বা হৃদয় ছুতে পেরেছে কিনা সেটার হিসাব করার আগে একটু মুভির কাহিনীর দিকে চোখ দেয়া যায়:
[su_quote]নাম শুনেই সবাই বুঝে গিয়েছিলো যে মুভিটি একটি পরিপূর্ণ রোমান্টিক মুভি। মুভির কাহিনী অনেকটা এমন ছোট বেলার প্রেম। মেয়ের বাবা প্রভাবশালী ছেলের বাবা সাধারন ব্যক্তি। প্রভাব প্রতিপত্তি এর জোরে আলাদা করে দেয় ছোটবেলার অবুঝ দুটি মনকে। বার বছর পর আবার সেই প্রেমকে ফিরে পাবার চেস্টা ও মাঝখানে একটু একটু টুইস্ট এই হল মুভির কাহিনী[/su_quote]বলতেই পারেন ধুর এটা কিছু হল। গতানুগতিক কাহিনী, কিন্তু আমার প্রশ্ন হল এছাড়া রোমান্টিক মুভির আর কি কাহিনী হতে পারে?? ৭০-৮০ ভাগ রোমান্টিক মুভির কাহিনী হল এমন। সো কাহিনী খোজা বাদ দিয়ে মুভিতে কি কি পেলাম, আদৌ এটি উপভোগ্য কিনা সেই বিষয়গুলোর উপর আলোকপাত করা যাক।
[su_note note_color=”#164ae1″ text_color=”#ffffff”]মুভির ভালো লাগার দিকের জন্য খোজ দ্যা সার্চ মিশনে নেমে পরি[/su_note]
└► মুভির গল্প এবং গল্পের বর্ণনা ছিলো অসাধারন। শুরুতেই ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে কাহিনীর সূত্রপাত বুঝিয়ে দেওয়া হবে এবং যখন যেখানে ব্যাকগ্রাউন্ড লাগবে সেটা ভালোমতঅই ব্যবহার করা হয়েছে।
└► আমার মতে মুভিটি যদি ৪০% রোমান্টিক হলে ৬০ % হবে কমেডি। দম ফাটানো কিছু হাসির দৃশ্য আছে মুভিটিতে। যা মুভির আসল প্রাণ বলা যায়। অন্য মুভিতে দর্শক হাঁসানোর জন্য যেমন জোর করে কাতুকুতু দেয়া হয় , এমন ভাবে হাঁসানো হয়নি এই মুভিতে। আপনি মন থেকেই হো হো করে হেসে উঠবেন, যখন শুনতে পাবেন— “মাঙ্কি স্টাইল টাইগার পাঞ্চ” ডায়লগটি তার এই ডায়লগ বলার এক্সপ্রেশন। এমন কিছু ডায়লগ আছে যা আপনাকে জোগাবে মন খুলে হাঁসির খোড়াক। মুভি শুরু করার প্রথম ২০-২৫ মিনিট শুধুই কমেডি 🙂
└►কমেডি ছাড়া কি মুভিতে আর কিছু নেই? আরে কে বলল নেই, আছে তো 😉 ইরেশ যাকেরের নজর কাড়া অভিনয় আর তার সাথে তাল মিলিয়ে গেছেন মিশা সওদাগর। আসলেই এই দুজন পুরো মুভিতে রাজত্ব করেছেন। খল – নায়কের ভূমিকায় ইরেশ জাকেরের অভিনয় আর গেট-আপ সত্যিই নজর কারার মত। আর অপর দিকে মিশা সওদাগরের স্ত্রী ভক্তি আর দুলাভাইয়ের অভিনয় মাঝে মাঝে নিয়ে যাবে এক অনন্য উচ্চতায়।
└►যাদের নিয়ে মুভি তাদের কথায় তো বলা হল না। মম আর আরেফিন শুভ, খারাপ অভিনয় করেননি কেউ। মম তার স্বভাবসুলভ অভিনয় করে গেছেন কিন্তু আরেফিন শুভর মাঝে সেই ন্যাকামির ছাপটা পাওয়া গেছে একটু হলেও। তারপরও সে অনেক ভালো অভিনয় করেছেন।
└►এই মুভিতে আমরা ৩ টা ভালো গান পেয়েছি। অনেকদিন শোনার মত গানগুলো মনে হল। আর তার সাথে তো নজরকাড়া লোকেশন। গ্রাফিক্সের কিছু কাজ ছিলো সেটাও বেশ ভালো ছিলো।
[su_note note_color=”#164ae1″ text_color=”#ffffff”]খারাপ দিক কি কিছু নাই?[/su_note]
└► মুভির খারাপ দিক আসলে কম। না ধরলেও চলে , তবে চোখে পড়ার মত কিছু বিষয় ছিলো। এক দৃশ্য দেখা যাবে শুভ গান গাইছে মম পরে আসে সেইখানে। শুভ তাকে ইশারাতে বলে লাল পাহাড়ে যেতে কিন্তু মমর আগেই শুভ সেইখানে চলে যায়। যদিও মম যখন দৌড় শুরু করে সেইখানে যাবার জন্য তখনো শুভ স্টেজে গান গেয়ে যাচ্ছিলো। সো এটা একটু বেমানান লেগেছে…
└► আর একটি হল ইরেশ জাকেরের চুলের স্টাইলে। পুরো মুভিতে ইরেশ জাকেরর দুপাশ থেকে চুল ছোট করে কাটা (বালাতোল্লি স্টাইল) কিন্তু হঠাৎ করে পরের দৃশ্যে তার চুল স্বাভাবিক এবং তার পরের দৃশ্যে চুল আবার সেই আগের বালাতোল্লি স্টাইল। এটা আসলেই বড়ই বেমানান লেগেছে।
——————————————————————————
সুতরাং দু একটি দুর্বল দিক বাদ দিলে “ছুয়ে দিল মন” দর্শকদের হতাশ করেনি এবং একটি উপভোগ্য মুভি হয়েছে এটা নির্দিধায় বলা যায়। যারা মমকে দেখার জন্য এবং যারা আরেফিন শুভর জন্য গিয়েছিলেন তাদের কাউকেই দুজন হতাশ করেনি বরং এদের গ্ল্যামার একটু বেশিই ছিলো 😉
সুতরাং দেখে ফেলুন এই রোমান্টিক কমেডি মুভিটি। এতটুকু বললাম হতাশ হবেন না। ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি নিয়ে মুভি শেষ হবার পর বের হবে এটা বলতে পারি 🙂
============================================
মুভিঃ ছুয়ে দিলে মন (২০১৫)
ভাষাঃ বাংলা
দেশঃ বাংলাদেশ
অভিনয়ঃ আরেফিন শুভ, জাকিয়া বারী মম, ইরেশ জাকের, আলীরাজ, মিশা সওদাগর, সুষমা সরকার।
My Rating: 7.2/10
============================================
★★ হলে গিয়ে বাংলা মুভি দেখুন, বাংলা চলচিত্রের উন্নয়নে এগিয়ে আসুন ★★