দেশজ সিনেমাশিল্পে ভাতৃত্ব ও উদারতার দৈন্যতা!
ওয়ারফেজ নিয়ে ম্যাক ভাই এর কথা গুলো ছিল অনেকটা এরকম –
ওই সময়টাতে অন্যান্য ব্যন্ড হয়তো হাজার এর চাইতে বেশি মানুষের জন্য বাজাচ্ছে কিন্তু ওয়াফেজ এর শ্রোতা ২০/২৫ জনই। যারা খুবই সফিসটেকেড।
লক্ষ্যনীয় ম্যাক ভাই খুবই বঙ্গজ মেলোডিয়াস রক করতেন সেই সাথে ফোক ফিউশন, অপরদিকে ওয়ারফেজ বরাবরই মেটাল তাদের সাউন্ডও পাশ্চাত্যের আদলেই। তবুও মাকসুদ ভাইরা সহ দেশের অন্য কোন ব্যন্ড ওয়াফেজকে স্বাগত জানাতে দ্বিধা করেনি এবং আজকের দিনে ওয়াফেজ আমাদের গর্ব।
ব্যন্ড সংগীতে এই ভাতৃত্ব ও উদারতা দেখা গেছে কারন সেখানে কখনও প্রতিভার কমতি ছিলনা। পুরোনরা হাজার দর্শক (মুল দর্শক) ধরে রেখেছে নতুনেরা ২০/২৫ জন করে নতুন দর্শক তৈরী করেছে।
আমাদের সিনামাতে আন্তর্জাতিকভাবে পুরষ্কৃত বেশিরভাগ ছবির দর্শক সংখ্যা কিন্তু খুবই নগন্য এবং মুলধারা যতভাবে পারে এই সৃজনশীল ছবিগুলোকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টায় থাকে।
তবে কি মুল ধারায় আসলেই প্রতিভার অভাব?
কোটি টাকার ছবি আলাদের কি উচিত নয় এই লাখটাকার ছবি আলাদের বুকে টেনে নেয়া? তাদের আন্তর্জাতিক সফলতাগুলোকে সম্মান করা?
আর যাদের ধারনা এই লাখ টাকার ছোট ছবিগুলো দর্শক কমাচ্ছে তাদের বলব, না আপনারা দেশি বা সাবকন্টিনেন্ট এর সিনেমার ইতিহাসটা বোঝেন না আন্তর্জাতিক সিনেমার।
এই ছোট ছবিগুলো যেহেতু সব ধরনের দর্শকের জন্য বানানো হয়না তাই মুল দর্শকদের উপর তাদের প্রভাবও থাকেনা। কিছু ক্ষেত্রে এরা নতুন দর্শক শ্রেনী আনতে পারে এবং তা সব দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
বরঞ্চ মুল ধারার সিনেমা গুলো যেগুলো সর্বসাধারনের জন্য বানানো হয় এবং বিশাল দর্শকশ্রেনী যা দেখতে হুমরী খেয়ে পড়েন সেগুলো রকমারী ব্যর্থতাই সিনেমার প্রতি দর্শকের অনাগ্রহের মুল কারন।
তাই বিভিন্ন প্রকার সিনেমা ও বিভিন্ন দর্শকের সিনেমা বাদ দিয়ে সবাই মিলে বিশাল বিশাল বাজেটের সর্ব দর্শকের সিনেমা বানিয়ে লাভ হবেনা যদি সিনেমাগুলো যুগোপযোগী ও ভালো হয়।
এই মুক্ত বাজারে মুলধারার পাল্লা যখন হলি ও বলির সাথে , দর্শক একই টাকায় বাইরের সিনেমা দেখতে পায় এবং আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছেনা বিশাল টাকা খরচ করে ছবিতে হলির জৌলস আনা সেক্ষেত্রে অনেক ছোট ছোট বাজেটের ছবি হতে পারে যেগুলো একেবারেই আমাদের গল্প বলে।
প্রমান হিসাবে কোলকাতার সিনেমা ইন্ডাস্ট্রী আছে…. বিশাল বাজেট যেখানে একের পর এক ফ্লপ খাচ্ছে সেখানে কৌশিক, সৃজিত, মৈনাকদের ছোট বাজেটার ছবিগুলো করছে দারুন ব্যবসা। ফলশ্রুতিতে ওখানকার প্রযোজকেরা হেসে খেলে ছবির পর ছবি করছে আর এখানে একের পর এক ডাক মারছে, ফেবু আর অনলাইনে ছবি হিট করিয়ে সাইনবোর্ড এর মতো প্রানহীন হাসি দিচ্ছে।
.
দু:খ হয় এই ভেবে যে, ওপারে এখনও সত্যজিত, ঋতিক এর ছবি নিয়ে গবেষনা করে নতুনরা, বের হয় কৌশিক, সৃজিত এর মতো প্রতিভা….
আমাদের জহীর রায়হান, আলমগীর কবির, তারেক মাসুদরা পথ দেখিয়ে গেলেও আমাদের নতুনরা চর্চা করে বলিউডি মাসালা ছবির হাস্যকর নির্মান।
-আফজাল হোসেন মুন্না
নির্মাতা ও লেখক
# মাকসুদ ভাই এর সাক্ষাৎকারের লিংক
১. ছবির প্রচারটা খুব বেশি জরুরি ।।
২. Cineplex এর অভাব ( সারা দেশে আরও ৪/৫ টা Cineplex হইলেই ছবিগুলো ব্যবসা সফল হবে । চট্টগ্রাম এবং সিলেট এর দর্শকরা ইচ্ছা করলেও ছবি দেখার কোন উপায় নাই )