পরিচালক-নায়িকার হৃদয় নিয়ে দ্বন্দ্ব, ফেঁসে গেল ‘হৃদয় জুড়ে’
ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয় পরিচালক রফিক শিকদারের ‘হৃদয় জুড়ে’। নায়িকা ছিলেন কলকাতার অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা সরকার। কিছুদিন কাজ করেই তিনি কলকাতা চলে যান। তবে তার পরপরই পরিচালক ও প্রিয়াঙ্কার মধ্যে শুরু হয় নানা বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা। পরিচালকের অভিযোগ শিডিউল ফাঁসানো ও খারাপ ব্যাপারে। আর নায়িকার অভিযোগ বিয়ের প্রস্তাবসহ হয়রানির।
কয়েকদিন আগে রফিক শিকদার দীর্ঘ ফেসবুক স্ট্যাটাসে প্রিয়াঙ্কার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেন। তার প্রেক্ষিতে ৪ মে কলকাতার সংবাদপত্র ‘এবেলা’য় প্রিয়াঙ্কার একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ হয়। সেই সাক্ষাৎকারে পরিচালক রফিক শিকদারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ করেন এ অভিনেত্রী।
প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম শিডিউল শেষ হলেও আমার সিনগুলো শেষ করতে পারেননি পরিচালক। ছবির প্রযোজক আমাকে জানান, জুন মাসে ফের ছবির শিডিউল শুরু করবেন। আপাতত এই অবধি কথা হয়ে রয়েছে। আমার তরফে কোনো ফল্ট ছিল না, এটুকু বলতে পারি। তিনি আরো বলেন ‘ওর (পরিচালক রফিক শিকদার) আসলে আমার উপর রাগ রয়েছে। কিছুদিন ধরেই উনি আমাকে মানসিকভাবে হেনস্তা করছিলেন। সময়ে-অসময়ে মেসেজ করতেন নানা রকম। যেগুলো কাজ সংক্রান্ত নয়! আমার সঙ্গে অকারণ গল্প করা বা আমার থেকে বাড়তি অ্যাটেনশন পাওয়ার চেষ্টা করতেন। কেন মেনে নেব বলুন তো! দেখুন, শিল্পীর মেকআপ রুমটা তো আর পরিচালকদের আড্ডা দেওয়ার জায়গা নয়। সেটা বললে যদি ওর গায়ে লাগে, তাহলে কিছু করার নেই। আমি ওকে বলেছিলাম, কাজের বাইরে আমার সঙ্গে অকারণ গল্প করতে আসবেন না। আমার কথার অর্থ হয়তো উনি বুঝতে পারছিলেন না! তাই কখনো কখনো আমার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেলে ওর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছি। কিন্তু সেটা জরুরি ছিল। কলকাতায় ফেরার পর উনি (পরিচালক রফিক শিকদার) আমাকে বার বার মেসেজ করতেন। বলতেন, উনি নাকি আমাকে মিস্ করছেন! একটা সময়ের পর আমাকে বিয়ের প্রস্তাবও দেন! এমনকি, উনি নাকি আমাকে একটা গাড়ি উপহার দিতে চান, সে কথাও মেসেজে লিখেছিলেন!’ ফেসবুকে তিনি রফিক শিকদারের মেসেজের স্ক্রিনশটও শেয়ার করেন।
প্রিয়াঙ্কার অভিযোগের উত্তরে রফিক বলেন, ‘প্রিয়াঙ্কা ঢাকায় আসার পর তার চলাফেরায় যেন কোনো অসুবিধা না হয় সেজন্য তাকে একটি গাড়ি দেয়ার কথা বলেছিলাম। কলকাতায় যাওয়ার পর ছবির শুটিং শিডিউল সংক্রান্ত বিষয়ে একেবারেই কথা বলছিল না প্রিয়াঙ্কা। অথচ ওয়ার্ক পারমিট করার জন্য তার শিডিউল লেটার চাচ্ছিলাম অনেকদিন ধরেই। সেটাও পাচ্ছিলাম না। ফোন করলে কেটে দিত, ইনবক্সে এসএমএস করলে দেখত কিন্তু তার উত্তর দিত না। তখন আমি ভাবছিলাম এই মানুষটার আসলে কোনো রোগ আছে কি-না। আমি তার মানসিক অবস্থা নিয়েও গবেষণা করেছি। নিঃসন্দেহে আমি বলব প্রিয়াঙ্কা একজন মানসিক রোগী।’
তিনি আরো বলেন, ‘শুটিং করতে গিয়ে ক্লান্ত হলে আমি মেকআপ রুমে গিয়ে বসেছি। কারণ রোদে পুড়ে কাজ করতে হয় আমাদের। মেকআপ রুমে তো এসি থাকে। তবে ভারতে যাওয়ার পর যখন আমাকে শুটিং শিডিউল নিয়ে ভোগাচ্ছিল সে তখন আমি মনে করেছি বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বা এই ধরনের ওষুধে কাজ হয় কি-না। বিয়ের প্রস্তাব দেবার আগে আমি বলেছি তাকে আমার ভালো লাগে। আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। এটা বললে কি কোনো অপরাধের পর্যায়ে পড়ে? তার প্রতি আমার ভালোলাগা ছিল। শুটিংয়ে যাওয়ার পর তার মানসিক অস্থিরতা দেখার পর আমার মনে তার প্রতি মায়া জন্ম নিয়েছে। তারপর শুনেছি তার ডিভোর্স হয়েছে এবং বাচ্চা আছে। সবকিছু মিলিয়ে মায়া লেগেছে। তবে বর্তমানে আর্থিক ক্ষতি, পরিচালকের সঙ্গে অসাধারণ আচরণের জন্য আমার আইনজীবীর সঙ্গে কথা চলছে। আমি তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবো।’
সূত্র : মানবজমিন