Select Page

‘জয়া আহসান একাই প্রাণিপ্রেমী নন, আমাদেরও ভালোবাসা আছে’

‘জয়া আহসান একাই প্রাণিপ্রেমী নন, আমাদেরও ভালোবাসা আছে’

জয়া আহসান শুটিং বন্ধের আহ্বান জানানোয় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ‘শাপলা শালুক’ সিনেমার পরিচালক রাশেদা আক্তার লাজুক। মূলত শুটিং সেটে বন্য হাতির আক্রমণের কারণের কারণে এ মন্তব্যের সূত্রপাত। যেখানে লাজুক বলেন, ‘জয়া আহসান একাই শুধু প্রাণিপ্রেমী নন, পশুপাখির প্রতি আমাদেরও ভালোবাসা আছে।‘

ঘটনা হলো এই শেরপুরের নালিতাবাড়ির গারো পাহাড়ঘেরা এলাকায় এক সপ্তাহের বেশি সময় চলছে সজল ও শবনম বুবলি অভিনীত ‘শাপলা শালুক’ ছবির শুটিং। সেখানে দুই দফায় বন্য হাতির আক্রমণের ঘটনা ঘটে। এক দল হাতির আক্রমণে শুটিং সেটের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হাতির আক্রমণের সময় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ছোটাছুটি করতে গিয়ে ছবির কয়েকজন অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলী আহত হয়েছেন।

খবরটি শোনার পর বন বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শুটিংয়ের অনুমতির নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। ‘গারো পাহাড়ে নতুন সিনেমার শুটিং, বিঘ্ন ঘটাচ্ছে বন্য হাতির দল’ শিরোনামের একটি নিউজ কার্ড শেয়ার করে ফেসবুকে নিজের মতামত তুলে ধরেন জয়া আহসান। ফেসবুকে দেওয়া জয়ার পোস্ট ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মনে করেন ছবির পরিচালক রাশেদা আক্তার লাজুক।

জয়া আহসান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এই আরেক উপদ্রব বনের ভেতর। বন বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। মন চাইলেই লাইট ক্যামেরা অ্যাকশন শুরু করা যায়?’ প্রশ্ন রেখে জয়া আরও লিখেছেন, ‘মাইকের শব্দ, শুটিং টিমের বর্জ্য, গানবাজনা, এগুলো কি অ্যালাউ (অনুমোদন) করা ঠিক হবে এ রকম একটা সেনসিটিভ (সংবেদনশীল) জায়গায়?’

জয়া আহসানের ফেসবুক পোস্ট নজরে এসেছে পরিচালক রাশেদা আক্তারের। তিনি প্রথম আলোকে জানালেন, জয়ার এমন পোস্ট ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। তার বক্তব্য শুটিংয়ের সবাইকে অবাক করেছে। পরিচালক বলেন, ‘দুঃখজনক এবং একই সঙ্গে অবাক হয়েছি। কেননা শুটিংয়ে হাতির আক্রমণ হয়েছে শুনে তিনি (জয়া আহসান) ফোন করে আমাদের একটা খবর নিতে পারতেন। এখানে বুবলি, সজলসহ অনেকে আছেন। সজলের সঙ্গে জয়ার অনেক কাজ হয়েছে। ওই জায়গা থেকেও তো একটাবার খোঁজ নিতে পারতেন, আমরা  ঠিক আছি কি না তা জানতে পারতেন। তা না করে উল্টো আমাদের শুটিং বন্ধের আহ্বান জানালেন! তার কাছে এ রকম আচরণ আশা করিনি।’

জয়া আহসানের বক্তব্যটা সার্বিকভাবে বলা হয়েছে, বন বিভাগকে উদ্দেশ করে, আপনাদের শুটিং বন্ধের ব্যাপারে কিছু বলেছে কি? এমন প্রসঙ্গ তুলে ধরতেই রাশেদা আক্তার বললেন, ‘তিনি ফেসবুকে যা লিখেছেন, তাতে তো কারও না বোঝার কথা নয়। তিনি যেভাবে লিখেছেন, তা শুটিং বন্ধেরই আহ্বান।’

কথা প্রসঙ্গে রাশেদা আক্তার লাজুক জানালেন, তারা নালিতাবাড়ির কোনো বনে শুটিং করছেন না। সেখানকার দাউধারা নামের একটি গ্রামে সেট বানিয়ে ছবিটির শুটিং করছেন। পরিচালকের মতে, ভুল তথ্যে দিশাহারা না হয়ে খোঁজ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জয়ার লেখা উচিত ছিল। তিনি বলেন, ‘জয়া আমাদের অহংকার। দেশের পাশাপাশি বাইরের দেশের মানুষেরাও তাঁর অভিনয়ের ভক্ত। তিনি লিখেছেন, আমরা বনের ভেতর শুটিং করেছি, যা একেবারেই ভুল। আমরা কিন্তু গ্রামে শুটিং করছি। সিনেমাটির মাধ্যমে দেশের সৌন্দর্য বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাইছি। সে জন্যই সুন্দর একটি গ্রাম বেছে নিয়েছি। আমরা বন্য হাতির কাছে যাইনি, বরং হাতি আমাদের এখানে এসেছে। কেননা বনে খাদ্যসংকট দেখা দিলে হাতি গ্রামে আক্রমণ করে, বিষয়টাও সে রকম। আর তিনি না জেনে লিখে দিলেন, বনের ভেতর শুটিং করেছি। ওনার এই কথায় আমি, শবনম বুবলী, সজলসহ সবাই অবাক হয়েছি। এটা নিয়ে কথা বলাবলি করছিলাম। আরেকটা কথা, জয়া আহসান একাই শুধু প্রাণিপ্রেমী নন, পশুপাখির প্রতি আমাদেরও ভালোবাসা আছে।’

গত ২৮ মে অভিনেতা সজল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত ১০ দিন ধরে এখানে শুটিং করছি। প্রায় সময়ই বন্যহাতি আক্রমণ করে এখানে। আমাদের সেটে প্রায় ৮/৯টা বন্যহাতি আক্রমণ করেছিল। সবাই ভীষণ ভয় পেয়ে গিয়েছিল। পরে কোনোভাবে তাদের সেখানে থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেভাবে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি আমাদের।’

জানা গেছে, ‘শাপলা শালুক’ সিনেমাটির ওয়ার্কিং টাইটেল। পরে নাম বদল করা হবে। আগামী ৩ জুন ছবির প্রথম লটের শুটিং শেষ হতে পারে বলে জানান পরিচালক। এ ছবিতে আরও অভিনয় করছেন সুমন আনোয়ার, আয়মান শিমলা, দিলরুবা দোয়েল, রফিকুল রুবেল, বাপ্পী প্রমুখ।

উল্লেখ্য রাশেদা আক্তার লাজুক একসময় টিভি অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। অভিনয় করেছিলেন সিনেমায়। তবে সে সব বেশ আগেই কথা।


Leave a reply