তুমুল আপত্তির মুখে ক্ষমা চেয়ে সরানো হলো ‘ঘটনা সত্য’
ক্ষমা চাইলেন ‘ঘটনা সত্য’ নাটকের প্রধান দুই শিল্পী আফরান নিশো ও মেহজাবীন চৌধুরীসহ নির্মাতা রুবেল হাসান, নাট্যকার মঈনুল সানু এবং প্রযোজক এস কে সাহেদ আলী।
নাটকটি প্রকাশ হয়ে ২৪ জুলাই দুপুরে, পরদিনই সরিয়ে নেওয়া হয়।
‘ঘটনা সত্য’র গল্পে দেখা গেছে, বিলকিছ ও মুকুল পাশাপাশি দুটি ফ্ল্যাটের গৃহপরিচারিকা ও গাড়ির ড্রাইভার। তারা সব সময় এটা সেটা চুরি করে, কাজে ফাঁকি দেয়, মিথ্যা বলে! এতে মালিক পক্ষ নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়। শুধু তা-ই নয়, কাজের মেয়ে বিলকিছ বাজার থেকে সস্তা ও পচা সবজি কিনে আনে, ফ্রিজে রাখা খাবার এঁটো করে রাখে, বাসায় রাখা অন্যের কসমেটিকস নিজে ইচ্ছেমতো ব্যবহার করে, অপচয় করে। অন্যদিকে মুকুলও মিথ্যা বলে, ডিউটি বাদ দিয়ে অন্যত্র যাত্রী বহন করে, লুকিয়ে গাড়ির তেল বিক্রি করে। ঘটনাক্রমে বিলকিছ ও মুকুলের সম্পর্ক প্রণয়ে রূপ নেয়, গড়ায় বিয়েতে। জন্ম হয় একটি বাচ্চা। চিকিৎসক জানান, বাচ্চাটি স্বাভাবিক নয়- বিশেষ শিশু। বিলকিছ ও মুকুল ধরে নেয়, এটি তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত!
সমাজের বিভিন্ন অঙ্গন থেকে নাটকটির বিষয়বস্তু নিয়ে এসেছে আপত্তি। এই নাটকের মাধ্যমে কুসংস্কার প্রচার করা হয়েছে। প্রমাণের চেষ্টা হয়েছে, বিশেষ শিশু জন্ম নেওয়া মানেই বাবা-মায়ের পাপের ফসল! প্রকাশ হয়েছে বিশেষ শিশুদের পরিবারের ক্ষোভের ভিডিও। এমন সমালোচনার মুখে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভি নাটকটি ইউটিউবসহ অনলাইনের সব মাধ্যম থেকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হয়।
সংশ্লিষ্ট ক্ষমা চেয়ে বলছে, ‘আপনাদের অনেকেই জানিয়েছেন, এ নাটকের মাধ্যমে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগটির সাথে আমরা সহমত পোষণ করছি। বিষয়টি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। যারা আমাদের এ বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেছেন, সবাইকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানাই। সেই সাথে জানাই, প্রথম বার্তা পাবার পরপরই আমরা উপলব্ধি করি, অসাবধানতাবশত নাটকে আমরা ভুল একটি বার্তা দিয়েছিলাম। এরপর সঙ্গে সঙ্গেই নাটকটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিই।’
নাটকের দুই প্রধান শিল্পী আফরান নিশো ও মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, ‘প্রত্যেক বাবা-মা ও সন্তানের প্রতি আমাদের ভালোবাসা জানাই। সেই সাথে, ভবিষ্যতে এমন নাটক করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যা সঠিক বার্তা সমাজে ছড়িয়ে দেয় এবং দর্শকদের সঠিক পথে পরিচালিত করে। পুরো কাজটির সঙ্গে জড়িত সবার পক্ষ থেকে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ক্ষমা চাইছি।’