
নুসরাত ফারিয়ার গ্রেফতারে প্রতিবাদ, জুলাই-আগস্টে কোথায় ছিলেন তিনি
থাইল্যান্ড যাওয়ার সময় রবিবার (১৮ মে) নায়িকা-গায়িকা নুসরাত ফারিয়া ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক হন। এরপর জানা গেছে, তারা বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় করা একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। যেখানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঘটনায় তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আসামি করা হয়। পরদিন সোমবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নুসরাত ফারিয়ার সহকর্মীদের অনেকে। জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গড়ে উঠা রাজনৈতিক দল এনসিপিও বিবৃতি দিয়েছে। এছাড়া একাধিক সংবাদমাধ্যমে অভ্যুত্থান চলাকালে এ নায়িকার অবস্থান নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী
আমি সাধারনত চেষ্টা করি আমার মন্ত্রণালয়ের কাজের বাইরে কথা না বলতে। কিন্তু আমার তো একটা পরিচয় আছে, আমি এই ইন্ডাস্ট্রিরই মানুষ ছিলাম এবং দুইদিন পর সেখানেই ফিরে যাবো। নুসরাত ফারিয়ার গ্রেফতার বিব্রতকর একটা ঘটনা হয়ে থাকলো আমাদের জন্য। আমাদের সরকারের কাজ জুলাইয়ের প্রকৃত অপরাধীদের বিচার করা। ঢালাও মামলার ক্ষেত্রে আমাদের পরিষ্কার অবস্থান প্রাথমিক তদন্তে সংশ্লিষ্টতা না থাকলে কাউকে গ্রেফতার করা হবে না। এবং সেই নীতিই অনুসরণ করা হচ্ছিলো।
ফারিয়ার বিরুদ্ধে এই মামলাতো অনেকদিন ধরেই ছিলো। সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে গ্রেফতারের কোনো উদ্যোগ নেয়ার বিষয় আমার নজরে আসেনি। কিন্তু এয়ারপোর্টে যাওয়ার পরেই এই ঘটনাটা ঘটে। আওয়ামী লীগের সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ গমনকে কেন্দ্র করে ক্ষোভের পর ওভার নারভাসনেস থেকেই হয়তোবা এইসব ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। কয়দিন আগে ব্যারিস্টার আন্দালিব পার্থের স্ত্রীর সঙ্গেও এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে। এইসব ঘটনা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য না।
আমি বিশ্বাস করি ফারিয়া আইনি প্রতিকার পাবে। এবং এই ধরনের ঢালাও মামলাকে আমরা আরো সংবেদনশীলভাবে হ্যান্ডেল করতে পারবো-এই আশা। আমাদের মনে রাখতে হবে আমাদের প্রধান কাজ জুলাইয়ের প্রকৃত অপরাধীদের বিচার করা।
আশফাক নিপুন
এভাবেই দিনে দিনে প্রকৃত খুনী এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা দুর্বল করতে অন্যদের সফট টার্গেট করা হয়ে আসছিল এবং করা হচ্ছে। এটাকে আর যাই হোক, সংস্কার বলে না সরকার। হত্যাচেষ্টার যে মামলা করা হল এবং যে হত্যার সময় তিনি দেশেই ছিলেন না, সেই অভিনেতা নুসরাত ফারিয়াকে গ্রেপ্তার এবং কারাগারে প্রেরণ দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই ইঙ্গিতই দেয়।
আমরা জুলাই গণহত্যার সুষ্ঠু বিচার চাইছিলাম। কোনরকম প্রহসন চাই নাই, এখনো চাই না। চিহ্নিত অপরাধীদের পালিয়ে যাওয়া/পালাতে দেয়া এবং ঢালাও গায়েবী মামলাবাজির নাটক বন্ধ করেন।
নাজিফা তুষি
একজন অভিনেতা সে কোথায় অভিনয় করবে, কেন করবে সেটা তার খুবই ব্যক্তিগত অধিকারের বিষয়। তার যদি মনে হয় এই কাজটা তার করা উচিত, তাহলেই সেটা সে করে। এখানে আর সবার মতোই শিল্পী স্বাধীন। আর রাষ্ট্র ঠিক করে এটা সে সেন্সর করবে কি না। সে জন্য রাষ্ট্রীয় আইন আছে। একটা আর্ট যেমন মানুষকে বিনোদন দেয় আবার অনেক সময় আঙুল দিয়ে অনেক কিছু দেখিয়েও দেয়। যা অনেকের ভালো নাও লাগতে পারে। একটা দেশে না না মতাদর্শের মানুষ থাকে। শিল্পীরাও তার ঊর্ধ্বে না। আর্ট এর ফর্ম অনুযায়ী অনেক ধরনের কাজ হয়। প্রেম, রাজনীতি, দেশ, মানুষ এসবই তো শিল্পের বিষয়বস্তু।
কোনো কাজ মানুষকে শুধু বিনোদন দেয় আবার কোন কাজ মানুষকে ভাবায় অথবা ইতিহাসকে তুলে ধরে। কাজের মান ও উপস্থাপন এর উপর ভিত্তি করেই সেটা গ্রহণযোগ্য হয় কিংবা হয় না। সেটার বস্তুনিষ্ঠতাই ঠিক করে দেয় কাজটার মান কি হবে। সেখানে কোন ঐতিহাসিক চরিত্রে অভিনয় করা কোন অপরাধ হতে পারে না। একটা মতাদর্শ তো দেশের পুরো জনগণের হতে পারে না। হতে পারে কিছু মানুষ সেই মতাদর্শে বিশ্বাস করে না। তাই বলে আপনি সেই চিন্তাকে গুড়িয়ে দিতে পারেন না। এটা মনে হয় সম্ভবও না। যদি তাই হয় তাহলে এখন যা হচ্ছে বা হবে তাঁর জন্য ভবিষ্যতে আরও কিছু মানুষকে এরকম অন্যায় মেনে নিতে হবে।
এখনো আমাদের রাষ্ট্র চলছে বৈষম্যর মধ্য দিয়ে। রাষ্ট্রর বৈষম্য আচরণ একটুও পরিবর্তন হয় নাই। এই আন্দোলনের সময় চিৎকার করে বলা হয়েছিল ‘কোটা না মেধা’ আমরা চিৎকার করে তখন বলছিলাম মেধা মেধা। ‘বৈষম্য না সাম্য’ সাম্য সাম্য…. কোথায় সাম্য? মেধা আর সাম্যর কোন কিছু কি আমাদের চোখে পড়ছে? এসব দেখেও এখনো আমরা না দেখার ভান করে থাকি। মনে হয় কিছু না বলাই মনে হয় ভালো। যারা এখনো অকারণে চিৎকার করছে, সেটা যতই অন্যায় হোক রাষ্ট্র মনে হয় সেটাই শুনছে। আমরা নিজেদের পিঠ বাচিয়ে চলছি। কিন্তু ঘটনা যখন বার বার ঘটতে থাকে তখন আমরা আবার নিরুপায় হয়ে পড়ি। আমি একজন অভিনেত্রী হয়ে আমার সহকর্মীদের সাথে ঘটে যাওয়া বার বার অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমার স্বর উচ্চ করে বলতে চাই… এই অন্যায় আমি মেনে নিবো না। এই দমন বন্ধ করো রাষ্ট্র …।
সিয়াম আহমেদ
যাদের আইনের আওতায় আনা দরকার, তারা প্রটোকল নিয়ে সপরিবারে দেশের বাইরে চলে যায়। তারা যাওয়ার পর আমরা জানতে পারি যে তারা চলে গেছে। আর এয়ারপোর্টে আটকানো হয় কাকে? আমাদের সহকর্মী ফারিয়াকে! এরপর কোর্টে ওঠানো হয়, তার জামিনও নামঞ্জুর হয়। এরচাইতে হাস্যকর আর কী হতে পারে?
আর্টিস্ট, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ কিংবা যেকোনো প্রফেশনের কেউই আইনের উর্ধ্বে না। কিন্তু ফারিয়ার অপরাধটা কী? কোনো সিনেমায় কাজ করা নিশ্চয়ই কোনো আর্টিস্টের অপরাধ হতে পারে না। একই সিনেমায় বাংলাদেশের শত শত আর্টিস্ট কাজ করেছে, অডিশন দিয়েছে। এখন সবাইকে কি জেলে ভরবেন? যে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেখানে ফারিয়ার নাম থাকাটা কতটা হাস্যকর, তা সংশ্লিষ্ট সকলেই জানেন। একটা মা*র্ডার কেইসে ৩০০-৪০০ আসামীর ভেতর আর্টিস্টদের নাম ঢুকিয়ে দেয়া একটা ফাজলামো ছাড়া আর কিছু না।
ফারিয়ার সাথে যা হচ্ছে, তা স্রেফ প্রহসন। অবিলম্বে ফারিয়ার মুক্তি চাই। আর আমরা আর্টিস্টরাও মাশাআল্লাহ এত ইউনাইটেড, একবারে শুধু নিজের বেলাতেই এক্সপেক্ট করব যে সবাই কথা বলবে। আর বাকি সময় আমরা চুপচাপ থাকব। কী বলব আর এই নিয়ে! কিছু বলার নেই…
সরকারের পলিসিমেকারদের বলব, টু ডু লিস্টটা ঠিক করেন কাইন্ডলি৷ এত এত কিছু করার আছে, সেসব না করে আর্টিস্টদের হয়রানি করা বন্ধ করেন। As a nation we have bigger and more important things to focus on. কিছু একটা হলেই আর্টিস্টদের এভাবে হয়রানি করে দেশের মানুষের অ্যাটেনশন ডাইভার্ট করে আমাদের হাসির পাত্র বানানো হয়। আর্টিস্টরা এতটাও সস্তা না৷ একটা সভ্য দেশে এমন হওয়ার কথা না। Artists should not be taken for granted.
হাসনাত আবদুল্লাহ
সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনিকে দেশ থেকে নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, শিরীন শারমিনকে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে বাসায় গিয়ে পাসপোর্ট করে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল জানুয়ারিতে হওয়ার কথা থাকলেও মে মাসে এসেও শুরু হয়নি।
ইন্টেরিম, ৬২৬ জনের লিস্ট কোথায়? ৬২৬ জনকে নিরাপদে বের করে দিয়ে এখন নুসরাত ফারিয়াকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে বোঝাতে চাচ্ছেন আপনারা খুব বিচার করছেন? এগুলো বিচার নয়, এগুলো হাসিনা স্টাইলে মনোযোগ ডাইভারশন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)
ভাটারা থানায় দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়াকে গতকাল রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরবর্তীতে আজ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপি মনে করে এই ধরণের ঘটনা বিচার প্রক্রিয়াকে প্রহসনে পরিণত করছে। অথচ আমরা দেখেছি, জুলাই অভ্যুত্থানে হামলা ও গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ চলতি মাসেই কোনো রকম বাধাবিপত্তি ছাড়াই দেশত্যাগ করেছেন। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সেনানিবাসে আশ্রিত ৬২৬ জন ব্যক্তির পরিচয় এখনো প্রকাশিত হয়নি। উপরন্তু, জুলাই গণহত্যার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত পতিত ফ্যাসিবাদি ও এর সমর্থকরা এখনও জনপরিসরে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এদেশের নাগরিকবিরোধী অপতৎপরতা জারি রেখেছে। ফলে জুলাই গণহত্যার সাথে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় না এনে এ ধরণের লোকদেখানো ও ঢালাওভাবে আসামী করা মামলায় গ্রেফতার ও জামিন না দিয়ে কারাগারে প্রেরণের ঘটনা গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে লঘু করে দেখানোর প্রবণতা সৃষ্টি করছে।
আমরা মনে করি, বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামো ও প্রশাসনের মধ্যে থাকা একটি পক্ষ এই ধরণের অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ‘জুলাই গণহত্যা’ এবং এর বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। অথচ এখন পর্যন্ত এই গণহত্যার বিচারে আমরা দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। বিচার কার্যক্রমকে গতিশীল করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল – ২ গঠনের সিদ্ধান্ত নিলেও এখন পর্যন্ত এর বাস্তবায়নকল্পে আমরা কোনো প্রজ্ঞাপন দেখতে পাইনি।
আগামী জুলাই মাসের মধ্যেই জুলাই গণহত্যার বিচারপ্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায় জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপি। সেই লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আশু ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানাই আমরা। এছাড়াও, হরেদরে মামলা এবং মামলা বাণিজ্যের বিষয়টিকে আমলে নিয়ে মামলা গ্রহণের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আহ্বান জানায় এনসিপি। ……
জুলাই–আগস্টে কোথায় ছিলেন নুসরাত ফারিয়া
গত বছর জুলাইয়ে প্রথম সপ্তাহে দেশে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনাসহ বেশ কিছু আয়োজন অংশ নিয়েছিলেন নুসরাত ফারিয়া। সেসব ছবি তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেন। সপ্তাহখানেক পর ১২ জুলাই ফারিয়া এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, ভালোভাবে কানাডা পৌঁছেছেন। পরবর্তী সময়ে কানাডার ক্যালিগরি শহরের বেশ কিছু আয়োজনে অংশ নেন এই অভিনেত্রী। সেসব ছবি ফেসবুকে পোস্ট করতে থাকেন। এসব আয়োজনে তাঁর সঙ্গে ছিলেন জায়েদ খানসহ অনেকে।
দেশে শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী দাবি সরকার না মানায় ক্রমেই জুলাই আন্দোলন পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে থাকে। জড়ো হতে থাকেন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তাদের নানাভাবে বাধা দিতে থাকে স্বৈরাচারী সরকার। পুলিশের গুলিতে নিহত হন রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদসহ ৬ জন। এই খুনের প্রতিবাদে সারা দেশে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।এই ঘটনায় দেশ যখন উত্তাল, তখন প্রতিবাদে ফেসবুকে সোচ্চার থাকতে দেখা যায় নুসরাত ফারিয়াকে।
এই নায়িকা ১৭ জুলাই ফেসবুক স্ট্যাটাসে দেশের আন্দোলন ও শিক্ষার্থীদের হত্যায় সোচ্চার হয়ে লেখেন, ‘কাজের কারণে আমি হাজার মাইল দূরে। কিন্তু আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, আমি কেমন অনুভব করছি, তা প্রকাশ করতে পারছি না। সর্বোপরি আমরা মানুষ, এই সত্যটি ভুলতে পারি না। দোয়া করি সবাই নিরাপদে থাকুন।’
সরকারের বাহিনী একের পর এক শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি ছোড়ে। ১৮ জুলাই নুসরাত ফারিয়া তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে শিক্ষার্থীদের জানাজা দেওয়ার একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছিলেন, ‘জাতি হিসেবে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু নেই।’
পরবর্তী সময়ে স্বৈরাচারী সরকার দেশের ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়। আতঙ্কে ছড়িয়ে পড়ে দেশে। সেই সময়ে ১৯ জুলাই ফারিয়া কানাডা থেকে লিখেছিলেন, ‘দুই দিন হয়ে গেল, বাংলাদেশে ইন্টারনেট নেই। দেশটি বিশ্বের অন্যান্য অংশ থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন। আমরা কি সত্যিই আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান করতে পারি না? এটা এত কঠিন কেন? খুব অসহায় বোধ করছি।’
পরে ২৩ জুলাই ফারিয়া লিখেছেন, ‘ছয় দিন হয়ে গেল, আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলিনি। আপনারা সবাই জানেন, আমার বাবার অবস্থা তেমন ভালো না। কিন্তু আমি আমার সহকর্মী ছাত্র ভাই এবং বোনের জন্য অনুভব করি। সবার সুস্থতা ও দেশের শান্তি কামনা করছি।’
সরকারবিরোধী আন্দোলন তখন এক দফায় রূপ নিয়েছে। তখনো সোচ্চার ছিলেন এই নায়িকা। তিনি আগস্টের ৩ তারিখে বৃষ্টিতে ভিজে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ছবি পোস্ট করেন। একই দিনে দেশের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষেরা শহীদ মিনারে জড়ো হলে কানাডা থেকেই সেই ছবি পোস্ট করেন এই নায়িকা। ছবিতে জুড়ে দেন বাংলাদেশের ইমো। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে ফারিয়া সংসদ ভবন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার একটি ছবি পোস্ট করে বাংলাদেশের ইমো যোগ করেন।
পরবর্তী সময়ে দেশের কোনো পটভূমি নিয়ে ফেসবুকে খুব বেশি কিছু লেখেননি এই নায়িকা। শুধু নিজের ব্যক্তিগত ছবি পোস্ট করেন। এর মধ্যে দেশে বন্যা হলে ফেসবুক সরব হয়েছিলেন এই চিত্রনায়িকা। গত বছর আগস্টের পর তাকে মডেলিং, উপস্থাপনা ও অভিনয় নিয়েই থাকতে দেখা গেছে। সর্বশেষ গত ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছে নুসরাত ফারিয়া অভিনীত ‘জ্বীন ৩’।