ঢালিউড নায়কদের সিনেমা প্রতি পারিশ্রমিক
ঢাকাই চলচ্চিত্রের নায়কদের পারিশ্রমিক নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। কিন্তু হলিউড বা বলিউডের মতো এখানে সিনেমার বাজেট বা তারকাদের পারিশ্রমিক প্রকাশের খুব একটা চল নেই। সম্প্রতি তারকা, পরিচালক ও প্রযোজকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ঢাকার নায়কদের পারিশ্রমিক নিয়ে প্রথম আলোর জন্য প্রতিবেদন তৈরি করেছেন মনজুর কাদের। তার একটি সংক্ষিপ্ত রূপ বিএমডিবি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো–
শাকিব খান : দেড় যুগ আগে ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে কিং খানের। ক্যারিয়ার শুরু থেকে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অবশেষে সাত বছরের মাথায় প্রথম ব্যবসাসফল ছবি উপহার দেন শাকিব খান। এর পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ২০০৮ সালের শেষের দিকে হঠাৎ করেই দর বাড়িয়ে দেন শাকিব। ছবি প্রতি দর হাঁকেন ৪০ লাখ টাকাও। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শাকিবের পারিশ্রমিকের অংকটা কমতে থাকে। বর্তমানে তার পারিশ্রমিক ১৫ থেকে ২৫ লাখ টাকার মধ্যে থাকে।
অনন্ত জলিল : এক কোটি না হলে কিছুতেই রাজি হবেন না জানিয়েছেন খোঁজ-দ্য সার্চ চলচ্চিত্রের নায়ক অনন্ত। কিন্তু এখনো পর্যন্ত নিজের প্রযোজনার বাইরে অভিনয় করেননি তিনি। এ অভিনেতা বলেন, কিছু নির্মাতা আমাকে দিয়ে ছবি নির্মাণের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাঁদেরকে আমি সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছি, যদি এক কোটি টাকা পারিশ্রমিক দেওয়া হয় তাহলে আমি ছবিতে অভিনয় করতে রাজি আছি। এঁদের কেউ কেউ অবশ্য ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক দিতে রাজি হয়েছিলেন বলেই অনন্ত জানান।
ফেরদৌস : গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নেওয়া এ তারকার শুরু র্যাম্প মডেল হিসেবে। বুকের ভেতর আগুন ছবির কাজ শেষ হওয়ার আগেই মারা যান ছবির নায়ক সালমান শাহ। গল্পে কিছুটা পরিবর্তন এনে ফেরদৌসকে দিয়ে ছবির কাজ শেষ করেন ছটকু আহমেদ। এরপর মুক্তি পায় কলকাতার নির্মাতা বাসু চ্যাটার্জি পরিচালিত হঠাৎ বৃষ্টি। এই ছবির মাধ্যমে কেবল বাংলাদেশে নয়, কলকাতাতেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান ফেরদৌস। এরপর দুই বাংলায় অনেক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। আগে ছবি প্রতি ১২ থেকে ১৪ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিলেও এখন তার পারিশ্রমিক ৫ থেকে ৭ লাখ টাকার ঘরে।
আরিফিন শুভ : শোবিজে আরিফিন শুভর শুরু র্যাম্প মডেলিংয়ের মধ্য দিয়ে। পাশাপাশি রেডিও জকির কাজও করতেন। এরপর নাটকে অভিনয় করেন। তার প্রথম ছবির নাম ‘জাগো’। অগ্নি ছবির সাফল্যের পর চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালকদের কাছে নির্ভরযোগ্য নায়ক হয়ে ওঠেন শুভ। আর সর্বশেষ ছুঁয়ে দিলে মন ছবিটি শুভকে এনে দেয় আকাশছোঁয়া সাফল্য। শুভ বর্তমানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার মতো পারিশ্রমিক নিচ্ছেন।
বাপ্পি চৌধুরী : ২০১২ সালে ভালোবাসার রং মুক্তির আগেই একাধিক ছবিতেও চুক্তি স্বাক্ষর করেন বাপ্পি। আর ছবি মুক্তির পর পেয়ে যান জনপ্রিয়তা ও তারকাখ্যাতি। মাত্র তিন বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন এক ডজনেরও বেশি ছবিতে। বর্তমানে প্রতিটি ছবিতে অভিনয়ের বিনিময়ে ৭ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকার মতো পারিশ্রমিক নিচ্ছেন।
সাইমন সাদিক : ২০১২ সালে প্রথম ছবি ‘জ্বী হুজুর’ প্রশংসিত হয়। তবে পোড়ামন ছবিটি দারুণ দর্শকপ্রিয়তা পায়। তিন বছরের ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন ১০ টিরও বেশি ছবিতে। তুলনামূলকভাবে ছবির সংখ্যা কম হলেও তাঁর পারিশ্রমিকের অঙ্কটা ভালোই বলতে হয়। বর্তমানে ছবি প্রতি ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা পাচ্ছেন তিনি।
ইমন: শুরুটা হয়েছিল ছোটপর্দা দিয়ে। মডেলিংয়ের পাশাপাশি অভিনয় করতেন টিভি নাটকে। ২০০৭ সালে তৌকির আহমেদ পরিচালিত দারুচিনি দ্বীপ ছবির মাধ্যমে প্রথম চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন ইমন। ২০১২ সালে মুক্তি পাওয়া লালটিপ ছবিতেও তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়। ঢাকাই ছবির আলোচিত এই নায়কের ছবি প্রতি পারিশ্রমিকের অঙ্কটা চার লাখের কোটায়।
নিরব : মডেলিংয়ের মাধ্যমে শোবিজে আসেন নিরব। টিভি নাটকেও অভিনয় করেন তিনি। তাঁর প্রথম সিনেমা মন যেখানে হৃদয় সেখানে। প্রথম ছবিতে তিনি পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছিলেন ২ লাখ টাকা। এখন পর্যন্ত ঢাকাই ছবির এই নায়কের ১৯টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। কাজ চলছে আর তিন-চারটির মতো ছবির। ঢাকাই ছবির এই নায়ক ছবি প্রতি পারিশ্রমিক হাঁকাচ্ছেন ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা।
জায়েদ খান : পিরোজপুরের ছেলে জায়েদ খান। চলচ্চিত্রে নায়ক হওয়ার আশায় অংশ নেন এফডিসির ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ কার্যক্রমে। সৌভাগ্যক্রমে চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগটাও পেয়ে যান তিনি। ২০০৭ সালে ভালোবাসা ভালোবাসা ছবিটি মুক্তি পায়। ছবি প্রতি তার পারিশ্রমিক মাত্র দুই লাখের মতো।