‘প্রিয়তমা’ চলাকালে কথা দিয়েছিলেন রাজ তিলকে যুক্ত হবে এসি
শাকিব খান ও ইধিকা পাল অভিনীত এবং হিমেল আশরাফ পরিচালিত ‘প্রিয়তমা’ মুক্তির সময় বিশেষ ঘোষণা দিয়েছিলেন সাজ্জাদ হোসেন। এবার ঈদুল ফিতরের আগে সেই কথা রাখলেন। তার প্রেক্ষাগৃহে যুক্ত হয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বা এসি।
নতুন করে চালুর আগে রাজ তিলক হলে সর্বশেষ ২০১২ সালে সিনেমা প্রদর্শন করা হয়। তখন ‘কমন জেন্ডার’ সিনেমা চলাকালে হলটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন চাঁপাইনবাবগঞ্জের রুম্মান আলী হলটি কিনে নেন। এরপর আর হলটি চালু হয়নি। পরে এটি ২০২২ সালে মালিকের কাছ থেকে পাঁচ বছরের জন্য ভাড়া নেন দিনাজপুরের ফুলবাড়িয়া এলাকার সাজ্জাদ হোসেন। তিনি মূলত চলচ্চিত্রে প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন, থাকেন ঢাকায়। তিনি হলটি চালুর উদ্যোগ নেন। ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে হলটি সংস্কারে টানা কাজ করেন তিনি। তবে হলটিতে তখন শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ছিল না।
এখন সিনেমা হলটির সামনে পোস্টার লাগানো হয়েছে, ‘রাজ তিলক সিনেমা হল। পবিত্র ঈদের দিন থেকে চলবে নতুন সিনেমা। সম্পূর্ণ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত। সিনেমাপ্রিয় দর্শকেরা নিমন্ত্রিত।’ এ বিষয়ে স্থানীয় তরুণ সাব্বির রহমান জানান, ‘প্রিয়তমা’ সিনেমা চলাকালে হলমালিক ঘোষণা দিয়েছিলেন, আগামী ঈদের আগে হলে এসি লাগাবেন। তিনি কথা রেখেছেন।
হলটি চালুর পর থেকেই কাটাখালী পৌর বাজার জমজমাট হতে থাকে। ছোটখাটো ভাজাপোড়া, কোমল পানীয়সহ খাবারের দোকানে ক্রেতা বাড়তে থাকে। এই সিনেমা হলকে কেন্দ্র করে হলেরই টিকিট চেকার মো. মোস্তাকিন মোটরসাইকেল, সাইকেল রাখার গ্যারেজ করেছেন। হলের সঙ্গেই একতা হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁর মালিক মনিরুল ইসলাম (রিপন) বলেন, এক বছর আগে হলটি চালু হয়েছে। ‘প্রিয়তমা’সহ কয়েকটি সিনেমায় ব্যবসা হয়েছে। কিন্তু পরের সিনেমাগুলোয় আর হয়নি। হলমালিক খুব শৌখিন মানুষ। তিনি দর্শকের কথা চিন্তা করে হলে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র লাগিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, হল চালুর পর থেকে কাটাখালী একটু জমজমাট হয়েছে। ‘প্রিয়তমা’ সিনেমা চলার সময় প্রচুর মানুষের সমাগম হতো। তখন হলের ব্যবসাও হয়েছে, আশপাশের খাবারের দোকানসহ অন্যদেরও ভালো ব্যবসা হয়েছে। কিন্তু ভালো সিনেমা না থাকায় বছরের বেশির ভাগ সময়ই হলটিতে দর্শক–খরা গেছে। তাঁর দাবি, শুধু ‘প্রিয়তমা’ সিনেমা দিয়েই হলমালিক ২০-২৫ লাখ টাকার টিকিট বিক্রি করেছেন।
হলটির মালিক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সিনেমার প্রতি তাঁর অন্য রকম টান আছে। সে কারণেই তিনি এই হলের পুনর্জন্ম দিয়েছেন। পরে নিজের মতো করে হলটি সাজিয়েছেন। তিনি দর্শককে কথা দিয়েছিলেন যে এ বছর ঈদ থেকে হলটি শীতাতপনিয়ন্ত্রিত করবেন। খুব বেশি টাকা ছিল না। নিজের ব্যবহৃত একটি গাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন।
গত এক বছরের অভিজ্ঞতা শুনতে চাইলে মুঠোফোনে তিনি বলেন, অভিজ্ঞতা খুব ভালো নয়। একটি মৃত হলকে তাজা করেছেন এই ভেবে যে হল থেকে লাভ হবে, কিন্তু তা হয়নি। ঈদ ছাড়া দর্শক পাওয়া যায়নি। রাজশাহীতে বিনিয়োগ বেশি পড়ে গেছে, কিন্তু তোলা খুব কঠিন। এই এক বছরে শুধু ‘প্রিয়তমা’ সিনেমা দিয়ে ব্যবসা করতে পেরেছেন। ভারতের কয়েকটি চলচ্চিত্র মোটামুটি চলেছে। সিনেমা হলে সিনেমা না থাকলে তো ব্যবসা হবে না। সারা বছর ভালো গল্পের সিনেমা নির্মিত হলে সিনেমা হল চলবে।
শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র লাগানোর বিষয়ে তিনি বলেন, দর্শকদের কথা দিয়েছিলেন যে হলে এসি লাগাবেন। তিনি কথা রেখেছেন। হলে আরও ২০টি আসন বাড়ানো হয়েছে। সাউন্ড সিস্টেমও আগের চেয়ে আরও ভালো করা হয়েছে। খবর প্রথম আলো