নয়নের আলো, নন্দিত নরকের পরিচালক বেলাল আহমেদ
প্রতিভাবান পরিচালক বেলাল আহমেদ, অল্পকটি ছবি নির্মাণ করলেও ছিল বৈচিত্র্য। নাগরদোলা, নয়নের আলো ও নন্দিত নরক এর মাঝে অন্যতম। তিনি অভিনেতাও ছিলেন।
বেলাল আহমেদ ১৯৪৮ সালের ২৮ নভেম্বর ঢাকার হাতিরপুলে জন্মগ্রহণ করেন। সিদ্ধেশরী স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করে, ঢাকা কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন করেন তিনি। মারা যান ২০১৪ সালের ১৮ আগস্ট, ঢাকায়।
বেলাল আহমেদ ছোট বেলা থেকে অভিনয়ের সাথে যুক্ত ছিলেন। শিশু শিল্পী হিসেবে কয়েকটি প্রামাণ্যচিত্রে অভিনয় করেছেন। পাকিস্তান আমলে কাজী জহির পরিচালিত উর্দু ভাষার ‘বন্ধন’ ছবিতে কিশোরশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া রেডিও পাকিস্তান ও ভয়েস অব আমেরিকায় প্রচারিত নাটকেও কণ্ঠ দিয়েছেন।
বেলাল আহমেদ ১৯৬৭ সালে চিত্রপরিচালক নজরুল ইসলামের সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে চলচ্চিত্রজগতে আসেন। একক পরিচালক হিসেবে ১৯৭৬ সালে তিনি নির্মাণ শুরু করেন ‘নাগরদোলা’, মুক্তি পায় ১৯৭৯ সালে। এই ছবিটি ব্যাপক সফলতার পাশাপাশি সুধীমহলে প্রশংসিত হয়।
বেলাল আহমেদ পরিচালিত অন্যান্য ছবির মধ্যে আছে নয়নের আলো, ঘর আমার ঘর, আমানাত, বন্ধন, গঙ্গা যমুনা, স্বাক্ষী প্রমাণ, ক্রিমিনাল, নন্দিত নরকে ও অনিশ্চিত যাত্রা। সর্বশেষ ছিল অনুদানের ‘ভালোবাসবোই তো’, ছবিটি তিনি শেষ করতে পারেননি। ‘নন্দিত নরকে’ নির্মাণ করেছিলেন হুমায়ূন আহমেদের একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে। অন্যদিকে ‘অনিশ্চিত যাত্রা’ মাহমুদুল হকে ‘মাটির জাহাজ’ অবলম্বনে নির্মিত।
বেলাল আহমেদ একজন নাট্য নির্মাতাও ছিলেন। টেলিভিশনের জন্য তিনি বেশকিছু ভালোমানের নাটক নির্মাণ করেছেন। তরিক আলী হাডারী, রচি মম ফালগুনী, ইতিহাসের ছোট্ট কথা, জল্লা, আদি ও আদিম’সহ বেশকিছু নাটক ও টেলিফিল্ম নির্মাণ করেছেন তিনি।
বেলাল আহমেদের সবচেয়ে প্রশংসিত ছবি ‘নয়নের আলো’। অভিনয় করেছিলেন জাফর ইকবাল, সুবর্ণা মুস্তাফা ও কাজরী। সিনেমাটির কথা আজো চর্চিত। কলকাতায় হয়েছে রিমেকও হয়েছে। এ ছাড়া ছবির গানগুলো বাংলা সিনেমার অন্যতম কীর্তি।