জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৭৫-১৯৭৭)
১৯৭৫ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের স্বরূপ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করে আসছে।
১৯৭৫:
১. বিশেষ সম্মাননা (মরণোত্তর)- জহির রায়হান
২. সেরা চলচ্চিত্র- লাঠিয়াল
৩. সেরা পরিচালক- নারায়ণ ঘোষ মিতা (লাঠিয়াল)
৪. সেরা চিত্রনাট্যকার- খান আতাউর রহমান (সুজন সখী)
৫. সেরা সংগীত পরিচালক- লোকমান হোসেন ফকির ও দেবু ভট্টাচার্য (চরিত্রহীন)
৬. সেরা অভিনেতা- আনোয়ার হোসেন (লাঠিয়াল)
৭. সেরা অভিনেত্রী- ববিতা (বাদী থেকে বেগম)
৮. সেরা সহ অভিনেতা- ফারুক (লাঠিয়াল)
৯. সেরা সহ অভিনেত্রী- রোজি আফসারী (লাঠিয়াল)
১০. সেরা গায়ক- আব্দুল আলীম (সুজন সখী)
১১. সেরা গায়িকা-সাবিনা ইয়াসমিন (সুজন সখী)
১২. সেরা চিত্রগ্রাহক-বেবী ইসলাম(চরিত্রহীন)
বরেন্য চলচ্চিত্রকার শহীদ জহির রায়হানকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের রীতি শুরু হয়। ১৯৭৫ সালে ‘লাঠিয়াল’ ছবিটি সর্বোচ্চ ৫টি পুরষ্কার লাভ করে। সেরা অভিনেতা হিসেবে আনোয়ার হোসেনের পুরষ্কার চমক সৃষ্টি করে। প্রথিতযশা অভিনয় শিল্পী রোজি আফসারী, ফারুক ও সংগীতশিল্পী আব্দুল আলীম প্রথম আসরেই পুরস্কার অর্জন করলেও পরবর্তীতে আর পুরষ্কৃত হননি।
১৯৭৬:
১. সেরা চলচ্চিত্র- মেঘের অনেক রং
২. সেরা পরিচালক- হারুনর রশীদ (মেঘের অনেক রং)
৩. সেরা চিত্রনাট্যকার- আমজাদ হোসেন (নয়ন মনি)
৪. সেরা সংগীত পরিচালক- ফেরদৌসী রহমান (মেঘের অনেক রং)
৫. সেরা অভিনেতা- রাজ্জাক (কি যে করি)
৬. সেরা অভিনেত্রী- ববিতা (নয়ন মনি)
৭. সেরা সহ অভিনেতা- খলিল উল্লাহ খান (গুণ্ডা)
৮. সেরা সহ অভিনেত্রী- রওশন জামিল (নয়ন মনি)
৯. সেরা শিশু শিল্পী- আদনান (মেঘের অনেক রং)
১০. সেরা গায়ক- মাহমুদুন্নবী (দি রেইন)
১১. সেরা গায়িকা- রুনা লায়লা (দি রেইন)
১২. সেরা চিত্রগ্রাহক- হারুন অল রশিদ (মেঘের অনেক রং)
১৩. সেরা সম্পাদক- বশির হোসেন (মাটির মায়া)
১৪. সেরা শিল্প নির্দেশক- আব্দুস সবুর (সূর্যগ্রহণ)
এই বছর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘মেঘের অনেক রং’ সর্বোচ্চ ৫টি শাখায় পুরস্কার লাভ করে। সেরা অভিনেতা হিসেবে নয়ন মনির জন্য ফারুক পুরস্কৃত না হওয়ায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এইদিকে সেরা অভিনেতা হিসেবে নায়ক রাজ রাজ্জাক প্রথমবারের মত জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে। মহিলা সংগীত পরিচালক হিসেবে ফেরদৌসী রহমান প্রথমবার জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে,যা প্রায় চার দশক পর্যন্ত বলবৎ থাকে।
১৯৭৭:
১. সেরা চলচ্চিত্র- বসুন্ধরা
২. সেরা পরিচালক- সুভাষ দত্ত (বসুন্ধরা)
৩. সেরা কাহিনীকার- আলাউদ্দিন আল আজাদ (বসুন্ধরা)
৪. সেরা চিত্রনাট্যকার- আহমেদ জামান চৌধুরী (যাদুর বাঁশি)
৫. সেরা সংলাপ রচয়িতা- আলমগীর কবির (সীমানা পেরিয়ে)
৬. সেরা সংগীত পরিচালক- আজাদ রহমান (যাদুর বাঁশি)
৭. সেরা অভিনেতা- বুলবুল আহমেদ (সীমানা পেরিয়ে)
৮. সেরা অভিনেত্রী- ববিতা (বসুন্ধরা)
৯. সেরা সহ অভিনেতা- সৈয়দ হাসান ইমাম (বসুন্ধরা)
১০. সেরা সহ অভিনেত্রী- শাবানা (জননী)
১১. সেরা গায়িকা- রুনা লায়লা (যাদুর বাঁশি)
১২. সেরা চিত্রগ্রাহক (সাদাকালো)- রেজা লতিফ (অনন্ত প্রেম)
১৩. সেরা চিত্রগ্রাহক (রঙ্গীন)- এম এ মোবিন (সীমানা পেরিয়ে)
১৪. সেরা সম্পাদক- বশির হোসেন (সীমানা পেরিয়ে)
১৫. সেরা শিল্প নির্দেশক- মহিউদ্দিন ফারুক (বসুন্ধরা)
কথাসাহিত্যিক আলাউদ্দিন আল আজাদের উপন্যাস ‘তেইশ নম্বর তৈলচিত্র’ অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘বসুন্ধরা’ সর্বোচ্চ ৬টি বিভাগে পুরস্কার লাভ করে। সুভাষ দত্ত, আলমগীর কবির, বুলবুল আহমেদ প্রথমবারের মত জাতীয় পুরষ্কার অর্জন করেন। আর্ন্তজাতিক খ্যাতি সম্পন্না ও হার্টথ্রুব নায়িকা ববিতা পরপর তিনবার জাতীয় পুরস্কার পেয়ে হ্যাটট্রিক করেন। অন্যদিকে বিউটি কুইন খ্যাত শাবানাকে সহ অভিনেত্রী হিসেবে পুরস্কার করা হলে, নিজেকে প্রধান অভিনেত্রী হিসেবে দাবি পুরস্কার প্রত্যাখান করেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের ইতিহাসে উনিই প্রথম পুরস্কার প্রত্যাখান করেন।