ঢাকা অ্যাটাক : সেলসম্যানের চোখেমুখে আলোর ঝিলিক
অফিস থেকে ফেরার সময় বৃহস্পতিবার রাজধানীর শ্যামলী সিনেমার হলের সেলস এর দায়িত্বে থাকা মানুষটার সাথে কথা বলছিলাম।
তার চোখেমুখে যেন আলোর ঝিলিক। বুঝতে কষ্ট হল না- এই ঝিলিকের কারণ ‘ঢাকা অ্যাটাক’ নামের সিনেমা। জিজ্ঞাসা করলাম কালকে টিকেট হবে? উনি বললেন- সকালের টিকেট ছাড়া অন্য সময়ের টিকেট পাবেন না। ইভেন শনিবারের ও সকালের টিকেট ছাড়া অন্য সময়ের টিকেট পাবেন না, আমি অলরেডি রবিবারের টিকেট বিক্রি করছি! অগ্রিম টিকেট চাইতে আসা অনেকজনকে আজ ফিরিয়ে দিতে হয়েছে!
মনে মনে বললাম- পবিত্র গরু! (হলি কাউ!)
লাস্ট কোন সিনেমার এমন টিকেট বিক্রি হয়েছে জিজ্ঞাসা করার পরে তিনি বললেন- শাকিবের ‘নবাব’। একটু পর বললেন- তবে ‘আয়নাবাজি’র ধারেকাছে কিছু ছিল না ভাই, মনে হয়না অনেকদিন আর সেরকম সিনেমা হবে।একটা সিনেমা নিয়ে এই লেভেলের ক্রেজ হতে পারে, চিন্তাও করা যায়না!
তিনি বলে যাচ্ছিলেন- ঢাকা অ্যাটাকের যে অসাধারণ প্রচার হয়েছে, তাতেই মোর দেন এনাফ। আমাদের মিডিয়ার মানুষরা প্রচারে একদম গুরুত্ব দেন না, অথচ আয়নাবাজি আর ঢাকা অ্যাটাক এই দিকে একদম ডিফারেন্ট কিছু করেছে। ঘোড়ার গাড়িতে করে সারা ঢাকাতে ঢাকা অ্যাটাকের পোস্টার ঘুরেছে, ট্র্যাফিক আইন মানা হলে ঢাকা অ্যাটাকের টিকেট দেয়া হচ্ছে, প্রতিটা সরকারী বেসরকারি ভার্সিটিতে ঢাকা অ্যাটাক টিমের যাওয়া- এগুলা জাস্ট দুর্দান্ত। সাথে যোগ করলেন- ঢাকা অ্যাটাক যদি মোটামুটি মানের সিনেমাও হয়, এরপরেও এক সপ্তাহ টানা হাউজফুল যাবে, আর দর্শক যদি পছন্দ করে, তাহলে কমপক্ষে তিন সপ্তাহের আগে নামাচ্ছি না এই সিনেমা।
জিজ্ঞাসা করলাম- কেন এই লেভেলের হাইপ?
তিনি বললেন- পাবলিক ক্লাশ (সংঘর্ষ) দেখতে পছন্দ করে। এই সিনেমার ট্রেলার দেখেই বুঝা গেছে, এক সন্ত্রাসী সমানে মানুষ খুন করতে থাকবে আর পুলিশ তাকে ধরতে দিনরাত চেষ্টা করে যাবে। এই ইঁদুর বিড়াল খেলা মানুষ অনেক পছন্দ করে। আরেক ধরনের সিনেমার প্রতি আমাদের দেশের মানুষের আগ্রহ এখনো অনেক বেশি- যে সিনেমা পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেখা যায়। কতদিন পর যে আমাদের ভালো লাগতেসে ভাই, বলে বুঝাতে পারব না। আপনারা তো চাকরি করেন, ব্যবসা করেন, এর ফাঁকে সিনেমা দেখেন। আর আমাদের কাছে এই সিনেমাই রুটি রুজি। সিনেমা হল না চললে আমরা শেষ। এক মাসে ডুব, ঢাকা অ্যাটাক, গহীন বালুচর এর মতো সিনেমা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের ব্যাপার। সারা বছর প্রতি মাসে একটা করে এরকমের আলোচিত সিনেমা রিলিজ পাইলে আমাদের জন্য এনাফ।
লেখার একদম শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। ঢাকা অ্যাটাক বিগ বাজেটের সিনেমা, এই বাজেট রিকভার করতে হলে আমাদের হলে গিয়ে সিনেমা দেখা ছাড়া আর উপায় নাই, আমরা হল গেলেই ভবিষ্যতে এই ধরনের সিনেমা বানাতে বাকিয়া উৎসাহ পাবেন।চেন্নাই এক্সপ্রেস সিনেমার রাজেশ কান্নান এই সিনেমাতে একশন ডিরেক্টর এর ভূমিকায় ছিলেন। এই সিনেমাতে ব্যবহৃত হওয়া প্রত্যেকটি বন্দুক আসল। সিনেমার গান অলরেডি হিট। টিকাটুলির মোড়ে- গানটা শুনে মনে হয়েছে, এটাকেই বলে পারফেক্ট বাংলা আইটেম সং! সিনেমার ভিলেন কে এখনো পুরোপুরি দেখানো হয়নি- আগ্রহ ধরে রাখার কি চমৎকার কৌশল!
আরও অনেক কারণ আছে ঢাকা অ্যাটাক দেখার। সেইসব কারণ বিস্তারিত এই ভিডিওতে
অল দ্যা বেস্ট টু ঢাকা অ্যাটাক টিম। জয় হোক বাংলা সিনেমার!