জুলাই জুড়ে বাংলাদেশের হলে কলকাতার দাপট
২০১৮ সালের প্রথম ছয় মাসে দেশে নতুন ছবি মুক্তির সংখ্যা ছিল ১৬। চলতি বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২। সংখ্যা বিবেচনায় খুশির খবর হলেও ব্যবসা ও একের পর এক বন্ধ হওয়া বলে দিচ্ছে পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে।ঠিক জুলাই মাসেই বেশ কয়েকটি কলকাতার সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। এই নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রথম আলো।
ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাওয়া ছবিগুলো দিয়ে এতদিন প্রেক্ষাগৃহ মালিকেরা দর্শক ধরে রেখেছিলেন। এরপর দেশের কয়েকটি সিনেমা যখন মুক্তির জন্য প্রস্তুত, ঠিক তখনই জানা গেল, আমদানি করা কয়েকটি বাংলা সিনেমা আসছে। টানা কয়েক সপ্তাহ ছবিগুলো মুক্তি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশের চারটি সিনেমা মুক্তির তালিকায় আছে- সাইফ চন্দনের আব্বাস, দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর আকাশমহল, হাসান সিকদারের অবতার ও উত্তম আকাশের প্রেমচোর। এর মধ্যে দ্বিতীয়টি ইমপ্রেস টেলিফিল্মের সিনেমা।
অন্যদিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে চারটি ছবি আমদানি করা হয়েছে- শেষ থেকে শুরু, কিডন্যাপ, ভূতনাথ ডটকম ও বিবাহ অভিযান। অবশ্য জুনের শেষ সপ্তাহে ৪২টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে আমদানি ভোকাট্টা।
ভারতীয় পাঁচটি বাংলা সিনেমার মধ্যে চারটি আমদানি করেছে শাপলা মিডিয়া। এই প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী সেলিম খান বলেন, ‘আমি টাকা খরচ করে ছবি আমদানি করেছি। এসব ছবি না চালিয়ে রেখে দিলে যদি পাইরেসি হয়ে যায়, তাহলে দায় কে নেবে। এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত, ছবি দুটির একটি মুক্তি দেওয়ার।’ জানা গেছে, কিডন্যাপ এরই মধ্যে সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে নিয়মিত দেশের বাইরে ছবি রপ্তানি করেন প্রযোজক কামাল মো. কিবরিয়া লিপু। তিনি বলেন, ‘আমি শুধু বলব, এসব আলোচনা করে সমাধানের বিষয়। নিয়মকানুন অনেক থাকতেই পারে, নিজের দেশের স্বার্থ বিবেচনা করতে হবে।’
আব্বাস ছবির পরিচালক সাইফ চন্দন বলেন, ‘আতঙ্কের জায়গাটা হচ্ছে, জিৎ কিংবা দেবের ছবি বাংলাদেশে মুক্তি পেলে শুরুতে হল বুকিংয়ে আমরা পিছিয়ে পড়ব, যা মোটেও কাম্য নয়। তবে এটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি, ছবির মেধা নিয়ে যদি কথা হয়, তাহলে কিডন্যাপ কিংবা শেষ থেকে শুরু কোনোটাই টিকবে না। তা ছাড়া ছবিগুলো বাংলাদেশের অনেক দর্শকের দেখাও হয়ে গেছে।’
পরিচালক মাহমুদ হাসান শিকদার ‘অবতার’ ১৯ জুলাই মুক্তি দিতে প্রস্তুত। তিনিও বলেন, ‘যেসব ছবি আমাদের দেশে আসছে, সেগুলো ওদের দেশেই কোনো পাত্তা পায়নি। তারপরও কিছুটা সংশয় থেকে যায়। কারণ, বুকিংয়ে পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে। দর্শকদের জানাতে চাই, সুন্দর একটি গল্পে আমি ছবিটি বানিয়েছি। আপনারা আমাদের ছবিটি দেখে তারপর বিবেচনা করুন।’
এদিকে ভোকাট্টার খবর জানতে প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার নওশাদের সঙ্গে কথা বললে শুরুতেই জানালেন, ‘বড় বাঁচা বেঁচে গেছি। ভোকাট্টার ব্যবসায়িক প্রতিবেদন খুবই খারাপ। আমার প্রেক্ষাগৃহে এখন পাসওয়ার্ড চলছে।’
একই দিনে বাংলাদেশের ছবির সঙ্গে কলকাতার ছবি মুক্তির বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন এই প্রযোজক ও প্রদর্শক। তিনি বলেন, ‘আমার দেশের নির্মাতাদের বলব, আপনারা মোটেও এসবে ভীত হবেন না। স্ট্রং থাকেন, লড়ার মানসিকতা রাখেন।’