Select Page

ঢাকায় অ্যাকশন সিনেমার অগ্রপথিক জহিরুল হক

ঢাকায় অ্যাকশন সিনেমার অগ্রপথিক জহিরুল হক

জহিরুল হক বাংলা চলচ্চিত্রে স্থায়ী আসন পাওয়া এক নির্মাতা। ঢাকায় অ্যাকশন ধারার ছবির নির্মাণ শুরু তার হাতেই। সামাজিক ধারায়ও তিনি সফল। জহিরুল হক অভিনেতা হিসেবেও উজ্জ্বল।

১৯৪২ সালের ২৮ জানুয়ারি কুমিল্লা জেলার ভূরভুরিয়া গ্রামে জহিরুল হকের জন্ম। তিনি ১৯৯৩ সালের ২৪ নভেম্বর ঢাকায় মারা যান।

ষাটের দশকের শুরুতে মঞ্চে যুক্ত হন জহিরুল হক। ঢাকার বিভিন্ন মঞ্চে অভিনয় ও নাটক রচনা করেছেন সমানতালে। সুভাষ দত্তের হাত ধরে অভিনেতা হিসেবে চলচ্চিত্রে আবির্ভাব ঘটে তার। ১৯৬৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত পায় ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ নামে ঢাকার প্রথম অ্যান্থলজি ফিল্মটি।

একে একে অভিনয় করেন আলিঙ্গন, সন্তান, রং বদলায়, পদ্মানদীর মাঝি, অরুণোদয়ের অগ্নিস্বাক্ষী, সংগ্রাম, অনেক প্রেম অনেক জ্বালা, বসুন্ধরা, সারেং বউ, সূর্যদীঘল বাড়ি, ডুমুরেরফুল, ঘর জামাই, এখনই সময়, ঘরণী, রজনীগন্ধা, মহানায়ক, প্রেম কাহিনী, সারেন্ডার, সন্ধি, দুই জীবন, অন্ধবিশ্বাস, আদিল, চোরের বউ, মাস্তান রাজা ছবিতে।

টিভি নাটকেও পরিচিত মুখ ছিলেন জহিরুল। সাড়া জাগানো সংশপ্তক, ফেরা, তমা, ঢাকায় থাকি, ডুব সাঁতারসহ বহু নাটকে অভিনেতা প্রতিভা দেখিয়েছেন চিনি।

তবে সবচেয়ে সফল চলচ্চিত্র নির্মাণে। অনেক জনপ্রিয় ও ক্লাসিক ছবির সঙ্গে জড়িত তিনি। নিজের নির্মিত প্রায় সব ছবির কাহিনি-চিত্রনাট্য-সংলাপ তার। লিখেছেন অন্যদের জন্যও। তার লেখা থেকে উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র— আবির্ভাব (কাহিনি), সূর্য ওঠার আগে (কাহিনি-সংলাপ), পালা বদল (সংলাপ), রং বদলায় (কাহিনি-সংলাপ), পদ্মানদীর মাঝি (সংলাপ), নিজেরে হারিয়ে খুঁজি (চিত্রনাট্য-সংলাপ), নাচের পুতুল (চিত্রনাট্য-সংলাপ), রং বদলায় (কাহিনি-সংলাপ), রংবাজ (কাহিনী-চিত্রনাট্য-সংলাপ), সাধু শয়তান (চিত্রনাট্য-সংলাপ) ও লাঠিয়াল (কাহিনি)।

জহিরুল হকের পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘রংবাজ’, মুক্তি পায় ১৯৭৩ সালে। অন্যান্য ছবির মধ্যে রয়েছে কী যে করি, দম মারো দম, কেউ কারো নয়, ঘর জামাই, প্রাণ সজনী, প্রেম বন্ধন, চেনামুখ, সারেন্ডার, মরণপণ, কুসুমপুরের কদম আলী, বিজয়, জিজ্ঞাসা, গর্জন, রক্তের বদলা, চোরের বউ, জনি ওস্তাদ, সতীনের সংসার ও তুমি আমার।

জহিরুল হকের সিনেমার উল্লেখযোগ্য অংশ হলো গান। অনেক কালজয়ী ও জনপ্রিয় পাওয়া যায় তার পরিচালনায়। যেমন; সে যে কেন এলো না কিছু ভালো লাগে না, হৈ হৈ রঙিলা রঙিলা রে (রংবাজ), শোনো গো রুপসী ললনা আমাকে যখন তখন চোখ রাঙানো চলবে না (কী যে করি), ভালোবেসে গেলাম শুধু ভালবাসা পেলাম না (কেউ কারো নয়), ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, কী জাদু করিলা পীরিতি শিখাইলা (প্রাণসজনী), সবাইতো ভালোবাসা চায় হারায় (সারেন্ডার) এবং জ্বালাইয়া প্রেমের বাতি কোথায় তুমি থাকো রে (তুমি আমার)।

ছবি ও তথ্য ঋণ: আজাদ আবুল কাশেম


Leave a reply