Select Page

দুই বছর গবেষণার ফল দীপনের ‘অপারেশন সুন্দরবন’

দুই বছর গবেষণার ফল দীপনের ‘অপারেশন সুন্দরবন’

‍‘ঢাকা অ্যাটাক’-এর মুক্তির দুই বছর পর নতুন সিনেমা ‘ঢাকা ২০৪০’ এর কিছু অংশের দৃশ্যায়ন শেষ করেছেন দীপঙ্কর দীপন। এর পর শুটিং ফ্লোরে যাবে র‌্যাবের অ্যাকশন নির্ভর সিনেমা ‘অপারেশন সুন্দরবন’। এই ছবির কাহিনি লেখার আগে গবেষণায় দুই বছর ব্যয় করেছেন দীপন।

এই তথ্য দিলেন জনপ্রিয় থ্রিলার লেখক নাজিম-উদ-দৌলা। দীর্ঘ ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিষয়টি তুলে ধরে ‌‘অপারেশন সুন্দরবন’-এর সঙ্গে যুক্ত এই লেখক।

তিনি লেখেন, “যদি বলি একটা মুভি বানানোর জন্য একজন বাংলাদেশি ডিরেক্টর প্রায় দুই বছর ব্যয় করেছেন জাস্ট মুভির ব্যাকগ্রাউন্ড স্টাডি করতে গিয়ে, বিশ্বাস করবেন? আপনারা কি করবেন জানি না, আমার অন্তত বিশ্বাস করতে কষ্ট হতো। কিন্তু চিন্তা-ভাবনা বদলে গেলো “ঢাকা অ্যাটাক” এর নির্মাতা দীপংকর দীপন ভাইয়ের সাথে পরিচয় হওয়ার পর!

দাদা আমাকে একদিন ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, “নাজিম, তুমি কি অপারেশন সুন্দরবনের চিত্রনাট্য লিখবা?” আমি হাসিমুখে বললাম, “অবশ্যই দাদা।” তারপর জিজ্ঞেস করলাম, “দাদা, মুভির গল্পটা এখন কী পর্যায়ে আছে?” দাদা একটা মোটা ডিকশনারি সাইজের বই বের করে আমার সামনে রেখে বললেন, “এই পর্যায়ে আছে।” বইটা খুলে আমি হতবাক! পুরোটাই অপারেশন সুন্দরবন মুভির জন্য ব্যাকগ্রাউন্ড রিসার্চ!

গত বছরের শুরুতে যখন দীপনদার মাথায় সুন্দরবন নিয়ে একটা মুভি করার চিন্তা আসে; তিনি বুঝতে পেরেছিলেন এটা দুদিনের কাজ না, প্রচুর রিসার্চ লাগবে। এরপর তিনি সুন্দরবনের আশপাশ ঘুরে বেড়িয়েছেন। বনের ভেতরে আর সমুদ্রেও থেকেছেন অনেকদিন। কথা বলেছেন স্থানীয় মাঝি, জেলে, মাছ ব্যবসায়ী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, প্রাক্তন জলদস্যু থেকে শুরু করে নানার পেশার মানুষের সাথে। তুলে এনেছেন সুন্দরবনের এক অজানা অধ্যায়। পুরো রিসার্চপেপার একটা বই আকারে খুব তাড়াতাড়ি পাবলিশ করা হবে।

একটা মুভির প্রতি একজন নির্মাতার এতোটা প্যাশন, এতো ডেডিকেশন দেখে আমি সত্যিই হতবাক হয়ে গেছি। দাদা আমার ছোটোখাটো একটা ক্লাস নিলেন সুন্দরবনের উপরে। আমি রিয়েলাইজ করলাম- সুন্দরবনকে আমরা বাইরে থেকে যা দেখি আসলে তা না! কী যে অপার রহস্য লুকিয়ে আছে বনের অভ্যন্তরে তা সাধারণ মানুষের চিন্তার অতীত!

দীপনদা জানালেন- “মুভির গল্পটা আরও ডেভেলপ করার জন্য আরেকবার সুন্দরবন যেতে হচ্ছে, লোকেশন দেখে আসবো আর কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দরকার। তোমার যাওয়াটা ইমপর্ট্যান্ট।”

আমি তো পড়ে গেলাম ঝামেলায়! কারণ আমি একজন ফুলটাইম জব হোল্ডার। চাইলেই ছুটি নিয়ে ফেলা পসিবল নয়। তাছাড়া ঈদের আগ মুহূর্তে এখন কাজের চাপও বেশি। কিন্তু আমি সত্যিই গর্বিত যে আমি Analyzen-এর এমপ্লয়ি। আমাদের বসেরা কেউ টিপিক্যাল বস নন। বড় ভাই বা আপুর মতোই তাদের ব্যবহার। এমপ্লয়িদের সমস্যা আর প্রয়োজনের মুহূর্তগুলো তারা বোঝেন। একাউন্ট ডিরেক্টর প্রিয় যারিয়া আপু দুইদিনের ছুটি একনলেজ করে দিলেন। আমার খুশি তখন দেখে কে!

তারপর আর কি? ঢাকা ছেড়ে চলে এলাম সুন্দরবনের সন্নিকটে। সারাদিন খুব দৌড় ঝাপের পর এখন মোটা ডিকশনারি আই মিন সেই রিসার্চবুকটা নিয়ে বসেছি। সহকারী পরিচালক বিদ্যুৎ ভাই আর আতিকের সাথে পরিচয় হয়েও খুব ভালো লাগছে। তাদের মতো মুভি পাগল মানুষের হাত দিয়েই ভালো কিছু নির্মাণ হওয়া সম্ভব! ইনশাআল্লাহ ঢাকায় ফিরেই চিত্রনাট্যে হাত দেবো। আমার জন্য দোয়া করবেন সবাই। দীপনদার জন্য তো অবশ্যই করবেন। কারণ আমাদের ডায়িং ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিটাকে বাচিয়ে তোলার জন্য উনার মতো মানুষের এখন খুব প্রয়োজন!”

১৩ জুন ঢাকার একই হোটেলে ‘অপারেশন সুন্দরবন’-এর ঘোষণা আছে। তবে কারা অভিনয় করছেন জানানো হয়নি।


Leave a reply