
নীলের ফাঁদে ‘নীলচক্র’
নীল রং বেদনার হয় আবার আকাশটাও নীল হয়। এক নীল দেখে আমরা প্রায়ই মুগ্ধ হই আবার আরেক নীলে অশ্রুসিক্ত হই। ‘নীলচক্র’ ছবি সেই বেদনার নীল রঙ হয়ে উঠেছে। পরিচালনায় মিঠু খান।

‘নীলচক্র’ বেশকিছু বছর আগে নির্মিত ছবি। ছবির কনটেন্ট বেশ ভালো। প্রযুক্তির সুবিধাজনক দিককে সহজেই লুফে নিয়ে একটি প্রজন্ম যে ভুলগুলো করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত সেই বাস্তবতাকে দেখানোর গল্প। ভালো মেসেজ আছে শুধু ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে এ ছবিকে কিছুটা পিছিয়ে থাকা মনে হবে এবং সেটি নির্মাণের দিক থেকে।
গতবছর ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ওমর’ ক্রাইম থ্রিলার ছবি ছিল যেখানে স্লো স্টোরি টেলিং-এ বেশ পরিণত একটি ডিরেকশনের ছাপ ছিল এবং সেটি অভিনয়, বিজিএম, দারুণ টুইস্ট এসবের যোগসাজশে। ‘নীলচক্র’-র স্টোরি টেলিংও স্লো কিন্তু পরিণত হয়ে উঠতে পারেনি। পরিচালক মিঠু খান অবশ্যই মানসম্মত একটি ছবি নির্মাণ করেছেন কিন্তু যে অ্যাফোর্টটা পেলে ছবিটি পরিণত হয়ে উঠত, স্টোরি টেলিং-এর পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়গুলোর প্রতি ভালোভাবে নজর দিলে ছবিটি আরো উপভোগ্য হয়ে উঠত সেটি হয়নি। ছবির বাজেট স্বল্পতাও স্পষ্ট, সম্ভবত মিঠু খান পর্যাপ্ত বাজেট পাননি নয়তো ছবিটি আরো বেটার জায়গায় যাবার অনেক বেশি সম্ভাবনা ছিল। একটি সম্ভাবনার মৃত্যুও বলা যেতে পারে।
ছবির গল্পে বেশকিছু চরিত্র ভিকটিম হয়ে উঠেছে একটি চক্রের কাছে যারা প্রযুক্তির সুবিধায় একটি প্রজন্মকে মোহের বশবর্তী করে রেখেছে। সেই মোহই চক্রটির কাছে অব্যর্থ মহৌষধ। চক্রটিকে ধরার কাজে আরিফিন শুভ ও তার টিম কাজ করে। ধরতে পারে কিনা বা শেষে গিয়ে কি হচ্ছে সেটাই ছবির চূড়ান্ত দিক।
শুভ তার অভিনয় ভালোভাবেই করেছে। নায়িকা মন্দিরা চক্রবর্তীর সৌন্দর্য ও অভিনয় দুটোই ভালো। অন্যান্য চরিত্রের মাঝে ফজলুর রহমান বাবু কিছুটা ভিন্ন ছিল আর শেষের টুইস্টে নতুন একজনকে পাওয়া যায় যেটি গল্পের গতিতে আনএক্সপেক্টেড ছিল। প্রিয়ন্তীও ভালো অভিনয় করেছে। মনির আহমেদ শাকিল নেগেটিভে বরাবরের মতোই ভালো।
গানের মধ্যে ‘পথে যেতে যেতে’ রোমান্টিক এবং এটিই ছবির একমাত্র উল্লেখ করার মতো গান ছিল।
‘নীলচক্র’ কতদূর যাবে সেটি সময়ই বলে দেবে। তবে ছবির নায়ক আরিফিন শুভ তার কাজ ঠিকভাবে করেছে অন্যদিকে পরিচালক মিঠু খানেরও মানসম্মত ছবি নির্মাণের চেষ্টা স্পষ্ট শুধু প্রযোজনার ভূমিকাই ছবিটিকে সমালোচিত করতে পারে অন্যকিছু নয়।
রেটিং – ৭/১০