নতুন সেই পরিচালক স্ক্রিপ্টটি চুরি করেছে: পপি
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়িকা পপি। অসংখ্য জনপ্রিয় ও আলোচিত চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন তিনি। এখনও নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন চলচ্চিত্রে। সম্প্রতি ‘দেহ’ চলচ্চিত্রে তাকে হটিয়ে নতুন অভিনেত্রী অমৃতা খানকে কাস্ট করা হয়েছে। এই বিষয়সহ চলচ্চিত্রে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন রবি হাসান। দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত সাক্ষাতকারটি বিএমিডবি পাঠকদের জন্য তুলে দেয়া হলো-
সম্প্রতি অমৃতা খান সংবাদের শিরোনাম হন, আপনার বদলে তাকে কাস্ট করায়। এই বিষয়টি নিয়ে কী বলবেন?
এর সত্যতা কেউ যাচাই করার চেষ্টা করেনি। তাই এ রকম শিরোনামে সংবাদ হয়েছে। ‘দেহ’ ছবিতে আমিই কাস্ট ছিলাম, এখনও আছি। কিছু লোক আমরা যারা সিনিয়র আছি; যেমন শাবনূর–মৌসুমী, তাদেরকে নিয়ে সমালোচনার চেষ্টা করছে। তারা এ দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের ঐতিহ্য। যদি সত্যটা খোঁজার চেষ্টা করে তাহলে দেখবে যে, ‘দেহ’ ছবির পুরো কপিরাইট করা হয়েছে আজ থেকে দু’বছর আগে, যার নম্বর ১২২২৭। ছবিটির গল্পও লিখেছেন সালমান হায়দার এবং পরিচালনাও করছেন তিনি। সরকারিভাবে এই কপিরাইট করার পাশাপাশি তিনি গানের কাজও শেষ করেছেন। ছবিটির পরিচালক আমাকে জানিয়েছেন যে, স্ক্রিপ্টটি নতুন এই পরিচালক কোনো একভাবে চুরি করেছে। নতুন ওই পরিচালক যদি ক্ষমা না চায় তাহলে সালমান হায়দার মামলাও করতে পারেন। এরইমধ্যে তিনি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যাই হোক, কিছু কিছু লোক সিনিয়রদের সম্মান জানাতে ব্যর্থ। নবাগতরা কাজ খুঁজবে এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু কাজের নামে ফাঁদে ফেলে দেওয়া ঠিক নয়। নবাগতরা পরিপূর্ণ অভিনেত্রী হতেও ৫ বছর সময় লেগে যাবে। এদের অনেকেই সংবাদের শিরোনাম হওয়ার জন্য এসব কাজ করে থাকেন।
‘দেহ’ ছবিটির ভবিষ্যত্ কী তাহলে?
ভবিষ্যত্ আসলে পরিচালক সালমান হায়দারই ভালো বলতে পারবেন। তিনি আমাকে অগ্রিম সম্মানীও প্রদান করেছেন। সম্মানী যেহেতু প্রদান করেছেন নিশ্চয়ই ছবিটির কাজ শেষ করবেন। তিনিই জানিয়েছেন, যদি নতুন ওই পরিচালক ক্ষমা না চায় তাহলে তিনি আইনী ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবেন। এভাবে স্ক্রিপ্ট চুরি করে কাজ করে কখনও ক্যারিয়ার গড়া যায় না। কাজের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। তাহলেই কাজে সফলতা খুঁজে পাওয়া যায়।
অনেক পরিচালকরাই এখন একেবারে নতুনদের নিয়ে কাজ করছেন। আপনাদের প্রতি তাদের অনাস্থার কথাও প্রকাশ করছেন। এ বিষয়ে কী বলবেন?
এটার ফলাফল আসলে দর্শকরাই দেবে, তারা দিয়েছেও।
রাজ্জাক, ববিতা, শাবানা, শাবনূর, মৌসুমী বা আমি—কেউ কিন্তু খুব সহজে এই জায়গাটায় আসিনি। আমরা কী দিয়েছি ইন্ডাস্ট্রিকে তা শুধু আমি একা নই, সমগ্র জাতি জানে। আমরা তো কাজ করতে প্রস্তুত, কিন্তু আমাদেরকে দিয়ে চলচ্চিত্র করানোর লোকের সংকট ইন্ডাস্ট্রিতে। একটা প্রপার ছবি বানাতে অনেক কিছু লাগে। আমরা সবকিছু হিসেব করেই একটা ছবির কাজ করি। যেমন ধরুন রানা প্লাজার কথাই, যদি ভবনটি প্রপারভাবে নির্মাণ হতো, তাহলে নিশ্চয়ই এতবড় দুর্ঘটনা ঘটত না। ঠিক তেমনি, আমরা কাজ করার সময় ভাবি দর্শকরা যেন হতাশ না হয়, প্রযোজককে যেন লেজ গোটানোর পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়। নবাগতরা আলোচনা বা পর্দায় বেশি বেশি আসার জন্য মানের চেয়ে সংখ্যার দিকে পা বাড়ায়। এটা ঠিক নয়। এ কারণেই কিন্তু গত চার-পাঁচ বছরে ছবি এসেছে অনেক, কয়েকটি হিটও হয়েছে, কিন্তু ওসব হিরো-হিরোইনের দ্বিতীয় ছবির দিকে নজর দিলে দেখা যাবে তারা ব্যর্থ নিজেদেরকে ধরে রাখতে।
বিগত দিনে শাবনূর-মৌসুমী এবং আমিই কিন্তু কাজের ধারাবাহিকতাটা ধরে রেখেছি। আমাদের পরে অনেকেই এসেছে। তাদের অনেকে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। অনেকে আবার হারিয়েও গিয়েছে। আমাদেরকে যারা মুছে ফেলার চেষ্টা করছে, তারা ভুল করছে। কাজ দিয়ে আমরা মানুষের মধ্যে আছি, কাজ দিয়ে আগামী দিনেও মানুষের ভালোবাসা অর্জন করব।