Select Page

পূর্ণিমা ও ‘মনের মাঝে তুমি’

পূর্ণিমা ও ‘মনের মাঝে তুমি’

এক.

পত্রিকা অফিসে গিয়েছে নিজের ভালোবাসার গল্প ছাপাতে। সম্পাদক সাহেব তাকে বাজিয়ে দেখছিল। পূর্ণিমা সফল হয় সে যাত্রায়। সম্পাদকের প্রশ্ন-‘কবে কখন এ ঘটনা ঘটেছে? কমপ্লিট করেছো?’ পূর্ণিমার উত্তর-‘পঞ্চাশ পাতা লিখেছি, আপনার ভালো লাগলে আরো লিখবে।’ সম্পাদকের প্রশ্ন-‘নাম কি দিয়েছ?’ পূর্ণিমার ভালোবাসামাখা উত্তর-‘মনের মাঝে তুমি’।

দুই.

শ্রুতিকে রিয়াজ তার ছোটবেলার ভালোবাসার মানুষের ঘড়িটা দিয়ে দেয় নেশার ঘোরে। তারপর আবার ফেরত নেয়। পূর্ণিমা প্রথমে ভুল বুঝলেও পরে শ্রুতি নিজেই জানায় ঘড়িটা রিয়াজ ফেরত নিয়েছে এবং সে তার ছোটবেলার ভালোবাসার অপেক্ষায় এখনো আছে। তার আগে পূর্ণিমার যখন মন ভেঙেছিল একটা প্রোগ্রামে স্টেজে উঠে কাঁদতে কাঁদতে মেয়েদের ভালোবাসার গভীরতা নিয়ে কথা বলে। সেটা দেখেই শ্রুতি তাকে সত্যটা বলে দেয়। তখন রিয়াজ স্টেজে যা বলে সেটা ছিল সবার কথার থেকে সেরা-‘আমার মতে ছেলেও না মেয়েও না, ভালোবাসার ভিত্তি নির্ভর করে দুজনের বিশ্বাসের ওপর।’ প্রোগ্রামের অতিথি জানতে চায় তার সাথে দেখা হলে সে কি করবে, রিয়াজ জানায় সে তার পরিচয় না দিয়ে তাকে ভালোবাসবে আর পূর্ণিমাও সেটা জেনে যায় তাই সেও পরিচয় না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। দর্শকসারি থেকে এক কোণে দাঁড়ানো পূর্ণিমার মিষ্টি সব অভিব্যক্তি মন কেড়ে নেয়।

তিন.

রিয়াজের বোন পূর্ণিমার ‘মনের মাঝে তুমি’ সিরিয়ালের ভক্ত হয়ে যায়। বোনকে খুশি করতে  পূর্ণিমাকে তারা বাড়িতে নিয়ে যায়। পূর্ণিমা রিয়াজের ঘরে গিয়ে ছোটবেলার সেই ঘড়ি দেখতে পায়। তখন রিয়াজের বোনকে কফি আনার ছলে বাইরে পাঠিয়ে রিয়াজের শার্টটা গায়ে জড়িয়ে নাচতে থাকে সারা ঘর। এ এক গভীর ভালোবাসার দৃশ্য।

চার.

রিয়াজ পেছনে বসে কি যেন পড়ছিল। সামনে রিয়াজের বোন পূর্ণিমার চুল ঠিক করে দিচ্ছে। পূর্ণিমা আয়না এ-পাশ ও-পাশ করে পেছনে বসা রিয়াজকে দেখছিল যতটুকু দেখা সম্ভব। রিয়াজের বোন এটা খেয়াল করে এবং সে ইশারা করে জানতে চায় কি ঘটছে। পূর্ণিমাও পরিস্থিতি সামলে নেয় বুদ্ধিমত্তার সাথে। এটা ছিল ছবির সেরা রোমান্টিক দৃশ্য। দৃশ্যটি ছিল ‘চুপি চুপি কিছু কথা’ গানের মধ্যে।

পাঁচ.

একই গানের আরেকটা দৃশ্যে বাড়ির সব লোক স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে আর রিয়াজ-পূর্ণিমা নাচতে থাকে। এটা ছিল সবচেয়ে ব্যতিক্রমী দৃশ্য ছবির।

ছয়.

ছবির শেষ দৃশ্য। চাকুর আঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে আসা রিয়াজকে সবাই মৃত মনে করে কিন্তু তার জ্ঞান ফিরে আসে আর রিয়াজের বন্ধু কাঁদতে কাঁদতে সে খবর দিতে যায় পূর্ণিমাকে। পূর্ণিমা ছুটে যায়। ছোটবেলার পরিচিত সেই ভঙ্গিগুলো করতে থাকে রিয়াজ, পূর্ণিমাও তার উত্তর দেয় হাতে হাত মিলিয়ে। এটাও খুব রোমান্টিক।

পূর্ণিমা তার সেরা কমার্শিয়াল ছবি ‘মনের মাঝে তুমি’-তে একজন আদর্শ নায়িকার সবটাই ঢেলে দিয়ে অভিনয়টা করেছে। আনুরূপী পূর্ণিমা এ ছবির মোহনীয়তা।


লেখক সম্পর্কে বিস্তারিত

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র গত শতকে যেভাবে সমৃদ্ধ ছিল সেই সমৃদ্ধির দিকে আবারও যেতে প্রতিদিনই স্বপ্ন দেখি। সেকালের সিনেমা থেকে গ্রহণ বর্জন করে আগামী দিনের চলচ্চিত্রের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। আমি প্রথমত একজন চলচ্চিত্র দর্শক তারপর সমালোচক হিশেবে প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্ন দেখি। দেশের সিনেমার সোনালি দিনের উৎকর্ষ জানাতে গবেষণামূলক কাজ করে আগামী প্রজন্মকে দেশের সিনেমাপ্রেমী করার সাধনা করে যেতে চাই।

মন্তব্য করুন