দীপংকর দীপন সম্পর্কে ৫টি ভুল ধারণা
জনপ্রিয় নির্মাতা দীপংকর দীপনকে নিয়ে দর্শকের কৌতুহলের নেই। সে সুবাদে তার সম্পর্কে ছড়িয়ে নানা ধরনের গল্প। এবার ‘অপারেশন সুন্দরবন’ পরিচালক নিজের সম্পর্কে ‘ভুল’ ধারণা ভাঙানোর মিশনে নামলেন।
সম্প্রতি ‘আমার সম্পর্কে ৫টি ভুল ধারণা’ শীর্ষক পোস্টে তেমন কিছু বিষয় তুলে ধরেন। আগ্রহী পাঠকরা পড়ে নিতে পারেন-
‘অনেকে ভাবে আমি খুব প্রিভিলেজড। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা সরকারের কাছে আমি গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টা মোটেও তা না, আমি খুব সাধারণ মানুষ। রাস্তায় বিপদে পড়লে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন করে পুলিশের সহায়তা চাই আমি। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোন অনুষ্ঠানে দাওয়াত পাইনা আমি। কোনদিন নিজের স্বার্থে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কারো সাহায্য নেই নাই। সরকারী কোন অনুষ্ঠানে কোন দাওয়াত পাই না। কলিগদের দেখি মাঝে মাঝে প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে যেতে, আমি কখনো দাওয়াত পাই না। তথ্য মন্ত্রণালয় বা অন্য কোন মন্ত্রনালয় আমাকে না ডাকলে সেখানে ঢোকার পাশ যোগাড় করার মত কনটাক্ট নাই আমার।
অনেকে ভাবে আমি ধনী, সেটাও খুব ভুল। সিনেমায় কাজ শুরু করার পর মানে নাটক বানানো বাদ দেবার পর মাঝে মাঝেই বাসা ভাড়া দিতে কষ্ট হয় আমার, ক্রেডিট কার্ড মাঝে মাঝেই ব্লক হয়ে যায়। নিজের জমানো টাকা থেকে প্রডাকশনের বিভিন্ন দেনা শোধ করে দেই- কিন্তু আমার পাওনাটা আদায় করতে পারিনা। বছর পাঁচেক থেকে একটা গাড়ী কেনার চেষ্টা করছি, কিনতে পারছি না । মাঝে মাঝেই সিএনজিতে চড়তে হয়, হাঁটতেও হয়। টাকা পয়সা আয় করতে আমার ভাল লাগেনা- হিসাব রাখতে আরো না।
অনেকে ভাবে আমি খুব মুডি। সেটাও ঠিক না। সিনেমা দেখে টানা কাঁদি আমি। সেটে জুনিয়র আর্টিস্ট থেকে শুরু করে লিড কাস্ট সবার সাথে একই রকম ব্যবহার করি আমি। সবার সাথে ফোনে একই রকম টোনে কথা বলি। শ্যুটিং নিয়ে আমি টেনশনে থাকি – তাই আমার ভ্রু কুঁচকে থাকে, প্রডাকশনের কোয়ালিটি নষ্ট হয়, এমন কারণ ছাড়া আমি কোনদিন কাউকে ধমক দিয়েছি বলে মনে পড়ে না। অপেক্ষাকৃত কম ক্ষমতাবান মানুষদের সাথেই আমার ভাল সম্পর্ক।
অনেকে ভাবে আমার অনেক কনটাক্ট। সেটাও বড় ভুল। যাদের সাথে কাজ করি- তাদের ছাড়া কারো নাম্বার নাই আমার কাছে। আমার নাম্বারও নাই কারো কাছে। ক্ষমতাবান কেউ আমাকে খুঁজলে কারো না কারো মাধ্যমে ফোন করেন। আমার ফোন খুব কম ব্যস্ত থাকে। এমন এমনও অনেক দিন পার হয়ে যায়- কোন ফোন আসেনা আমার কাছে। নিকেতনের অফিসটা ছাড়ার পর- কাজের বাইরে মানুষের সাথে যোগাযোগ আরো কমে গেছে।
অনেকে ভাবে আমি খুব বুদ্ধিমান। সেটাও ভুল। অনেক কিছুই চোখে পড়েনা আমার। সব সময় পাশে থাকা মানুষদের মধ্যে যদি কেউ একবছর ধরে মিথ্যা বলে- সেটাও ধরার ক্ষমতা আমার নাই। বারবার ঠকার পরও বোকার মত বারবার মানুষের সব কথা বিশ্বাস করি। আমার পাশে থেকে আমাকে নিয়ে গুটি খেলা খুব সহজ- আমি ধরতেই পারবো না। মিষ্টি ব্যবহার করে আমাকে দিয়ে অনেক কিছু করিয়ে নেয়া সম্ভব। একটু বুদ্ধিমান হলেই আমাকে ঠকানো সম্ভব।
আমি যে অবস্থানে আছি এই পাঁচটার সবগুলো আমি হতে পারতাম, আমার খুব নাগালের মধ্যে, কিন্তু আমি চাইনি কখনো। নিজের থেকে এলে এসেছে। কায়দা করি নাই। কায়দা করা আমি জানি, তবে সেটা সিনেমার জন্য। বাস্তব জীবনে না।
আমি অনেক বড় কিছু পারি। সেটা হয়তো অনেকে জানে। তাই ও নিয়ে আর কথা বলছি না।
আমি খুব সাধারণ মানুষ, কিছুটা নীরিহ ও কিছুটা অসহায়ও।’